চতুর্থ দাফে আগামীকাল ১৪ ফেব্রয়ারী রোববার রাজশাহীর ৪টি পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। পৌরসভাগুলো হলো, রাজশাহীর তানোর, গোদাগাড়ী, বাগমারার তাহেরপুর ও পবার নওহাটা। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে। ইতিমধ্যেই ভোটগ্রহণের সকল প্রস্তুুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। এর আগে নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়। এবারের পৌর নির্বাচনে সরকারী দল আ’লীগ, বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দিয়ে জামায়াতের প্রার্থী অংশগ্রহণ করেছে। ব্যাপক উৎসব মুখর পরিবেশে প্রচার-প্রচারণা হয়। সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে রাজশাহীর সবকটি পৌরসভাতেই বিএনপি প্রার্থীরা জয়ী হবে বলে আশা করছেন তারা। অপরদিকে আ’লীগ প্রার্থীরাও নির্বাচনে জয়লাভ করার ব্যাপারে আশাবাদী।
তানোর : বিএনপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত রাজশাহীর তানোর পৌরসভায় অন্য ৩টি পৌরসভার ন্যায় এদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ পৌরসভা বরাবরই বিএনপির দখলে। চতুর্থ দাফের এবারের নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির প্রার্থী রয়েছেন বিএনপির মরহুম প্রভাবশালী নেতা, সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা চেয়ারম্যান এমরান আলী মোল্লার ভাগ্নে বর্তমান মেয়র মিজানুর রহমান, নৌকা প্রতীকে আ’লীগ দলীয় প্রার্থী ইমরুল হক ও বিএনপির বিদ্রোহী বহিষ্কৃত আব্দুল মালেক মণ্ডল (নারীকেল গাছ) প্রতীকে অংশ নিচ্ছেন। যদিও মূল লড়াই হবে বিএনপি ও আ’লীগ প্রার্থীর মধ্যে। এবারের নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণার সময় বিএনপি প্রার্থী ব্যাপক ভোটারদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। তানোর পৌর এলাকায় ১৩ টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১১ টি ভোট কেন্দ্র ঝুকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছে প্রসাশন। তানোর উপজেলা রিটানিং অফিসার ও উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ভোট কেন্দ্রে যদি কেউ কোন অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করে তাকে ছাড় দেয়া হবে না। ১৩ টি কেন্দ্রে পুরুষ-মহিলা মিলে ৬৮টি বুথে ভোটাররা ভোট দিবেন। তানোর পৌর এলাকায় মোট ভোটার সংখ্যা ২৪ হাজার ৬৭৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১২ হাজার ৪৩ জন এবং মহিলা ভোটার ১২ হাজার ৬৩০ জন। পৌর নির্বাচনে মূল দলের দুই প্রার্থী জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
গোদাগাড়ী : রাজশাহীর গোদাগাড়ী পৌরসভা নির্বাচনে ইতিমধ্যেই ভোটগ্রহণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে ৪ জন লড়াই করছেন। মেয়র পদের প্রার্থীরা হলেন, বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকে গোলাম কিবরিয়া রুলু, নৌকা প্রতীকে আ’লীগ মনোনীত প্রার্থী অয়েজ উদ্দিন বিশ্বাস, জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থী জগ প্রতীকে ড. মো. ওবায়দুল্লাহ ও আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান মেয়র মনিরুল ইসলাম বাবু নারিকেল গাছ প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। প্রচার-প্রচারণাকালে সব প্রার্থী আনন্দ উৎসাহের সাভে ভোটারকাছে কাছে গিয়ে নানা উন্নয়নের কথা বলে ভোট প্রার্থনা করেন। আ’লীগে বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন বিএনপির প্রার্থী। এ কারণে তিনি অনেকটাই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। তবে জামায়াত স্বতন্ত্র প্রার্থী দিয়েছে। এর আগে সেখানে জামায়াতের মেয়র ছিলেন এজন্য তারাও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। এ পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ৩২ হাজার ২৫৭ জন। ১৬ টি কেন্দ্রের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
তাহেরপুর : বাগমারার তাহেপুরে এবারের পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে প্রধান দুই দলের ২ প্রার্থী অংশগ্রহণ করছেন। এরা হলেন, আ’লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান পৌর মেয়র অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ ও বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী আ.ন.ম শামসুর রহমান মিন্টু। শুরু থেকেই ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্যে দিয়ে প্রচার-প্রচারণা চলে। রোববার ভোটগ্রহণ উপলক্ষে ইতিমধ্যেই সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এ পৌরসভায় মোট ভোটার ১৪ হাজার ৬১৯ জন। ৯ টি কেন্দ্রের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
নওহাটা : রাজশাহী মহানগরীর অদূরে অবস্থিত নওহাটা পৌরসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণে ইতিমধ্যেই সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচনে মোট ৪ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করছেন।
মেয়র পদের প্রার্থীরা হলেন, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান পৌর মেয়র শেখ মকবুল হোসেন, নৌকা প্রতীকে আ’লীগ মনোনীত প্রার্থী হাফিজুর রহমান হাফিজ ও আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নারিকেল গাছ প্রতীকে আ: বারি খান। এ পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ৪৩ হাজার ৮৪৪ জন। মূল লড়াই হবে বিএনপি ও আ’লীগ প্রার্থীর মধ্যে। যদিও আ’লীগে বিদ্রোহী থাকায় ভারমুক্ত রয়েছেন বিএনপির
প্রার্থী। সুষ্ঠ ভোট হলে বিএনপির প্রার্থী জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। কারণ হিসেবে প্রার্থী বলছেন, তিনি মেয়র থাকাকালে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। জনগণ তাকে আবারো নির্বাচিত করবেন। আ’লীগ প্রার্থীও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। ভোটে উৎসব মুখর পরিবেশে প্রচার-প্রচারণা হয়। এদিকে, সুষ্ঠভাবে ভোটগ্রহণে মাঠে পুলিশের পাশপাশি র্যাব দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়াও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ দায়িত্ব পালন করবেন। রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর ইফতে খায়ের আলম বলেন, রাজশাহীর ৩টি পৌরসভায় জেলা পুলিশের ৬০০ সদস্য দায়িত্ব পালন করবে।
এস/আর