1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
১০ চিকিৎসকে লাখো বন্দীর চিকিৎসা - খবর ২৪ ঘণ্টা
মঙ্গলবার, ০৭ জানয়ারী ২০২৫, ০৮:৫৭ পূর্বাহ্ন

১০ চিকিৎসকে লাখো বন্দীর চিকিৎসা

  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল, ২০১৯

খবর ২৪ ঘণ্টা ডেস্ক :

দেশের কারাগারগুলোতে চিকিৎসক থাকার কথা ১৪১ জন, আছেন মাত্র ১০ জন। এই ১০ জনই চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন প্রায় লাখো বন্দীকে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক বন্দী যক্ষ্মা, টাইফয়েড, কিডনি, লিভার, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে আক্রান্ত এবং তাঁদের ধারাবাহিক চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। স্বরাষ্ট্র ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং কারাগার সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

কারা হাসপাতালে প্রতিদিন বন্দীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া নিশ্চিত করা কারা কর্তৃপক্ষের মৌলিক দায়িত্ব। কিন্তু চিকিৎসক না থাকায় সেই দায়িত্ব তাঁরা পালন করতে পারছেন না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিভিন্ন কারাগারে চিকিৎসকদের নিয়োগ দিলেও তাঁরা যোগ দিচ্ছেন না।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগার এবং ৫৫টি জেলা কারাগার রয়েছে। এসব কারাগারের মোট ধারণক্ষমতা ৩৬ হাজার ৭১৪ জনের। তবে বেশির ভাগ কারাগারে প্রায় তিন গুণ বন্দী রয়েছেন এবং মোট বন্দী এখন ৯৬ হাজার ২৮৩। কারা কর্মকর্তারা বলছেন, মূলত চিকিৎসক–সংকটের কারণেই ঝুঁকি নিয়ে প্রায় প্রতিদিন দুর্ধর্ষ আসামিদের বাইরের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে কারাগারগুলোয় চিকিৎসক চেয়ে গত তিন বছর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অসংখ্যবার চিঠি দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে। সর্বশেষ গত ফেব্রুয়ারিতে আবারও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে অনানুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিষয়টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কেও বারবার জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, কারাবন্দীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য ৬৮টি কারা হাসপাতালে সহকারী সার্জনের ৭০টি, মহিলা সহকারী সার্জনের ১২টি, প্যাথলজিস্ট ১২টিসহ মোট ১৪১ পদ তৈরি করা হয়েছে। এসব পদের বিপরীতে ১০ জন কর্মরত আছেন। ফলে কারাগারে বন্দীদের চিকিৎসা কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ার কথা জানানো হয় ওই চিঠিতে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘এটা সত্য যে আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে অনেকবার চিঠি দিয়েছি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চিকিৎসক পদায়নও করেছে। কিন্তু তাঁরা কারাগারে যেতে চান না। আবার অনেক চিকিৎসক যোগ দিয়েই চলে আসেন।’ মন্ত্রী আরও বলেন, ‘এখন আমরা ভাবছি নিজেরা কিছু করা যায় কি না। পুলিশকে এ ব্যাপারে একটি প্রস্তাব দিতে বলেছি, ওদের যেহেতু পুলিশ হাসপাতাল আছে, সেহেতু সেখানে চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে তাঁদের কারাগারে পাঠানো যায় কি না, সেটি ভেবে দেখা হচ্ছে। দেখা যাক, পুলিশ কী প্রস্তাব দেয়। তার আগে আপাতত এমনি হয়তো চলবে।’

কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ১৭ জন চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হলেও কেউই যোগদান করেননি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওই কারাগারের কারাধ্যক্ষ মাহবুবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কারাগারে ১১ হাজার বন্দী রয়েছেন। প্রতিদিন প্রায় পাঁচ শ জনকে চিকিৎসা দিতে হয়। কিন্তু চিকিৎসক আছেন দুজন।’ তিনি বলেন, কিছু রোগ আছে, যা সংক্রামক। এখন গরমের দিন হওয়ায় বন্দীদের সংক্রামক রোগ আরও বাড়বে।’

ঢাকার অদূরে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে ২০০ শয্যার হাসপাতাল রয়েছে। এর বিপরীতে ৩২টি পদ সৃজন করা হয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে কর্মরত আছেন একজন। স্থানীয়ভাবে নিযুক্ত চিকিৎসকেরা জরুরি প্রয়োজনে কারাগারে আসেন না। ফলে বেশির ভাগ সময় বন্দী, কারা কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে কারা কর্তৃপক্ষকে বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সাবেক কারা উপমহাপরিদর্শক গোলাম হায়দার সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, এ অবস্থা আর কত দিন চলবে? ১০ জন চিকিৎসক কী করে এত বন্দীকে সামাল দেবেন? তাঁদের মানবাধিকারের বিষয়টি দেখা উচিত। তাঁর মতে, কারা হাসপাতালে চিকিৎসার সুব্যবস্থা থাকলে গুরুত্বপূর্ণ আসামিদের বাইরে চিকিৎসা দিতে নেওয়া লাগত না।

একাধিক কারা কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, শূন্য পদে চিকিৎসক কর্মরত না থাকার কারণে অসুস্থ বন্দীদের স্থানীয় বা বিশেষায়িত হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হচ্ছে। ফলে বন্দী নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। তাঁরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন বন্দী থাকা প্রতিবন্ধী ও মানসিক রোগীদের নিয়ে। এসব কর্মকর্তা জানান, এ ধরনের রোগীদের নিয়মিত কাউন্সেলিং (পরামর্শ) ও বিশেষায়িত চিকিৎসা দরকার। কিন্তু তাঁদের জন্য কোনো চিকিৎসক নেই। কারাগারগুলোতে এমন রোগীর সংখ্যা এক হাজারেরও বেশি। তাই জরুরী প্রয়োজনে জেলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসকদের সহায়তা নেওয়া হয়।

স্বাস্থ্য বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে মূলত চিকিৎসকদের প্রেষণে পাঠানো হয়। তরুণ চিকিৎসকেরা সেখানে যেতে চান না। তাঁরা মনে করেন, পরিবেশ না থাকায় সেখানে গেলে পড়ালেখা করতে পারবেন না। তবে তিনি বলেন, ‘আবার যাঁরা কারাগারে গিয়ে মজা পেয়ে গেছেন, তাঁরা আসতে চান না।’ সচিব জানান, নতুন চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে, সেখান থেকে চিকিৎসকদের কারাগারে পাঠানোর চেষ্টা করা হবে।

তবে কারা কর্মকর্তা এবং চিকিৎসকদের অনেকই মনে করেন, মানবিক কারণে কারাগারগুলোয় দ্রুত চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া উচিত। নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক সুভাষ কুমার ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কারাগারের অনেকেই অসুস্থ, যাঁদের চিকিৎসা দেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।’

আবার পরিস্থিতির কারণেই কারাগার থেকে রোগীদের বাইের পাঠাতে হচ্ছে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রায় ছয় বছর কর্মরত চিকিৎসক বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা বাইরে রোগী পাঠাতে বাধ্য হই। কারণ এখানে চিকিৎসা দেওয়ার মতো যন্ত্রপাতি নেই।’ তাঁর মতে, এত অল্পসংখ্যক চিকিৎসক দিয়ে বিপুলসংখ্যক রোগীর সেবা দেওয়া সম্ভব নয়। সুত্র: প্রথম আলো ।

খবর ২৪ ঘণ্টা/আর

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST