নিজস্ব প্রতিবেদক :
আ’লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী কর্তৃক এ পর্যন্ত ২৯ টি নির্বাচন আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ নির্বাচন কমিশনের দায়ের করা হলেও এ যাবৎ নির্বাচন কমিশন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করে নাই। পক্ষান্তরে আ’লীগের নির্বাচন আচরণবিধি কর্মকান্ডকে সমর্থন করেছে বলে জানিয়েছে রাসিক নির্বাচন বিএনপি দলীয় মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টার দিকে মালোপাড়াস্থ নগর বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে নির্বাচন কমিশনের অসহযোগিতা এবং বিশেষ দল হইতে নিয়োগ প্রাপ্ত পুলিশ বাহিনীর অত্যাচার, পক্ষপাতিত্ব ও গণগ্রেফতারের অভিযোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন মেয়র প্রার্থী বুলবুল।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচনী হলফনামায় উল্লেখিত ব্যয়ের চাইতে প্রায় ১০/১২ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজশাহীতে নৌকা প্রতীকে লক্ষ্যাধিক পোস্টার, ব্যানার ফেস্টুন টাঙ্গানো হয়। এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকাগুলি প্রকাশ করে। আমরা অভিযোগ জানানোর পরেও নির্বাচন কমিশন কিছু জানে না বলে মিথ্যাচার করছে।
গত ২২ জুলাই নির্বাচন কমিশন (৬০গুনিত৪৫) উর্ধ্বে সকল বেনার ও ফেস্টুন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের নির্দেশ দিলে আমরা এবং সকল ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী অপসারণ করলেও নৌকা প্রার্থী প্রতীক বা আ’লীগ প্রার্থী অপসারণ করে নাই। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন, ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ কেউ কিছুই করে নাই। নির্বাচন আচরণ বিধিমালা লংঘন করে মামলা অথবা ওয়ারেন্ট ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের সেই আদেশ লংঘন করে আ’লীগ প্রার্থী ও তার নেতাকর্মীদের যোগসাজসে পুলিশ প্রশাসন গণগ্রেফতার অব্যাহত রেখেছে। এই গ্রেফতার অভিযানে এ পর্যন্ত আমাদের প্রায় ১৫০ জন নেতা কর্মী এবং পোলিং এজেন্টকে অন্যায় ও অমানবিকভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমান সময়ে ইতিহাসের জঘন্যতম ঘটনা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্র, মানুষের মৌলিক অধিকার লংঘন করে পুলিশ এবং
নৌকা প্রতীকের নেতাকর্মীরা যৌথ উদ্যোগে বেছে বেছে আমাদের পোলিং এজেন্ট এবং নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়কদেরকে গ্রেফতার করে পাবনা জেলা, নাটোর জেলা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার অধীন বিভিন্ন রকমের জঘন্যতম মামলার আসামী করে কোর্টে চালান করছে এবং রাজশাহী জেলা পুলিশের অধীনে গোদাগাড়ী উপজেলা এবং পুঠিয়া উপজেলার বিভিন্ন মামলার গ্রেফতার দেখানো হচ্ছে। এছাড়াও আমাদের নেতা কর্মীদেরকে মিথ্যাভাবে জে,এম,বি ও জামায়াত-শিবিরের সাথে এমনকি রাষ্ট্রদ্রোহি চবহফরহম মামলাতেও জড়ানো হয়েছে। এ ঘটনা অত্যন্ত মানবাধিকার লঙ্ঘন, আইনের শাসন লঙ্ঘন, ব্যক্তি স্বাধীনতার হস্তক্ষেপ। এ সকল ঘটনায় প্রমাণিত হয় বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
গত ৩/৪ দিন ধরে দেখা যাচ্ছে রাজশাহীর কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী দ্বারা বি,এন,পি’র ১১ নং ওয়ার্ড, ২৩ নং ওয়ার্ড, ২৫ নং ওয়ার্ডের নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুর করে বন্ধ করে দিচ্ছে এবং এসব ন্যাক্কারজনক কাজে পুলিশ প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করছে। আমাদের প্রচার মাইকগুলোকে প্রচারে বাঁধা দান, কর্মীদেরকে মারধর এবং প্রচার কাজ বন্ধ করে দিচ্ছে। আচরণবিধি লংঘন ও গ্রেফতারকৃত কর্মীদের তালিকা ক্রমান্বয়ে নির্বাচন কমিশনে জনালেও কোন প্রতিকার হয়নি। আমরা রিটার্নিং অফিসারকে লিখিত এবং মৌখিকভাবে বার বার অভিযোগ গিয়ে কোন প্রতিকার পাইনি। এ সকল বিষয়ে আপনাদের মিডিয়ার সামনে বারবার বলেছি যা আপনারা অবগত আছেন।
তিনি আরো বলেন, প্রকৃতপক্ষে ভোট চুরি, ভোট ডাকাতি, ব্যাংক লুট, জনগণের মৌলিক অধিকার ধ্বংস, হত্যা-গুম-খুন করে এই সরকার, তার দল আওয়ামীলীগ এবং তার প্রতিনিধিদের সাথে জনগণের কোন সম্পর্ক নেই। তারা আজ জনবিচ্ছিন্ন। জনগণকে তারা প্রচন্ড ভয় পায়। যেভাবে তারা জনগণের কথা বলার অধিকার, মিছিল মিটিং করার অধিকার কেড়ে নিয়েছে একই ভাবে তারা আসন্ন মেয়র নির্বাচনে ভোট ডাকাতি করে নিতে চায়। তারা উম্মাদ হয়ে গেছে। সে জনই আজকে মনে হয় পুলিশ প্রশাসন এবং আ’লীগ যৌথভাবে জনগণের উপর অত্যাচার এবং নির্যাতন চালাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র প্রার্থী বুলবুল কয়েকটি দাবি উপস্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো:-
পোলিং এজেন্টসহ বিএনপি’র নেতাকর্মী ও ধানের শীষ প্রতীকের সমর্থনকারীদের গণগ্রেফতার বন্ধ করতে হবে। গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। ভোটের তিন দিন আগে সেনাবাহীন মোতায়েন করতে হবে। চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করতে হবে। ভোটের দিন ভোট কেন্দ্রে জনগণের জান ও মালের নিরাপত্তা প্রদান করতে হবে। পক্ষপাতিত্ব পুলিশ প্রশাসনের আক্রমণ হতে নেতাকর্মী ও পোলিং এজেন্টদের রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ভোট কেন্দ্র রক্ষা ও ভোট ডাকাতি রক্ষা করতে হবে। নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের বিমাতা সুলভ আচরণের শিকার বিএনপি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপি চেয়ারপার্সনের অন্যতম উপদেষ্টা, সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিনু, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শাহজাহান মিয়া, বিএনপি কেন্দ্রীয় কািমটির বন ও পেিরবশ বিষয়ক সম্পাদক ও মাহনগর বিএনপি’র সভাপতি এবং বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রান ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও
মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এ্যাডভোকেট নিপুন রায়, জেলা বিএনপি, সভাপতি এ্যাডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন তপু, জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুন, তানোর পৌরসভার মেয়র মিজানুর রহমান, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি ওয়ালিউল হক রানা, বর্তমান সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট, জেলা যুবদলের সভাপতি মোজাদ্দেদ জামানী সুমন ও মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান রিটন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।