নোয়াখালীর বসুরহাটের বাসায় হামলার প্রতিবাদে ভাই মেয়র কাদের মির্জার বিরুদ্ধে নেতাকর্মীদের নিয়ে রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বোন রোকেয়া বেগম।
বুধবার (২৩ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কোম্পানীগঞ্জ থানা সংলগ্ন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ওই বোনের বাসায় হামলা করে দুর্বৃত্তরা।
এ ঘটনার প্রতিবাদে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ভাই কাদের মির্জা ও তার অনুসারীদের দায়ী করে গ্রেফতার দাবিতে বোন রোকেয়ার নেতৃত্বে বসুরহাটে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি বাজার প্রদক্ষিণ করে থানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়।
রোকেয়া বেগম সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও মেয়র কাদের মির্জার বোন ছাড়াও কাদের মির্জা বিরোধী উপজেলা আওয়ামী লীগ অনুসারী ও স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদ সদস্য ফখরুল ইসলাম রাহাতের মা।
রোকেয়া বেগম দাবি করেন, ভাই কাদের মির্জার নির্দেশে তার অনুসারী কেচ্ছা রাসেলের নেতৃত্বে ৩০-৩২ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী তার বাসায় ঢুকতে চেষ্টা করে এবং ছেলে রাহাতকে খুঁজতে থাকে। না পেয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ বাসার গেটে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ভাঙচুর চালায়।
খবর পেয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ সমর্থিত নেতাকর্মীরা রাহাতের বাসার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় রাহাতে মা রোকেয়া বেগম ভাই কাদের মির্জার বিরুদ্ধে শ্লোগান দিয়ে নেতাকর্মীদের নিয়ে রাস্তায় মিছিল বের করেন।
ফখরুল ইসলাম রাহাত বলেন, ‘কাদের মির্জার নির্দেশে অস্ত্রধারীরা তাকে হত্যার উদ্দেশে বাসায় খুঁজতে আসে। এ ঘটনায় কাদের মির্জার অনুসারীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
এ বিষয়ে মতামত জানতে মেয়র কাদের মির্জাকে বার বার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। তার পক্ষ থেকে অন্য কেউ কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুদ্দিন আনোয়ার জানান, খবর পেয়ে মন্ত্রীর বোনের বাসায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। কোনো অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) বিকেলে বসুরহাট রূপালী চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভার ডাক দিয়েছে কাদের মির্জা বিরোধী উপজেলা আওয়ামী লীগ।
দলের মুখপাত্র মাহবুবুর রশিদ মঞ্জু বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘এখানে রাহাতের বাসা থানা থেকে ১০ ফুট দূরত্ব হলেও পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক। প্রতিবাদ সভায় কোনো বাধা আসলে হরতালসহ কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলেও জানান মঞ্জু।’
আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঘোষণার পর কাদের মির্জার অনুসারী ছাত্রলীগ সভাপতি আরিফুর রহমানও ফেসবুকে বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) একই সময় রূপালী চত্বরে প্রতিবাদ সভার ঘোষণা দেয়।
আরিফ বলেন, ‘এমপি একরাম বাহিনীর তাণ্ডব ও অস্ত্র প্রদর্শনের প্রতিবাদে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জিয়াউল হক মীর বলেন, ‘সব বিষয় প্রশাসন অবগত রয়েছে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি হবে এমন কিছু কাউকে করতে দেয়া হবে না। পুলিশ-র্যাব, মাজিস্ট্রেট মোতায়েন থাকবে।’
জেএন