খবর ২৪ ঘণ্টা ডেস্ক :
মিয়ানমারের সঙ্গে সংঘাত এড়িয়ে জাতিগত নিধনের শিকার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আলোচনার মাধ্যমে তাদের মাতৃভূমিতে ফেরানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সর্বাত্মক প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি থাকার ওপর গুরুত্বরোপ করে তিনি বলেছেন, কারো সঙ্গে যুদ্ধ করবো না, যুদ্ধ করতে চাই না। সবার সঙ্গে একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই। তবে প্রস্তুতি থাকতে হবে।
বৃহস্পতিবার (০৪ এপ্রিল) রাজধানীর শের-ই-বাংলা নগরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, এটাই বলবো, যেহেতু মিয়ানমার আমাদের একেবারেই প্রতিবেশী তাদের সঙ্গে কখনও সংঘাতে যাবো না। বরং আলোচনার মাধ্যমে তাদের নাগরিকদের (রোহিঙ্গা) যেন তারা ফিরিয়ে নিয়ে যায় সেই প্রচেষ্টাই আমাদের অব্যাহত থাকতে হবে এবং সেভাবে সকলে দায়িত্ব পালন করবেন।
তিনি বলেন, মানবিক কারণেই আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। মিয়ানমারের সঙ্গে আমরা ঝগড়া বাঁধাতে যাইনি। আমরা আলোচনা করেছি, চুক্তি সম্পন্ন করেছি। তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এদের (রোহিঙ্গা) তাদের দেশে ফেরত পাঠানো-ই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা এখনও কাজ করে যাচ্ছি।
১৯৭১ সালে পাক হানাদারদের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ভারতে আশ্রয় নেয়া বাংলাদেশের শরণার্থীদের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের নিজেদের অভিজ্ঞতা আছে। ১৯৭১ সালে আমাদের ১ কোটি মানুষ শরণার্থী ছিল। কাজেই তাদের নিয়ে এসে পুর্নবাসন করতে হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা আমাদের আছে।
শান্তি চাই, যুদ্ধ করতে চাই না
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারো সঙ্গে যুদ্ধ করবো না, যুদ্ধ করতে চাই না। আমরা সবার সঙ্গে একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই।
তিনি বলেন, জাতির পিতা যে নীতিমালাটা দিয়ে গিয়েছিলেন সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সঙ্গে বৈরীতা নয়। আমরা সেই নীতিতে বিশ্বাস করি। সেই নীতিমালা মেনেই কিন্তু আমরা চলছি।
‘কারো সঙ্গে কোনো সমস্যা থাকলে সেটাও সমাধান করছি আলোচনার মাধ্যমে। কিন্তু আমরা শান্তি চাই, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই। কিন্তু কেউ যদি আমাদের আক্রমণ করে তাহলে তার যেন যথাযথ জবাব আমরা দিতে পারি, আর আমাদের দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব যেন রক্ষা করতে পারি সেই প্রস্তুতিটা সব সময় আমাদের থাকতে হবে। যুদ্ধের জন্য নয় শান্তির জন্য আমাদের প্রস্তুতি দরকার,’ বলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
এ সময় তিনি শান্তিপূর্ণভাবে ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা এবং ভারত-মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্র সীমা সমস্যা সমাধানের কথাও উল্লেখ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীন দেশে হিসেবে প্রতিটি ক্ষেত্রে যেন বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারি সেই ব্যবস্থাটা আমাদের থাকা উচিত।
দুর্যোগ মোকাবেলা বাংলাদেশের সক্ষমতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আমরা যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলা করতে পারি। সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। সেটা প্রাকৃতিক দুযোগ হোক আর মানুষ্য সৃষ্ট দুযোগ হোক যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলা করার শক্তি আমাদের আছে।
এ সময় ভারপ্রাপ্ত সেনা প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. সামছুল হক, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরী, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, প্রতিরক্ষা সচিব আখতার হোসেন ভূঁইয়াসহ সামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
খবর ২৪ ঘণ্টা/আর