রাজশাহীর পুঠিয়া পৌরসভা এলাকায় নির্মাণের একদিন না যেতেই সড়কের কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, পৌরসভার সংশ্লিষ্টদের ব্যাপক অনিয়মের কারণে ঠিকাদার অতিনিন্মমানের কাজ করছেন। আর এ সকল কাজে প্রতিবাদ করলে ঠিকাদারের লোকজন মামলা হামলার হুমকি দিচ্ছে।
এমন ঘটনায় এলাকাজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে গত ২০২২-২৩ অর্থ বছরে এআইইউআইডিপি অধিনে মোট ৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। আর এই অর্থে পৌরসভা বিভিন্ন ওয়ার্ডে মোট ৭ টি সড়ক নির্মাণ ও কার্পেটিং প্রকল্প হাতে নেয়। এরমধ্যে একটি বাদে ৬টি সড়কের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। যার কার্যকাল ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। আর নির্মাণ কাজ গুলো বরাদ্দ পেয়েছেন নাটোর জেলার ঠিকাদার গোলাপ কন্সট্রাকশন।
পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আলম হোসেন বলেন, পৌরসভার ইতিহাসে সড়ক নির্মাণ কাজে এতো অনিয়ম আগে কখনো হয়নি। তিনি বলেন, মানুষ পায়ে হেঁটে গেলেও সড়কের কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। আর এ সকল কাজে প্রতিবাদ করলে ঠিকাদারের লোকজন মামলা হামলার হুমকি দিচ্ছে।
পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মানিক হোসেন বলেন, এই ওয়ার্ডে পৌরসভার অধিনে গত দুইদিন আগে দুটি সড়কের নির্মাণ কাজ হয়েছে। অথচ নির্মাণের একদিন না যেতেই বিভিন্ন স্থান থেকে কার্পেটিং উঠতে শুরু করেছে। বিষয়টি পৌর প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্টদের অবহিত করা হয়েছে।
অপরদিকে ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জেবের আলী মোল্লা বলেন, আমার ওয়ার্ডে কাজ হলেও গুনগত মান কেমন তা সরাসরি বলতে পারবো না। আপনারা দেখেন আর এলাকাবাসীকে জিজ্ঞাসা করেন।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন কাউন্সিলর বলেন, পৌরসভায় চলছে লুটপাটের রাজত্ব। এখন কাজ হয় শুধু খাতা-কলমে। বাস্তবে যদিও দুই একটি সড়কের কাজ হয় তাতে মাত্রাতিরিক্ত দুর্ণীতির কারণে ৩ মাসও টেকসই হয় না। তিনি বলেন, পৌরসভা এলাকার বেশীর ভাগ সড়কের কাজ করছেন উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশল বিভাগ। আর কমিশন বানিজ্য ও ভাগ-বাটোয়ারার কারণে ছোটখাটো কাজেও ব্যাপক অনিয়ম করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার গোলাপ হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, খাতা কলমে কাজ আমার লাইসেন্সে হলেও সেটা আমি করছি না।
পৌরসভার সহকারি প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম বলেন, কাজের অগ্রগতি মোটামুটি ভালো। তবে নির্মিত সড়কের কয়েকটি স্থানে পাথর উঠে গেছে। সে গুলো পূণরায় ঠিকাদার করে দিবে। স্থানীয় ও পৌরসভার কাউন্সিলরদের অভিযোগ কাজ গুলো গোলাপ কন্সট্রাকশনের নামে। অথচ ওই প্রতিষ্ঠান কাজ করে না। পৌর প্রকৌশলীর পছন্দের লোকের মাধ্যমে নিন্মমানের ও দ্বায়সারা কাজ করানো হচ্ছে। এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, একটু ব্যস্ত পরে কথা হবে।
এদিকে পৌরসভার মেয়র আল মামুন এর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বিএ/