1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
সারা ফেলেছে চারুকলায় পড়া আরাফাত রুবেলের অনলাইন পশু হাট - খবর ২৪ ঘণ্টা
সোমবার, ০ জানয়ারী ২০২৫, ০৭:৪ পূর্বাহ্ন

সারা ফেলেছে চারুকলায় পড়া আরাফাত রুবেলের অনলাইন পশু হাট

  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ১৮ জুলা, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক :  একটা সময় ছিল যখন ভাবা হতো চাষ-বাস বা গবাদি পশু লালন-পালন কেবল গ্রামের মানুষেরই কাজ। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেই ধারণা পাল্টেছে। কেবল গ্রামের মানুষই নন অনেক শহুরে মানুষও কৃষি কাজ ও গবাদি পশু পালন করে জীবন ও জীবিকা চালাচ্ছেন। তেমনই একজন তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা ও খামারি রাজশাহীর আরাফাত রুবেল। উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েও চাকরির পেছনে ছোটেননি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষ করে শহরে নিজ ব্যবসার পাশাপাশি তিনি গড়ে তুলেছেন উন্নত জাতের ব্রাহামা গরুর খামার। আধুনিক গবাদি পশু পালন পদ্ধতিতে গড়ে তোলা খামারটি এখন অনেকের কাছেই দৃষ্টান্ত। হালে কোরবানির মৌসুমে তার ব্রাহামা জাতের গরুর খামার এখন সারা দেশের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। খামারে সময় দেওয়ার পাশাপাশি অনলাইনে গরু বিক্রি ও গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়া নিয়েই এখন ব্যস্ত সময় কাটছে রুবেলের।

কঠোর পরিশ্রম ও কাজের প্রতি একাগ্রতা দিয়ে খুব অল্প সময়েই সবার কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছেন আরাফাত রুবেল। করোনাকালে পশু হাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধির বালাই না থাকায় সচেতন শ্রেণির মানুষের জন্য অনলাইনেই গরুর হাট বাসিয়েছেন রুবেল। নেটিজেনদের জন্য অন্তর্জালেই এবার চালাচ্ছেন নিজের কোরবানির পশুর প্রচারণা। আর ই-কমার্সের মাধ্যমে অনলাইনেই চলছে কোরবানির পশু বিকিকিনি।

কোনো রকম প্রতারণা ছাড়াই যারা কোরবানির জন্য একটি সুস্থ, সুন্দর ও আকর্ষণীয় গরু তালাশ করতে বিভিন্ন অনলাইন মার্কেট এবং ফেসবুক পেজে দিন-রাত ঢু মারছেন তাদের জন্য আদর্শ হতে পারে রাজশাহীর রুবেলের ব্রাহামা জাতের এই খামার। এ বছর কোরবানির ঈদ উপলক্ষে তৈরী করা ব্রাহামা জাতের গরুর প্রতি তার রয়েছে বিশেষ যত্ন। নিজ খামারের গরুকে খাওয়ানোর জন্য নিজেই চাষ করছেন- উন্নতজাতের ঘাস ও ভুট্টা। খামারের পাশাপাশি তিন বিঘা জমির ওপর উচ্চ ফলনশীল ঘাস এবং ভুট্টা চাষ করেছেন। নিজের জমির এই ঘাস ও ভুট্টাই খাওয়ানো হয় গরুকে। রাজশাহী শহরের বিনোদপুর আবহাওয়া অফিসের পেছনেই রয়েছে ‘সওদাগর এগ্রো’।

সেখানে ঢুকেই প্রথমে চোখে পড়বে পরিচ্ছন্ন গরুর খামার। কোনো উটকো দুর্গন্ধ নেই। নেই কোনো আবর্জনার স্তুপ। প্রতিটি গরুই নিজের মতো করে খাদ্য খাচ্ছে। এই খামারে বাহাদুরপুর থেকে আনায় এক গরুর নাম রাখা হয়েছে- বাহাদুর। একই খামারে আছে বিশালাকৃতির গরুর তার নাম ‘রাজাবাবু’। এছাড়া খামারে পরমাদরে রয়েছে ব্রাহামা জাতের গরু বাদশা, রাজপুত, লাল বাহাদুর। রয়েছে ছোট্ট সুলতান। বর্তমানে ব্রাহমা জাতের গরু দেশের মাংসের চাহিদার ঘাটতি অনেকাটাই পূরণ করছে। রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর, মেহেরপুর, বাগেরহাট, টাঙ্গাইলে ব্রাহমা গরু পালন করা হলেও রাজশাহীতে এই প্রথম।

কয়েক হাজার মানুষ ব্রাহমা গরু পালনের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। কম খরচে বেশি লাভবান হতে এখন ব্রাহমা গরুই ভরসা। রাজশাহী মহানগরের বিনোদপুর এলাকার গড়ে ওঠা ‘সওদাগর এগ্রো’ খামারে কোরবানি ঈদ সামনে রেখে এবার ছোট-বড় সাইজের প্রায় ১৪টি ‘ব্রাহমা’ জাতের গরু পালন করা হয়েছে। একেকটির ওজন সাড়ে ৩০০ থেকে ৭০০ কেজির মধ্যে। করোনা পরিস্থিতির কারণে খামার থেকে অনলাইনেই গরু বিক্রি করা হচ্ছে। আরাফাত রুবেল তার ফেসবুক আইডিতে প্রতিটি গরুর ছবিসহ প্রয়োজনীয় তথ্য আপলোড করছেন।

পছন্দ হলে ক্রেতারা খামারে গিয়ে গরু দেখে দরদাম করে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। খামারের মালিক আরাফাত রুবেল বলেন, এবারের কোরবানির ইদকে সামনে রেখে তিনি উন্নত ব্রাহমা জাতের গরুগুলো প্রতিপালন করেছেন। গরুগুলোকে নিবিড় পরিচর্যায় প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে লালন-পালন করা হয়েছে। এবার করোনাভাইরাসের কারণে অনেক ক্রেতারা হাটে যাওয়া নিয়ে শঙ্কিত। তাই অনলাইনে গরুগুলো দেখাচ্ছেন। কিছু কিছু সাড়া পাচ্ছি। এর মধ্যে ছয়টি গরু বিক্রি হয়েছে। চট্টগ্রামে দুইটা, ঢাকায় একটা, কুমিল্লায় একটি ও রংপুরে দুইটি গরু বিক্রি করেছেন। অনলাইন হাটে বেশ ভালো সারা পাচ্ছেন বলেও জানান আরাফাত রুবেল।

তিনি আরও বলেন বড় সাইজের গরুগুলো ৩-৪ লাখ, মাঝারি সাইজের গরুগুলো ২-৩ লাখ এবং ছোট সাইজের গরু দেড় থেকে ২ লাখ টাকার মধ্যেই বিক্রি হচ্ছে। এদিকে, রাজশাহী জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. অন্তিম কুমার সরকার জানান, জবহের ওপর ভিত্তি করে প্রাণি সম্পদ অফিস থেকে প্রতিবছর ২ শতাংশ বাড়িয়ে ধরে সম্ভাব্য চাহিদা ঠিক করা হয়। সেই হিসাবে চলতি বছর জেলায় কোরবানির চাহিদা রয়েছে চার লাখ সাড়ে ৪ হাজার পশুর। আর নয় উপজেলায় ছোট বড় মিলে প্রায় ১৭ হাজার ৭০০টি খামার রয়েছে।

গতবার রাজশাহী জেলায় পশু জবেহ হয়েছিল প্রায় চার লাখ। তবে এবার এখন পর্যন্ত খামার ও গৃহস্থ ঘরে কোরবানির জন্য সম্ভাব্য মজুত রয়েছে মাত্র তিন লাখ ৬৯ হাজার ৫৭৪টি। সেই হিসাবে এবারের ঈদে প্রায় ৩৫ হাজার পশুর ঘাটতি রয়েছে। তবে বাইরে থেকে গরু আমদানি না হলে বা ভারতীয় গরু সীমান্ত দিয়ে ব্যবসায়ী না নিয়ে আসলেও ন্যায্য মূল্যেই পশু কেনাবেচা হবে।

রাজশাহী বিভাগীয় প্রাণীসম্পদ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক রুহুল আমিন আল ফারুক বলেন, হাটের ওপরে চাপ কমলে করোনা সংক্রমণও কম হবে। আরাফাত রুবেলের মত দক্ষ খামারিরা এগিয়ে আসলে তাদের দেখে অন্যরাও উৎসাহিত হবেন। আর সরকারের প্রাণিসম্পদ বিভাগও তাই চাচ্ছে। অনেক খামারি এরইমধ্যে অনলাইনে পশুর হাট বসিয়েছেন। কোরবানির পশু বিক্রিও করতে শুরু করেছেন। তবে যারা হাটে গরু তুলবেন তাদের অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাটে গরু তুলতে হবে।

জেএন

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST