আরিফ সাদাত, পুঠিয়া: রাজশাহীর পুঠিয়ায় চলতি বছর রেকর্ড পরিমান জমিতে পেয়াজ ও রসুনের চাষ করা হচ্ছে। গত বছর থেকে পেয়াজ ও রসুনের আশানুরুপ দাম পাওয়ায় চাষিরা চলতি মৌসুমে তাদের দ্বিগুন জমিতে বীজ রোপন শুরু করেছেন। কৃষি বিভাগ ও চাষীরা আশা করছেন এবার অনুকুল আবহাওয়া বিরাজ করলে এ অঞ্চলে উৎপাদনের বাম্পার ফলন হবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলার ছয়টি ইউপি ও পৌর এলাকায় প্রাথমিক ভাবে সাড়ে ৪ হাজার হেক্টোর জমিতে পেয়াজ রোপনের লক্ষমাত্রা নিধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮৫০ হেক্টোর জমিতে ঢেমনা পেয়াজ
রোপন করার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। গত বছর এই এলাকায় ঢেমনা ও আল পেয়াজ মিলে মোট ৩ হাজার ৫শ হোক্টোর জমিতে চাষ করা হয়েছিল। আর এবার গত বছরের তুলনায় প্রায় এক হাজার হেক্টোর বেশী জমিতে পেয়াজ রোপনের সম্ভবনা রয়েছে। এদিকে চাষিরা তাদের আলের পেয়াজ রোপনের জন্য বীজতলা তৈরির কাজ শুরু করেছেন। অপরদিকে বিভিন্ন এলাকার চাষিরা তাদের রসুন রোপনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে এবার প্রায় ৩ হাজার হেক্টোর জমিতে রসুনের চাষ করা হবে। যা গত বছরের তুলনায় ৫শ’ হেক্টোর বেশী।
উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখাগেছে, গত কয়েক বছর আগেও যে নিচু জমি গুলোতে জলাবদ্ধতার কারণে রবি শস্য উৎপাদন করা সম্ভব ছিল না। এখন সে জমির কাদামাটিতে ঢেমনা পেয়াজ ও রসুনের চাষ হচ্ছে। দাম ভালো পাওয়ায় এবার অনেক চাষিরা তাদের পতিত জমি গুলোতে পেয়াজ ও রসুনের চাষ করছেন।
সদর ইউনিয়ন এলাকার রসুন চাষী আলী হোসেন বলেন, গত কয়েক বছর থেকে বৈরি আবহাওয়ার কারণে গম ও মসুরের জমিতে বিভিন্ন মোড়ক দেখা দিচ্ছে। যায় কারণে অধিংশ চাষীরা এখন পেয়াজ-রসুন চাষে ঝুঁকছেন। পেয়াজ-রসুনে জমিতে কিছু মড়ক থাকলেও তা বিভিন্ন বালাইনাশক ওষুধ ব্যবহার করে দমন করা সম্ভব। তিনি আরো বলেন, আমি গত বছর এক বিঘা জমিতে রসুন ও পেয়াজ চাষ করে ভালো দাম বিক্রি করেছি। এবারও বাজারে পেয়াজ-রসুনের ব্যাপক চাহিদা থাকায় দু’বিঘা রসুন ও দেড় বিঘা জমিতে পেয়াজ চাষ করছি। এর মধ্যে কাঁদামাটি জমিতে এক বিঘা রসুন রোপন করেছি।
পেয়াজ চাষি আবুল কালাম বলেন, গত দু’বছর থেকে পেয়াজের দাম ভালো পাচ্ছি। বাজারে পেয়াজের চাহিদা ও সঠিক মূল্যে পেলে সব সময় চাষীদের আগ্রহ থাকবে। বর্তমানে পেয়াজের দাম ভালো পাওয়ায় এবার কৃষকদের আগ্রহ অনেক বেড়ে গেছে। যার ফলে এবার গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুন জমিতে পেয়াজ রোপন করা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার শামসুনাহার ভূইয়া বলেন, চাষিরা গত দু’বছর যাবত পেয়াজ-রসুনের দাম ভালো পাচ্ছেন। এতে করে অনেক চাষি পেয়াজ-রসুন চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। তাই গত বছরের তুলনায় এবার বেশী জমিতে পেয়াজ-রসুনের আবাদ হচ্ছে। কৃষকের পেয়াজ-রসুন চাষে যেনো লাভবান হোন সে জন্য আমরা তাদের হাতে কলমে প্রশিক্ষন দিচ্ছি। পাশাপাশি রোগ-বালাই প্রতিরোধে ও বীজ ও ফসল উৎপাদনে সার্বক্ষনিক পরামর্শ দিচ্ছি। আশা করা হচ্ছে অনুকল আবহাওয়া বিরাজ করলে চাষিরা এবার পেয়াজ-রসুনে বাম্পার ফলন পাবেন।
জে এন
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।