বিশেষ প্রতিনিধি: নারীসহ আটকের পরও আইনের আওতায় আসেনি নওহাটা পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী তৌফিক হাসান। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। জানা গেছে, জমি কেনার সুবাদে এক নারীর সাথে পরিচয় হয় তৌফিক হাসানোর। সেই সূত্র ধরে তাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠে। কিছুদিনের মধ্যেই তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়।
সেই সম্পর্কের জের ধরে চলতি মাসের গত ১৩ তারিখ সন্ধ্যায় নওহাটা পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী তৌফিক হাসান এয়ারপোর্ট থানাধীন বায়া পালপাড়া এলাকার ওই নারীর বাড়িতে যায়। কোনোভাবে এ বিষয়টি জানতে পেরে রাজশাহী জেলা পুলিশের (সদর সার্কেলে) কর্মরত এসআই তৌহিদুল ইসলাম নিয়ম বহির্ভূতভাবে নগর গোয়েন্দা শাখার
পরিদর্শক খাইরুল ইসলামকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়। কারণ নিয়ম অনুযায়ী তিনি নগরের মধ্যে কোথাও অভিযান চালাতে পারবেন না। এ ছাড়াও তিনি কোনো থানায় কর্মরতও নন। সেখানে যাওয়ার পর তারা তৌফিক হাসান ও ওই নারীকে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলেন বলে পুলিশের দাবি।
এ সময় পুলিশের সাথে পুলিশের সোর্স আশিকও ছিল। কোনো নারী পুলিশ সাথে ছিলনা। কিন্ত পুলিশ তাদের আটক বা ধরে থানায় না নিয়ে এসে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য তৌফিক হাসানের কাছে পুলিশ ৫ লাখ টাকা দাবি করে। এরমধ্যে নগদ ২ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ও চেকের মাধ্যমে ২ লাখ টাকা পরিশোধের কথা হয়। পুলিশ তৌফিকের কাছ থেকে নগদ ২ লাখ ৯৫ হাজার টাকা পাওয়ার পরে তৌফিক ও ওই নারীকে ছেড়ে
দিয়ে ফিরে যান। শুধু এ ঘটনায় নয় তৌফিক এলাকায় আরো বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের পক্ষ থেকে। শুধু ওই নারী নয় আরো অনেক নারীর সাথেই তার সখ্যতা রয়েছে এমন তথ্যও জানিয়েছে স্থানীয়রা।তবে ওই নারী বলেন, আমি চক্রান্তের শিকার। নওহাটা পৌরসভার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেন, তৌফিক হাসান একজন অসৎ চরিত্রের মানুষ। এলাকায় নারী কেলেঙ্কারিসহ বিভিন্ন অসাধু কাজের সাথে জড়িত। এদিকে, জেলা পুলিশের এক এসআই’র সাথে নগর গোয়েন্দা শাখার পুলিশ পরিদর্শক খায়রুল ইসলাম অবৈধভাবে
অভিযানে গিয়ে নারী ও পুরুষকে আটক করে। আটকের পর টাকা দিয়ে ছাড় পাওয়ার ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। এদিকে, খবর ২৪ ঘণ্টার পক্ষ থেকে নওহাটা পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী তৌফিক হাসানের অনুসন্ধানে গেলে তিনি প্রতিবেদকের পরিচয় জানতে চান। সাংবাদিক পরিচয় শুনেই তিনি অস্বস্তিবোধ করেন ও ঘটনার কথা অস্বীকার করেন। এরপর একটু আসছি বলে অফিস ছেড়ে পালিয়ে যান।
তারপর আর তার দেখা পাওয়া যায়নি। তবে নওহাটা পৌরসভার বিদ্যুৎ মিস্ত্রী শ্রী কমল কুমার ও অফিস সহকারী রিগান বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরে তৌফিক সারের কাছে পুলিশের কর্মকর্তারা আসা যাওয়া করছেন। একপর্যায়ে মেয়র মহোদয়সহ আমরা ঘটনাটি জানতে পারি নারী কেলেঙ্কারির ঘটনার
কারণেই পুলিশ অফিসে আসা যাওয়া করছে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। তৌফিক কেমন অফিসার খবর ২৪ ঘণ্টার পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, তার রিপুটেশন খুব খারাপ। সব সময় তার রুমে সুন্দরী নারীদের আনাগোনা চলে। তিনি আরো বলেন, তৌফিক রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলি এলাকার বাসিন্দা হওয়ায় তার সাথে অনেকের চেনাজানা রয়েছে। ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য রফিক নামের বিএনপি নেতা কাজ করছেন। তবে এমন লোক সরকারী প্রতিষ্ঠানে থাকুক ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হোক তা আমরা চাইনা। এ ব্যাপারে নগর গোয়েন্দা শাখার
পুলিশ পরিদর্শক খাইরুল ইসলাম খবর ২৪ ঘণ্টাকে বলেন, বুঝে হোক না বুঝে হোক আমি এ কাজ করে অন্যায় করেছি । ঘটনার কথা তিনি স্বীকার করেন। এ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ও স্বীকারোক্তিমূলক অডিও ক্লিপ খবর ২৪ ঘণ্টার কাছে সংগৃহীত আছে। অনুসন্ধানের জন্য জেলা পুলিশের সদর সার্কেলে গেলে এসআই তৌহিদুলকে পাওয়া যায়নি। পরে জানা গেছে, তিনি দুই সপ্তাহের ট্রেনিংয়ে রয়েছেন। এসআই তৌহিদ নগরের বোয়ালিয়া থানায় কর্মরত থাকাকালে এ ধরণের অনেক অপকর্মের সাথে জড়িত ছিলেন বলে
পুলিশের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর ইফতে খায়ের আলম বলেন, বিষয়টি আমাদের জানা নেই। খোঁজ নিয়ে জানা হবে। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার আবু আহম্মদ আল মামুন খবর ২৪ ঘণ্টার কাছে এ ব্যাপারে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। খবর ২৪ ঘণ্টার পক্ষ থেকে ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-কমিশনার (সিটিএসবি) এ, এফ, এম আঞ্জুমান কালাম বিপিএম বার এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
আর/এস
বিস্তারিত জানার জন্য খবর ২৪ ঘণ্টায় চোখ রাখুন আসছি নতুন চমক নিয়ে।
লেখা, অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।