জাসদের সাধারণ সম্পাদক আ স ম আবদুর রবের ১০ বছর সাজা হয়েছিল। তাকে প্যারোলো মুক্তি দিয়ে পশ্চিম জার্মানিতে চিকিৎসার জন্য যেতে দেয়া হয়। সরকারি খরচেই জার্মানিতে রবের চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়েছিল। রব দীর্ঘ সময় ধরে পশ্চিম জার্মানিতে ছিলেন। ঢাকায় জাতীয় সংসদের অধিবেশন চলাকালে ১৯ ফেব্রুয়ারি (১৯৮০) এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রবের চিকিৎসার জন্য সরকারের পাঁচ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।
লেখক, গবেষক মহিউদ্দিন আহমদের ‘বিএনপি: সময়-অসময়’ বইতে এই বিবরণ রয়েছে। পশ্চিম জার্মানি থেকে ২৫শে সেপ্টেম্বর ১৯৭৯ আ স ম রব তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে একটি চিঠি লিখেন। প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজুর রহমান এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) এ এস এম মোস্তাফিজুর রহমানকেও চিঠির অনুলিপি দেয়া হয়। চিঠিতে রব লিখেন, জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের নিউরোসার্জিকেল বিভাগ তদন্তের (ইনভেস্টিগেশন) পর মতামত প্রকাশ করে যে, আমার মস্তিষ্কে (ব্রেইন) কোনো টিউমার নেই।
…ইএনটি বিভাগ তদন্তের (ইনভেস্টিগেশন) পর জার্মানির সর্বশ্রেষ্ঠ ইএনটি বিশেষজ্ঞ প্র. ডা. ডব্লিউ বেকার মতামত প্রকাশ করেন যেÑআমার ডান কান সম্পূর্ণরূপে নষ্ট এবং কানের একটি নার্ভ শক্ত হয়ে গেছে। তিনি আরো বলেছেন যে জার্মানিতে ওই রোগের চিকিৎসা সম্ভব নয়।
অতএব, আপনি ও আপনার সরকারের কাছে আমার জিজ্ঞাসা আমার যে প্রধান চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে পাঠানো হয়েছে, সে কানের চিকিৎসার কী হলো? এখানকার অন্যান্য চিকিৎসাগুলো তো শেষ হওয়ার পথে, কিন্তু কানের চিকিৎসার ব্যাপারে অন্য কোনো দেশে চেষ্টা বা ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে দূতাবাস আমাকে জানায়নি।…. আমি আশা করবো বাংলাদেশের একজন নাগরিক
হিসেবে দেশের স্বার্থে যদি আমাকে সুস্থভাবে বাঁচিয়ে রাখা প্রয়োজন মনে করেন, তাহলে আপনার ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপের মাধ্যমে আমার চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আমি আশা করি। তাছাড়া আমি একজন বন্দি হিসেবে এটা আপনি এবং আপনার সরকারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা দায়িত্বও বটে।