1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
রামেক হাসপাতালে চিকিৎসা অবহেলায় মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর মৃত্যুর অভিযোগ, ছেলে আটক - খবর ২৪ ঘণ্টা
মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৫৮ পূর্বাহ্ন

রামেক হাসপাতালে চিকিৎসা অবহেলায় মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর মৃত্যুর অভিযোগ, ছেলে আটক

  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২ সেপটেম্বর, ২০২০
রামেক হাসপাতালের জরুরী বিভাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের চিকিৎসা অবহেলায় পারুল বেগম (৬৫) নামের এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে স্বজনদের পক্ষ থেকে। মৃত নারী রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানাধীন সাগরপাড়া টিকাপাড়া এলাকার মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক পুলিশ কন্সটেবল ইসাহাক আলীর স্ত্রী। তাদের গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার আটরশিয়া গ্রামে। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রামেক হাসপাতালের ৪৬ নং ওয়ার্ডে পারুল বেগমের মৃত্যু হয়। এরপর উল্টো ইন্টার্ন চিকিৎসকরা মৃত মায়ের লাশ আঁটকে ছেলে শিক্ষা কর্মকর্তা রাকিবুলকে রাজপাড়া থানা পুলিশের হাতে তুলে দেন। এ ঘটনায় রামেক

হাসপাতালের পক্ষ থেকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুক্তার হোসেন বাদী হয়ে সরকারী কাজে বাধাদানের অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। সেই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এর আগে হাসপাতালের পরিচালক, পুলিশ কর্মকর্তা, চিকিৎসক ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সামনে হাত জোড় করে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয় মৃত পারুলের ছেলে রাকিবুলকে। সেই দৃশ্য ইন্টার্নরা মোবাইল ফোনে ধারণ করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ভূল স্বীকার করানোর পরেও মৃত মায়ের লাশ আঁটকে পুলিশে দেয়ার ঘটনায় স্বজনদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও ঘটনার পর কোন সংবাদকর্মীকে হাসপাতালে ঢুকতে দেয়া হয়নি। মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক পুলিশ কন্সটেবল ইসাহাক আলী

অভিযোগ করে জানান, সকালে তাঁর স্ত্রী পারুল বেগমের মাথায় প্রচণ্ড ব্যথা হলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসার জন্য তাকে সকাল ৭ টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা শেষে পৌনে ৮টার দিকে প্রথমে পারুল বেগমকে পাঠানো হয় ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে। সেখানে তখন কোন ডাক্তার ছিল না। রোগী বেশ কিছুক্ষণ মেঝেতেই পড়ে ছিলেন।
আধাঘন্টা পর পারুল বেগমকে ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। এ সময় পারুল বেগমের ছেলে রাকিবুল হক লিটন ওয়ার্ডে দায়িত্বরত ইন্টার্ন ডাক্তার শোভন সাহার কাছে গিয়ে তার মাকে দেখার জন্য অনুরোধ করেন। শোভন সাহা বলে দেন তার ডিউটি শেষ।

পরের ডাক্তার এসে দেখবে। এরপর লিটন যান আরেক ইন্টার্ন ডাক্তার আব্দুর রহিমের কাছে। সেও জানিয়ে দেয় যে এখন বের হবে। রোগী দেখতে পারবে না। এভাবেই কেটে যায় আধ ঘন্টা। চিকিৎসা পাওয়া ছাড়াই এরমধ্যেই পারুল বেগমের মৃত্যু হয়।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে জানান, চিকিৎসা ছাড়াই মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় ছেলে রাকিবুল ওয়ার্ডের ভেতরেই উচ্চস্বরে কান্নাকাটি করছিলেন আর ডাক্তারদের নিয়ে বিভিন্ন ধরণের কথা বলছিলেন। এ সময় ইন্টার্ন চিকিৎসক শোভন সাহা ও আব্দুর রহিমসহ আরও কয়েজন এসে তাকে গালাগাল দিয়ে ওয়ার্ড থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করেন। রাকিবুলের সঙ্গে দুই ইন্টার্ন ডাক্তারের ধ্বস্তাধস্তি হয়। এরপরই এই দুই ইন্টার্ন অন্যদের ফোন করে ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডে ডেকে নেয়। পরে রাকিবুলকে আটক করে বেধড়ক মারধর

করেন। পরে রোগীর স্বজনদের ওয়ার্ড থেকে বের করে দেয়া হয়। মৃত পারুল বেগমের স্বামী মুক্তিযোদ্ধা ইসাহাক আলীসহ স্বজনরা লাশ চাইলে ইন্টার্নরা লাশ আঁটকে দিয়ে সেখানে অবস্থান নেন। এরপর ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। সেখানে যান আরএমপির বোয়ালিয়া জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার সাজিদ হোসেনও। দুপুর সোয়া ১ টার দিকে মুক্তিযোদ্ধা ইসাহাক আলী লিখিতভাবে ক্ষমা চেয়ে হাসপাতাল থেকে স্ত্রীর লাশ নিয়ে যান। তবে পুলিশ ডেকে পারুল বেগমের ছেলে রাকিবুলকে রাজপাড়া থানার ওসির কাছে হস্তান্তর করে ইন্টার্নরা।
ইসাহাক আলী কান্না জড়িত কণ্ঠে অভিযোগ করে আরো বলেন, আমরা হাসপাতালের ডাক্তারদের যে ভয়ংকর চেহারা দেখলাম তা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ভুলতে পারবোনা। তিনি

বলেন, এ অরাজকতার প্রতিকার কী? আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি, এমন অরাজকতা আর ভয়াবহতা দেখার জন্য নয়।
রাকিবুলের স্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামী কোন অন্যায় করেনি। চিকিৎসা অবহেলায় মায়ের মৃত্যু দেখার পর যেকোন সন্তানের খারাপ লাগবে। আমার স্বামীকে তারা অন্যায়ভাবে মারধর করেছে।
এই মুক্তিযোদ্ধা আরও বলেন, আমার ছেলেকে অন্যায়ভাবে ও ঘটনা সাজিয়ে ইন্টার্ন ডাক্তাররা পুলিশে দিয়েছে। সে তার মায়ের মরা মুখটাও দেখতে পারবে না– এ কেমন দেশ!
চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ অস্বীকার করে রামেক হাসপাতাল ইন্টারর্ন চিকিৎসক পরিষদের নেতা মিজান বলেন, পারুল বেগমের ছেলে রাকিবুলের হামলায় ইন্টার্ন ডাক্তার শোভন ও রহিম আহত হয়েছে। তাদের জখমের ধরণ কেমন জানতে চাইলে ইন্টার্ন নেতা মিজান বলেন, কিছুটা আহত হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে হয়েছে। কথা বলার চেষ্টা করা হলে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমান ফোন

ধরেননি। কখনোই তিনি সংবাদকর্মীদের ফোন ধরেন না। তবে হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস বলেন, আমি কিছুই জানিনা। হাসপাতালে এসে খবর নেন বলে ফোন কেটে দেন। কিন্ত হাসপাতালে সংবাদকর্মীদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। এ ঘটনায় হাসপাতালের পক্ষ থেকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুক্তার হোসেন বাদী হয়ে সরকারী কাজে বাধাদানের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছে। সেই মামলায় মৃত পারুল বেগমের ছেলে রাকিবুলকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

এমকে

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST