সর্বাত্মক লকডাউনের ৫ দিনে রাজশাহী মহানগরীতে কড়া লকডাউন পালন হয়েছে। যদিও প্রথম দিনের তুলনায় ৪র্থ দিন রাস্তায় বেশি অটোরিক্সা ও রিক্সা চলতে গিয়েছিল। ৫ম দিনে এসে হঠাৎ করেই লকডাউন আরো কড়া হয়ে যায়। এদিন মাঠে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করে। সার্বক্ষনিক তদারকি করার জন্য আরএমপির উধ্বর্তন কর্মকর্তারাও মাঠে দায়িত্ব পালন করে। গতকাল রোববার সকাল থেকেই নগরজুড়ে নগর পুলিশের সদস্যরা মোড়ে মোড়ে অবস্থান নেয়। অটোরিক্সাতো দূরের কথা অনেক স্থানে রিক্সা চলতেও বাধা দেয়া হয়েছে ও রিক্সার হাওয়া ছেড়ে দিতে দেখা গেছে। রিক্সার হাওয়া ছেড়ে দেওয়ায় বিপাকে পড়েন চালকরা। কারণ লকডাউনের মধ্যে তেমনভাবে মেকানিকের দোকান খোলা নেই। এ
নিয়ে রিক্সা চালকদের অভিযোগের শেষ নেই। ৫ম দিনে এসে পুলিশ মাঠে তৎপর কেন এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, লকডাউন সর্বাত্মক কঠোরভাবে পালনের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে তৎপরতা ছিল। এর অন্য কোনো কারণ নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনা সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়তে পারে এজন্য সরকার ২য় দফায় ১৪ তারিখ থেকে সর্বাত্মক লকডাউনের ঘোষণা দেয় জরুরী সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ব্যতিত। প্রথম দিন নগরীতে মাঠে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন না থাকলেও নগর জুড়ে তেমন মানুষের আনাগোনা দেখা যায়নি। রাস্তায় অটোরিক্সা ও রিক্সা কম চলে। কিছু মানুষকে ব্যক্তিগত যানবাহন নিয়ে চলাচল করতে দেখা যায়। ব্যাটারি চালিত রিক্সাগুলো চলাচল করলেও পুলিশ অনেক
রিক্সার হাওয়া ছেড়ে দেয়। এভাবে কড়াভাবেই ২য়, ৩য়, ও ৪র্থ দিন লকডাউন চলে। তবে প্রথম ৩ দিনের তুলনায় ৪র্থ দিন শনিবার রাস্তাঘাটে বেশি যানবাহন ও মানুষ চলাচল করতে দেখা যায়। লকডাউনের ৫ম দিন রোববার সকাল থেকেই রাজশাহী মহানগরজুড়ে হঠাৎ করেই পুলিশের তৎপরতা বেড়ে যায়। এদিন মাঠে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করেন। পাশপাশি নগর পুলিশের উধ্বর্তন কর্মকর্তারাও তদারকির জন্য সার্বক্ষনিক মাঠে দায়িত্ব পালন করেন। কোথাও দু’জন মানুষ দাঁড়ালেও তাদের সেখান থেকে চলে যাওয়ার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে তাগাদা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও রিক্সা-অটোরিক্সা তেমন চলাচল করতে দেখা যায়নি। প্রাইভেট গাড়ী
নিয়ে অল্প সংখ্যক মানুষ চলাচল করে। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের আওতামুক্ত এলাকার মূল মূল স্থানে পুলিশ লকডাউন কার্যকরে তৎপর থাকলেও পাড়া-মহল্লায় অন্যান্য দিনগুলোর মতোই মানুষের আনাগোনা ছিল। যথারীতি কাঁচা বাজারেও শরীরে শরীর ঠেকিয়ে মানুষকে কেনাকাটা করতে দেখা যায়। দোকানি ও ক্রেতা অনেককেই স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। বিশেষ করে বিক্রেতারা কখনোই স্বাস্থ্যবিধি মানে না। ক্রেতাদের মধ্যেও সামাজিক দূরত্বের বালাই দেখা যায়নি। মুখে কারো কারো মাস্ক থাকলেও অনেককেই মাস্কবিহীন দেখা গেছে। সচেতন মানুষরা বলছেন, কাঁচা বাজারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা কার্যকর না করতে পারলে সংক্রমণ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে, নগরের রেলগেট এলাকায় অন্যদিনের মতোই বেশ কিছু সিএনজিকে যাত্রী নেয়ার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। অনেক সিএনজি ও অটোরিক্সাকে গাদাগাদি করে যাত্রীবহন করতে দেখা গেছে।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, লকডাউন কার্যকর ও কঠোরভাবে পালন করার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে। রোববার পুলিশ সদস্যদের পাশপাশি উধ্বর্তন কর্মকর্তারাও মাঠে দায়িত্ব পালন করেন। হঠাৎ এত কড়াকড়ি কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, লকডাউন কার্যকরের জন্যই কড়াকড়ি করা হয়েছে। লকডাউন শেষ পর্যন্ত পুলিশের এমন পদক্ষেপ চলমান থাকবে।
এস/আর