খবর২৪ঘণ্টা ডেস্ক: সম্প্রতি ১৪তম শিক্ষক নিবন্ধনের মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে। চলতি মাসের শেষের দিকে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন এনটিআরসিএ’র সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান আজাহার হোসেন।
এনটিআরসিএ সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে সারাদেশের সব স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শূন্য আসনের তালিকা পাঠাতে নির্দেশনা দেয় এনটিআরসিএ। প্রথম দফায় সব শূন্য পদের তালিকা না পাওয়ায় দ্বিতীয় দফায় সময় বাড়ানো হয়। গত ৩০ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় দফায় মেধা তালিকা পাঠানোর সময় শেষ হয়।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সারাদেশে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন বিষয়ে মোট ৩৮ হাজার ৮০০ জন শিক্ষকের তালিকা পাঠানো হয়েছে। টেলিটক মোবাইলের মাধ্যমে এ তালিকা সংগ্রহ করা হয়েছে। বর্তমানে শূন্য আসনের তালিকা সংশ্লিষ্ট উপজেলা শিক্ষা কমকর্তাদের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করা হবে। এরপর সেই তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। তালিকা চূড়ান্ত করার পর নিবন্ধিত প্রার্থীদের আবেদন চেয়ে একটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে এনটিআরসিএ। এরপর মেধা অনুযায়ী বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মোধাক্রমে নিয়োগ দিতে সুপারিশ করবে এ প্রতিষ্ঠানটি।
তথ্যমতে, এনটিআরসিএ’র নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করার পরও নিয়োগ না পেয়ে বিভিন্ন সময়ে নিবন্ধিত প্রার্থীরা ৩৫টি মামলা করেন। তার ভিত্তিতে আদালত থেকে নিবন্ধিত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশের নির্দেশনা দেয়া হয়। সেই মোতাবেক প্রথম থেকে ১৩তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করা প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। এ তালিকা সারাদেশে মোট ৬ লাখ ৪ হাজার ৬৮৫ জনের নাম প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন।
এদিকে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে কিছুটা পরিবর্তন আনতে গত ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বেসরকারি বিদ্যালয় শাখায় একটি সুপারিশ পাঠানো হয়।
সুপারিশে বলা হয়, আইন অনুযায়ী বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কলেজ, মাদরাসা) মহানগর অথবা জেলা সদরের পৌর এলাকায় অবস্থিত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে অনুমোদিত শিক্ষক পদসংখ্যার অন্তত ৪০ শতাংশ পদে এবং অন্যান্য এলাকার ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ পদে নারী শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। অথচ বাস্তবে একই উপজেলার মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন হার থাকায় অনেক ক্ষেত্রে সঠিক হিসাব নির্ণয়ে কঠিন ও ভুল হয়ে যায়। তাই দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একই হারে নারী কোটা চালুর প্রস্তাব করা হয়েছে। সেখানে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ করা যেতে পারেও বলে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়াও শরীরচর্চা শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ছাত্রীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুরুষ এবং ছাত্রদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠা নারী শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ আপত্তি জানিয়ে আসছেন। তাই শরীরচর্চা বিষয়ে ছাত্রদের প্রতিষ্ঠানে পুরুষ এবং ছাত্রীদের প্রতিষ্ঠানে নারী শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করেছে এনটিআরসিএ।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়) জাবেদ আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, এনটিআরসিএ থেকে পাঠানো সুপারিশকে গুরুত্ব দিয়ে নিয়োগের ক্ষেত্রে কিছুটা পরিবর্তন আনা হবে। দ্রুত এ বিষয়ে সভা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
তিনি বলেন, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ৩৫ বছর বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর বেশি হলে নিবন্ধিত ব্যক্তি নিয়োগের জন্য আবেদন করতে পারবেন না। জেলা ভিত্তিক নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে জাতীয় ভাবে নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। ফলে এক জেলার প্রার্থী অন্য জেলায় নিয়োগের আবেদন করতে পারবেন। এবং নিয়োগের ক্ষেত্রে সব কোটা বাতিল করে কেবল নারী শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা ৩০ শতাংশ বহাল রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
পাশাপাশি শারীরচর্চা শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আনা হতে পারে বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।
জেএন