খবর২৪ঘন্টা নিউজ ডেস্ক: করোনাভাইরাসের পরীক্ষা কেলেংকারিতে জড়ানো রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদ করিমের বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগগুলো গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করবে গোয়েন্দা পুলিশ- ডিবি।
বুধবার দুপুরে ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন।
তিনি বলেন, ‘সাহেদ ডিবি হেফাজতে পাঁচদিনের রিমান্ডে ছিলেন। গতকাল একটি আদেশ হয়েছে, মামলাটি র্যাব তদন্ত করবে। যেহেতু র্যাব এ বিষয়ে প্রাথমিক অপারেশন করেছে। তাছাড়া আসামি গ্রেপ্তার থেকে শুরু করে সবই তারা করেছে। আইনি প্রক্রিয়ায় মামলাটি ডিবিতে এসেছিল। তবে আজ তারা (র্যাব) মামলাটি নিয়ে যাবে।’
বাতেন বলেন, ‘আমাদের কাছে থাকা অবস্থায় অনেক অভিযোগ এসেছে। হাসপাতালটি করোনা চিকিৎসা, নমুনা সংগ্রহ, ফলাফলের সার্টিফিকেট দেবার কথা ছিল। এছাড়া কত সার্টিফিকেট দেবার কথা ছিল আমরা সব তদন্ত করছি। তদন্তের অংশ হিসেবেই আমরা তার গাড়ি জব্দ করেছি৷ সেখান থেকে মদ, অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আরও দুটি মামলা আমরা করেছি।’
মামলা দুটি ডিবি তদন্ত করবে জানিয়ে আব্দুল বাতেন বলেন, ‘পূর্বের যে মামলাটি সেটা র্যাব তদন্ত করবে। এরই মধ্যে দুজন সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। সহসায় মামলার চার্জশিট দাখিল করব। বিশেষ করে ডিএমপি, ডিবি ও র্যাবসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে৷ এর মধ্যে কিছু মামলা আমরা তদন্ত করব, কিছু মামলা সংশ্লিষ্ট থানা তদন্ত করবে।’
‘তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আছে সেসব বিষয় আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত শেষ করতে চাই৷ সাহেদ যেসব জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে সবই তদন্তের মাধ্যমে বেরিয়ে আসবে।’
রিমান্ডে জালিয়াতির মাধ্যমে সার্টিফিকেটের কি পরিমাণ সংখ্যা পাওয়া গেছে জানতে চাইলে আব্দুল বাতেন বলেন, ‘সেই সংখ্যা প্রায় সাড়ে পাঁচহাজার। এসবের মধ্যে টেস্ট না করেই অনেক ফলাফল দেওয়া হয়েছে। এগুলো স্যাম্পল সংগ্রহ করলে তার মামলা প্রমাণের জন্যই যথেস্ট।’
অস্ত্র ও মাদকের সঙ্গে আরও কারও সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যার কাছে এগুলো পাওয়া যাবে তার বিরুদ্ধেই অভিযোগ। এতে তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর সাহেদ হয়ত মাদক সেবন করত হয়ত তাই তার গাড়িতে মাদক পাওয়া গেছে।’
‘জব্দ করা অস্ত্রের কোন অবৈধ ব্যবহারের প্রমাণ আমরা এখনো পায়নি। তার দেখানো তথ্যের ভিত্তিতেই এসব অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে।’
‘তার বেশকিছু বৈধ অস্ত্র আছে, সেগুলো থাকলে সমস্যা নেই৷ তবে তার বিরুদ্ধে আমরা ২০টির মতো মামলার তথ্য পেয়েছি।’
গত ৬ জুলাই রাজধানীর উত্তরায় রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায় র্যাব। করোনার এই দুর্যোগকালীন সময়ে নমুনা সংগ্রহ করা হলেও টেস্ট না করে ফলাফল দেওয়া, হাসপাতাল পরিচালনার সনদের মেয়াদ না থাকা বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়। পরের দিন হাসপাতালটির উত্তরা ও মিরপুরের দুটি শাখা সিলগালা এবং সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে র্যাব।
মামলার পর সাহেদ ঢাকা থেকে পালিয়ে যায়। দেশের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করে সবশেষ সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে দেশত্যাগের চেষ্টা করেন। গত বুধবার ভোরে ভারতে পালানোর প্রস্তুতির সময় সাহেদকে অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে তাকে নিয়ে উত্তরায় তার অফিসে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় সাহেদের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানা ও সাতক্ষীরায় পৃথক মামলা হয়।
খবর২৪ঘন্টা/নই