1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব আওয়ামী লীগ: ষড়যন্ত্রের নতুন ক্ষেত্র? - খবর ২৪ ঘণ্টা
রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫৪ অপরাহ্ন

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব আওয়ামী লীগ: ষড়যন্ত্রের নতুন ক্ষেত্র?

  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪

নজরুল ইসলাম জুলু : ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে মাঠ পর্যায়ে কার্যত অদৃশ্য হয়ে গেছে আওয়ামী লীগ। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের উস্কানিমূলক তৎপরতা উদ্বেগজনক মাত্রায় বেড়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বিরোধী দলের মতে, এ তৎপরতা মূলত দলের নতুন ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের অংশ।

৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ভারত পালানোর পর থেকে দলের নেতাকর্মীদের অধিকাংশই আত্মগোপনে আছে। দেশের রাজপথ থেকে একপ্রকার হারিয়ে যাওয়া দলটি এখন ফেসবুক, এক্স (সাবেক টুইটার), টেলিগ্রাম ও ইউটিউবের মতো মাধ্যমগুলোকে ব্যবহার করে নিজেদের পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে। এ মাধ্যমগুলোতে মিথ্যা তথ্য প্রচার ও বিরোধীদের চরিত্র হননের খেলায় এখন তারা মেতে আছে। শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর কোণঠাসা আওয়ামী দোসররা পুনর্গঠিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করছে এবং নানা প্রপাগান্ডার মাধ্যমে বিরোধীদের আক্রমণ করছে। শেখ হাসিনা ভারতে পালানোর পর থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অঙ্গন জুড়ে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার । হাসিনার পতনের পর অনেক নেতাকর্মীই দেশ ছেড়ে পালায়। আবার, অনেকেই দেশের মধ্যেই আত্মগোপনে চলে যায়। এরফলে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আওয়ামী লীগের অফিসগুলো অচল হয়ে পড়ে।

কোনো কোনো জায়গায় আওয়ামী লীগের দলীয় অফিসকে পরিণত করা হয় পাবলিক টয়লেটে, কোথাও আবার বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয় আওয়ামী লীগের অফিস। ফলে নেতাকর্মীদের মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম স্থবির হয়ে যায়। কিন্তু হঠাৎ করেই অন্ধকার কাটিয়ে নতুন করে মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগের দোসরদের একের পর এক পোস্ট দেখা যাচ্ছে। যদিও এখনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বাইরে মাঠে বা অফিসে তাদের সক্রিয় উপস্থিতির কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোসর বাহিনী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পোস্ট ও ভিডিওর মাধ্যমে দলের পক্ষে সমর্থন জোগানোর জন্য জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা করাকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে অনেকেই।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি একটি সংগঠিত প্রচারণার অংশ, যার মাধ্যমে দলের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে নজর সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কিছু পোস্টে শেখ হাসিনার দ্রুত দেশে ফেরার বার্তাও দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে, বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, এ ধরনের প্রচারণা সরকারের একপ্রকার হীনমন্যতার প্রকাশ।

এইদিকে রাজশাহীর পলাতক আওয়ামী লীগের দোসররাও অজ্ঞাত স্থানে থেকেই নির্লজ্জের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। রাজশাহীর সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের ফুপাতো ভাই ও রাজশাহী ৬ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের একান্ত সচিব এবং রাজশাহী জেলা যুবলীগের সহসভাপতি এসএম জুবায়ের হোসেন রুবনের সাম্প্রতিক ফেসবুক পোস্ট রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তিনি আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও মুফতি উসামার ছবি শেয়ার করে তাদের নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়েছেন। রুবন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সাথে মুফতি উসামার একটি ছবি শেয়ার করে লিখেন “আইন উপদেষ্টার সাথে নিষিদ্ধ ঘোষিত হিজবুত তাহরীর নেতার সৌজন্য সাক্ষাৎ ” এবং অপপ্রচার চালান। নতুন বাংলাদেশ কে জঙ্গিবাদী রাষ্ট্র তকমা দিয়ে নানান অপপ্রচার করছে স্বৈরাচারের এই দালাল। উল্লেখ্য, রুবনের বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা, লুটপাটে লিপ্ত ছিল। ৫ই আগষ্ট রাজশাহীতে ছাত্র-জনতার উপর গুলি চালানো ও হামলার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিল রুবন।

স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের আরেক দোসর রাজশাহী ৩ আসনের সাবেক মেয়র মো: আয়েন উদ্দিনও পলাতক অবস্থাতেই কোনো রকম অনুশোচনার পরিবর্তে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কে নিয়ে তার ফেসবুক আইডিতে বিভিন্ন মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর অপতথ্য ছাড়াচ্ছে।
বিরোধী দলের নেতাদের মতে, আওয়ামী লীগের এই তৎপরতা শুধু অপপ্রচার নয়, বরং জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার একটি পরিকল্পিত প্রচেষ্টা। তাদের দাবি, বিদেশে পালিয়ে থাকা আওয়ামী নেতারা এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে চক্রান্তের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।

সাম্প্রতিক সময়ে অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের দোসররা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ্যেই ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে সক্রিয় শিক্ষার্থীদের হত্যা করার। এরপরই সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে জুলাই-অগাস্ট এর আন্দোলনের সাথে জড়িত শিক্ষার্থীরা রহস্যজনকভাবে হামলার শিকার হচ্ছেন। এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ জন শিক্ষার্থী হিডেন কিলিংয়ের শিকার হয়েছেন। খুনের ধরন দেখে মনে হচ্ছে খুব পরিকল্পিত ভাবে লিস্ট ধরে ধরে আন্দোলনের সাথে

সাথে জড়িত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে হত্যা করা হয়েছে। বিভিন্ন নাম্বার থেকে কল করে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এইসব টার্গেট কিলিং এর সাথে আওয়ামী দোসররা জড়িত আছে বলে অনেকেই অভিযোগ করছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মাঠে অনুপস্থিত আওয়ামী লীগ এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। যদিও তারা জনগণের আস্থা হারিয়েছে, তবে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে আবারও রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা করছে। তৃণমূলে জনগণের সমর্থন হারিয়ে ফেলা আওয়ামী লীগের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হয়তো একটি সাময়িক কৌশল হতে পারে, কিন্তু এটি দীর্ঘমেয়াদে তাদের রাজনৈতিক অবস্থান পুনর্গঠনে ব্যর্থ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মাসুদুল হাসান খান( মুক্তা) বলেন৷ ফ্যাসিস্টরা মনে করে ছিল তারা যেভাবে অতীতে ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহ, ২০১৩ সালের ৫ই মে হেফাজতে ইসলামের আন্দোলন, ২০১৮ সালের কোটা ও নিরাপ্পদ সড়ক আন্দোলন সামাল দিয়েছিল ২০২৪ এর জুলাইয়ে শুরু হওয়া কোটা আন্দোলনকেও তারা অতীতের মতোই সামলে নিতে পারবে। কিন্তু, কোটা আন্দোলন যে ফ্যাসিস্টদের বর্বরোচিত হামলার কারণে এক দফা আন্দোলনে রূপ নিবে আর অল্প সময়ের মধ্যেই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হবে তা তারা মেনে নিতে পারছে না। এই আন্দোলনে তাদের সকল অহমিকা ধূলিসাৎ হয়েছে তাই তারা নানান অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। সকল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচিৎ এই বিষয় গুলোর দিকে সুনজর দেওয়া এবং আওয়ামী দোসরদের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া।

বিএ..

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST