আরিফ সাদাত, পুঠিয়া (রাজশাহী): যখন সারা দেশে শিক্ষার ব্যবস্থাকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবার চেষ্টা চলছে ঠিক তখনই সামনে এলো রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার জিউপাড়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিরল চিত্র। সেখানে দেখা গেছে স্কুলের সামনে পানিতে ভিজে দাঁড়িয়ে আছে স্কুলে আসা ছাত্র-ছাত্রী। অথচ বেলা ১১ টা বাজলেও খোলা হয়নি স্কুলের মূল গেট। বাচ্চাদের বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে স্কুলের কাছে এগিয়ে আসে অভিভাবকরা। এসে দেখে তখনও কোন শিক্ষক বা কেরানিও আসেনি। তখন ঘড়ির কাঁটা বেলা ১১ঃ২০ মিনিট। বাচ্চাদের বৃষ্টিতে ভেজার এমন দৃশ্য দেখে অভিভাবকরা রাগে ক্ষোভে স্কুলের মূল গেটে তালা এনে ঝুলিয়ে দেন।
গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিটি শ্রেণিকক্ষের শিক্ষার্থীদের থেকে স্কুল কয়টার সময় আজকে গেট খোলা হয়েছে জানতে চাইলে তারা বলেন ১১ টার পরে স্কুলের গেট খোলা হয়েছে। বিগত দিন স্কুলে প্রধান শিক্ষিকা কয়টার সময় স্কুলে উপস্থিত হন জানতে চাইলে ছাত্রছাত্রীরা জানান ১০ টা বা সাড়ে দশটার সময় স্কুলে আসেন শিক্ষকরা। তবে এ সকল বক্তব্যের সময় ছাত্র-ছাত্রীদের চোখে মুখে ছিল অনেক ভয়। তারা আরো কিছু বলার চেষ্টা করছিল কিন্তু এমন সময় একজন শিক্ষিকার উপস্থিতির কারণে তারা আর এ বিষয়ে কোন কথা বলেনি।
স্থানীয় একাধিক অভিভাবক জানান, আমাদের ছেলেমেয়েরা সঠিক সময়ে এসে স্কুলের ভিতরে ঢুকতে না পেরে বৃষ্টির পানিতে ভিজছে। স্কুল চলাকালীন সময় তারা স্কুলে উপস্থিত নেই এ বিষয়ে আমরা অভিভাবকগণ প্রশ্ন করলে প্রধান শিক্ষিকা রাগান্বিত হয়ে ওঠেন এবং বলেন আমাদের বিদ্যালয় আমাদের নিয়মে পরিচালিত হবে। অভিভাবক ফিরোজ ইসলাম জানান, আমার মেয়ে আগে এই বিদ্যালয় লেখাপড়া করত। এই স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা ইচ্ছামত সময় সুযোগ করে স্কুলে আসেন এবং তাদের খেয়াল-খুশি মতো বাচ্চাদের ক্লাস নেন। কিন্তু নিয়মিত ক্লাস হতো না। এ বিষয়ে আমি প্রতিবাদ করলে শিক্ষক শিক্ষিকারা আমাকে বলেন বাচ্চাদেরকে বাড়িতে রেখে আপনারা আসেন আমরা ক্লাস নিবো। আমরা এভাবে ক্লাস নিবো আপনার ইচ্ছে হলে আপনার মেয়েকে এই বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করান তা না হলে অন্য কোথাও পাঠান। পরবর্তীতে আমি আমার মেয়েকে এই স্কুলে পড়াইনি আমি এখন পাশের অন্য একটি স্কুলে দিয়েছি এখন আমার মেয়ে অনেক ভালো লেখাপড়া করছে।
সৈয়দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা খাতুন একটা ক্ষুদে বার্তা দেন আজকে বৃষ্টির জন্য আমার স্কুলে আসতে দেরি হয়েছে। অভিভাবক এবং ছাত্র-ছাত্রীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, আমি আর কোন বক্তব্য দিতে চাই না।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোখলেসুর রহমান বলেন,আমি এমন খবর শোনার পরেই আমাদের প্রতিনিধি পাঠাই। বিষয়টির সত্যতা পাওয়া গেলে ওই প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান।
বিএ…
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।