বিশেষ প্রতিনিধি : বিধি অনুযায়ী সরকারী চাকুরীজীবী হলে শুধু ল্যান্ড ব্যবসায় নয় কোন ব্যবসা করার সুযোগ নেই। আর যদি কোন কর্মচারী ব্যবসা করতে চান তাহলে ১৯৭৯ মোতাবেক সরকারী কর্মচারী আচরণ বিধিমালা মোতাবেক একজন সরকারী কর্মচারী তার চাকুরীর পাশপাশি সাইড বিজনেস বা পার্টটাইম চাকুরী করতে সরকারের অনুমতি নেয়া লাগবে। অন্যথায় আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘিত হবে। সরকারী চাকুরীজীবী হয়ে কোন ট্রেড লাইসেন্স নেয়ার কোন সুযোগ নেই। তারপরও দীর্ঘদিন ধরে ল্যান্ড ব্যবসা করে চলেছেন রাজশাহীর নওহাটা পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) তৌফিক হাসান। এ নিয়ে
স্থানীয়াদের মধ্যে আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। সরকারী চাকুরীজীবী হয়েও তিনি ল্যান্ড ব্যবসার কাজে দাপিয়ে বেড়ান। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নওহাটা পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) তৌফিক হাসান এর ল্যান্ড হাউজিং এন্ড কনসালটেন্ট নামের একটি জমি কেনাবেচার ব্যবসা রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে তিনি কর্মরত রয়েছেন। তার নামের একটি ভিজিটিং কার্ড থেকে জানা গেছে, ল্যান্ড হাউজিং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটির তিনি ব্যবস্থাপনা পরিচালক। আর সেখানে তাদের কার্যক্রম হিসেবে লেখা হয়েছে, বাড়ির প্ল্যান এবং ডিজাইন, জমি ক্রয়-বিক্রয় করা, মাটি পরীক্ষা, ডিজিটাল
সার্ভে ও ভূমি জরিপ করা। একজন সরকারী কর্মচারী হয়েও তিনি ল্যান্ড ব্যবসার সাথে জড়িত। শুধু জড়িত নয় সেই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকও। প্রথমে ব্যবসা গোপনে চালালেও পরে সংশ্লিষ্ট পৌরসভার মেয়র ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিষয়টি জানতে পারেন। অভিযোগ রয়েছে, পৌরসভায় সরকারী চাকুরী করলে যেহেতু ল্যান্ডের ব্যবসা করা
যাবে না তাই তিনি প্রথমে গোপনে করতেন। কিন্ত ব্যবসার কারণে মাঝেমধ্যেই অফিস থেকে উধাও হয়ে যায়। এমন অবস্থা সৃষ্টি হলে ধীরে ধীরে সবাই তার ব্যবসার কথাটি জানতে পারেন। তার ল্যান্ডের ব্যবসার কথা জানতে পেরে, পৌরসভার মেয়র শেখ মকবুল হোসেন তাকে ডেকে পৌরসভায় চাকুরী করলে ল্যান্ডের ব্যবসা করা যাবেনা এমন কথা
জানান। কিন্ত তিনি প্রথমে অস্বীকার করেন। তারপরও তিনি এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
নওহাটা পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) তৌফিক হাসান এর সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এর আগে তার খোঁজে তার অফিসে গেলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে আসছি বলে সটকে পড়েন। পরে আর ফিরেননি। নওহাটা পৌরসভার মেয়র শেখ মকবুল হোসেন এর সাথে
যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি তার ব্যবসার বিষয়ে জানতামনা। আমি মানুষ মুখে শুনেছি তিনি ল্যান্ডের ব্যবসার সাথে জড়িত। আমাকে এভোয়েড করে এ ব্যবসা করছে। মাঝে মাঝে অফিসে থাকেনা ব্যাপার কি ? তখন খোঁজ নিয়ে জানতে পারি যে তিনি ল্যান্ডের ব্যবসার সাথে
জড়িত। পৌরসভায় চাকুরী করে ল্যান্ডের ব্যবসা করা যাবে না এ কথা তাকে বলা হয়েছে। পরে ধীরে ধীরে শুনেছি যে তিনি পুরোপুলি ল্যান্ড ব্যবসার সাথে জড়িত। তাকে ডাকা হয়েছে। আসলে তার সাথে কথা বলবো। বললেই বলে ব্যবসা করিনা।
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, সরকারী চাকুরী করে শুধু ল্যান্ডের ব্যবসায় নয় কোন ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স নেয়া যাবে না। সরকারী চাকুরী করে কোন ব্যবসা করার সুযোগ নেই।
এস/আর