নিজস্ব প্রতিবেদক: শুধু আবজাল বা মালেক নয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালক ও কেরানিরসহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের হিসাব রক্ষক মো. আনোয়ার হোসেনসহ তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেনীর আরো ৪৪ জন কোটিপতির সন্ধান পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তাদের সম্পদের অনুসন্ধানও করা হচ্ছে। এদিকে ২০জনকে সম্পদের হিসাব দিতে চিঠিও দিয়েছে দুদক
দুদক সচিব দিলোয়ার বখত জানান, মালেক ড্রাইভারের সম্পদের অনুসন্ধান একবছর ধরেই চলছে। তার অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়ায় সম্পদের নোটিশও তারা পাঠিয়েছেন। এরই মধ্যে ৪৫ জনের মধ্যে ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু মালেক নয়। অধিদপ্তরের তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেনীর ৪৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান চলছে। যারা অধিদপ্তরের কেরানি, অফিস সহকারী, গাড়ি চালক হলেও নামে বেনামে রয়েছে তাদের কোটি কোটি টাকার সম্পদ।
অনুসন্ধানে সম্পদের বৈধ উৎস না পাওয়ায় এরইমধ্যে তাদের ১১ জনের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ পাঠিয়েছে দুদক। বাকিদের নামেও সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ পাঠানো হবে। তবে কারো নাম উল্লেখ না করে দুদক সচিব ৪৫ জনের অনুসন্ধানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। চলতি মাসে কয়েকজন কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক।
এদিকে ১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ২০ জনের সম্পদের বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ১৫ সেপ্টে¤র পাঠানো এ নোটিশে ২১ কার্জ দিবসের মধ্যে এ নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গতকাল সোমবার দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের স্বাক্ষরিত নোটিশটি গত ১৫ সেপ্টেম্বর পাঠানো হয়েছে। নোটিশে বলা হয়েছে, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪’ এর ধারা ২৬ এর উপ-ধারা (১) দ্বারা অর্পিত ক্ষমতাবলে তাদের নিজের এবং তাদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিবর্গের স্বনামে/বেনামে অর্জিত যাবতীয় স্থাবর/অস্থাবর সম্পত্তি , দায়-দেনা , আয়ের উৎস ও অর্জনের বিস্তারিত বিবরণী এই আদেশ প্রাপ্তির ২১ কার্যদিবসের মধ্যে নির্ধারিত ছকে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হলো। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পদের বিবরণী দাখিল করতে ব্যর্থ হলে, অথবা মিথ্যা বিবরণী দাখিল করলে দুদক আইনের ২৬ (২) উপধারায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের যেসব কর্মকর্তা ও করমচারীর বিরুদ্ধে সম্পদের বিবরণী ইস্যু করা হয়েছে তারা হলেন, অধিদফতরের ইপিআই বিভাগের হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. মজিবুল হক মুন্সি, তার স্ত্রী মিসেস রিফাত আক্তার; ইপিআই বিভাগের ডাটা অ্যান্ট্রি অপারেটর তোফায়েল আহমেদ ভূইয়া, তার স্ত্রী খাদিজা আক্তার; গাড়ি চালক মো. আব্দুল মালেক, তার স্ত্রী নার্গিস বেগম; গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ওবাইদুর রহমান, তার স্ত্রী বিলকিচ রহমান; ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজের স্টাফ নার্স রেহেনা আক্তার, রংপুর মেডিক্যাল কলেজের হিসাব রক্ষক ইমদাদুল হক, তার স্ত্রী উম্মে রুমান ফেন্সী; জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মাহমুদুজ্জামান, তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াছমিন; গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের স্টোর অফিসার মো. নাজিম উদ্দিন, তার স্ত্রী ফিরোজা বেগম; স্বাস্থ্য অধিদফতরের অফিস সহকারী (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) কামরুল হাসান, তার স্ত্রী ডা. উম্মে হাবিবা, শেখ সায়েরা খাতুন মেডিক্যাল কলেজের স্টেনোগ্রাফার কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. সাইফুল ইসলাম, সাবেক সহকারী প্রধান (নন মেডিক্যাল) বর্তমানে সহকারী প্রধান পরিসংখ্যান কর্মকর্তা,পরিচালক (স্বাস্থ্য) এর কার্যালয়, বরিশাল বিভাগ মীর রায়হান আলী; রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হিসাব রক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন।
এদিকে, গত রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ড্রাইভার মালেককে গ্রেফতার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ।
খবর২৪ঘন্টা/নই