খবর২৪ঘন্টা ডেস্কঃ ১৪ বছর আগে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীবিরোধী সমাবেশে নৃশংস ওই গ্রেনেড হামলা বাংলাদেশকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল; বুধবার তার বিচার মিলতে যাচ্ছে।
ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন সকাল ১০টার পর কোনো এক সময় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা আলোচিত দুই মামলার রায় ঘোষণা করবেন।
নাজিমুদ্দিন রোডের পুরাতন কারাগারের পাশের ভবনে এ আদালতের বিশেষ এজলাসে গত ১৮ সেপ্টেম্বর এ মামলার বিচার কাজ শেষ হয়।
এ রায় ঘিরে সকাল থেকেই নাজিমউদ্দিন রোড ও আশপাশের এলাকায় নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা। গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়ে আছেন।
দুই মামলার ৪৯ আসামির মধ্যে কারাগারে থাকা ৩১ আসামিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে পাঠানো হয়েছে সকালেই।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু এবং সাবেক তিন আইজিপিও রয়েছেন তাদের মধ্যে।
খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ বাকি ১৮ জনকে পলাতক দেখিয়েই এ মামলার বিচার কাজ চলে।
ঢাকার পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া মঙ্গলবার বলেছিলেন, এ রায় ঘিরে রাজধানীতে কোনো নিরাপত্তা হুমকি তারা দেখছেন না। তারপরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে থাকবে।
সকাল ৮টা থেকে পলাশীর মোড়, বকসিবাজার মোড়, শিক্ষাবোর্ডের সামনে, চকবাজার, মৌলভীবাজার বাজার মোড়ে, নয়াবাজার এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বাবু লাল সাহা নামে এক পুলিশ পরিদর্শক বলেন, রায়কে কেন্দ্র করে কোনো বিশৃঙ্খলা যাতে কেউ না করতে পারে, সেজন্য এ ব্যবস্থা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ ইব্রাহীম খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আদালতের আশপাশের ভবনের ছাদে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে । ইউনিফর্ম এবং সাধারণ পোশাকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যথেষ্ট সদস্য মাঠে আছে।
আদালত চলাকালে আশপাশের এলাকায় যানবাহন চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলে জানান তিনি।
সকাল থেকে নাজিমুদ্দিন রোড, হোসেনিদালান রোড, বকশিবাজার এলাকার দোকান ও হোটেল বন্ধ দেখা যায়। মাক্কুশা মাজারের কাছে বেরিকেড দিয়ে রাস্তাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে চলছে তল্লাশি।
পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া সকাল ১০টায় আদালত এলাকায় আসেন।
তিনি বলেন, “কোনো নৈরাজ্য বরদাশত করা হবে না। নগরবাসীর জানমাল রক্ষায় যা যা ব্যবস্থা দরকার, তা আমরা নেব।”
২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী শোভাযাত্রায় গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন; আহত হন কয়েকশ নেতাকর্মী।
সেদিন অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান আজকের প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু গ্রেনেডের প্রচণ্ড শব্দে তার শ্রবণশক্তি নষ্ট হয়।
খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ মোট ৪৯ জন এ মামলার আসামি।
আওয়ামী লীগ অভিযোগ করে আসছে, শেখ হাসিনাকে হত্যা করে দলকে নেতৃত্বশূন্য করতেই এই হামলা হয়েছিল এবং তাতে প্রত্যক্ষ মদদ ছিল তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপি-জামায়াত জোটের শীর্ষ নেতাদের।
অন্যদিকে বিএনপি নেতারা দাবি করে আসছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাদের দলের জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেককে এ মামলায় জড়ানো হয়েছে।
খবর২৪ঘন্টা / সিহাব