বিশেষ প্রতিবেদক: মাসের পর মাস বকেয়া রেখে টেলিফোন বিল না দেওয়ায় প্রায় ১২ হাজার গ্রাহকের বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানী লিমিটেড রাজশাহী বিটিসিএল’র। দীর্ঘদিন বিল না দেওয়ায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে গ্রাহকের বিরুদ্ধে এ মামলা দেওয়া হয়েছে। মামলায় সরকারী দলের নেতা, সাবেক এমপি ও সাংবাদিকদেরও নাম রয়েছে।
রাজশাহী বিটিসিএল’র একটি সূত্র খবর ২৪ ঘণ্টাকে জানান, মাসের পর মাস গ্রাহকরা টেলিফোন বিল পরিশোধ না করায় তাদের নোটিশ করার পরেও তারা সঠিক জবাব ও টেলিফোন বিল পরিশোধ করেনি। কিন্তু তারা বিল পরিশোধ ও নোটিশের জবাব না দেওয়ায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে এ মামলাগুলো বিভিন্ন সময়ে দায়ের করা হয়।
১২ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে পাওনা প্রায় ১২ থেকে ১৩ কোটি টাকা। গড়ে প্রত্যেক গ্রাহকের কাছে বিটিসিএল’র বকেয়া ১০ হাজার টাকা।
এদিকে, সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, বিটিসিএল কর্তৃপক্ষ বকেয়া আদায়ে আদালতে মামলা দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছে।
মামলাগুলো তদারতি করার বিটিসিএল কর্তৃপক্ষের কোন ভুমিকা নেই বল্লেই চলে। বিশেষ করে যেসব গ্রাহকদের কাছে বেশি টাকা বকেয়া রয়েছে। তারা কর্মকর্তাদের সাথে লেয়াজো করে কিছু টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন বিল আটকে রাখে।
এমনই খবর২৪ঘণ্টার অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে।
রাজশাহী মহানগর ও জেলার ৯টি উপজেলা তানোর, গোদাগাড়ী, মোহনপুর, বাগমারা, দুর্গাপুর, পুঠিয়া, চারঘাট, বাঘা ও পবার গ্রাহকদের কাছে এ বকেয়া রয়েছে।
রাজশাহী বিটিসিএল’র উর্দ্ধতন হিসাব রক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম বকেয়া বিল ও গ্রাহকের নামে মামলার কথা স্বীকার করে বলেন, গ্রাহকরা দীর্ঘদিন বিল পরিশোধ না করলে বিল পরিশোধের জন্য নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশের কোন জবাব না পাওয়া গেলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মামলা দেওয়া হয়। মামলাগুলো বিভিন্ন সময়ে দায়ের করা হয়।
তবে তিনি ১২ থেকে ১৩ কোটি টাকা বকেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকা পাওয়া যাবে।
বকেয়ার পরিমাণ এত বেশি হবে না।
মামলার সংখ্যাও কম বলে তিনি দাবি করেন। তিনি এ বিষয়ে আর মন্তব্য করতে রাজি হন নি। হিসাব রক্ষণ কার্যালয় সঠিক তথ্য দিতে গড়িমসি করে।
আরও পড়ুন
এদিকে, বিটিসিএল’র সংশ্লিষ্ট আরেক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, গ্রাহকের নামে প্রায় ১২ হাজার মামলা রয়েছে।
এ মামলাগুলো দীর্ঘদিন ধরে চলমান রয়েছে। মামলায় সরকারী দলের রাজনৈতিক নেতা ও সাবেক এমপি এবং সাংবাদিকেরও নাম রয়েছে। প্রত্যেক গ্রাহকের কাছ থেকে গড়ে ১০ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে। সেই হিসেবে প্রায় ১২ থেকে ১৩ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, রাজশাহী বিটিসিএল’র পক্ষ থেকে দায়ের হওয়া মামলায় একাধিক গ্রাহকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। বেশ কিছু গ্রাহক ইতপূর্বে গ্রেফতার হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা কোর্টের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করে জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন। বর্তমানেও পরোয়ানা জারিভুক্ত আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছে পুলিশ।