ভোটের মাঠে কোনো প্রকার সহিংসতা করবেন না বলে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারের (এসপি) সামনে প্রতিজ্ঞা করার কয়েক ঘণ্টা পরই রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের দুই প্রার্থী বিবাদে জড়িয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন তারা।
জানা গেছে, গত (২৫ ডিসেম্বর) রাতে রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী (কাঁচি প্রতীক) ও বর্তমান সংসদ সদস্য এনামুল হকের তিনটি নির্বাচনী ক্যাম্প অফিসে আগুন লাগে। এতে সেখানে থাকা ভোটার তালিকা, পোস্টার ও হ্যান্ডবিল পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হকের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে মনোনীত প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের কর্মীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। তবে আবুল কালাম বলছেন, এনামুল হকের সমর্থকরা নিজেরাই আগুন ধরিয়ে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছেন।
এর আগেও রাজশাহী-৪ আসনে কিছু নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর, প্রতিদ্বন্দ্বির সমর্থকদের ওপর হামলা, ক্যাম্পে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এরপর নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ গতকাল সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হককে তাঁর কার্যালয়ে ডাকেন। রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে পুলিশ সুপার সাইফুর রহমানের সামনে দুই প্রার্থী কোলাকুলি করেন ও অঙ্গীকার করে বলেন যে, তারা কোনো সহিংসতায় জড়াবেন না। কিন্তু গতকাল রাতেই এনামুল হকের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হকের অভিযোগ, আমি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করার ব্যাপারে কথা দিয়েছি, কিন্তু নৌকার প্রার্থী কালাম কথা রাখেননি। তার দলের লোকজন আমার নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে। এভাবে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ থাকে না।
অভিযোগ অস্বীকার করে আবুল কালাম বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে তার সমর্থকরা কেউ জড়িত নয়।
এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হকের সমর্থকদের অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে জেলা পুলিশের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও বাগমারা থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের মচমইল বাজারের পাশ্ববর্তী সৈয়দপুর মহিলা কলেজ, একই ইউনিয়নের বাইগাছা ও গণিপুর ইউনিয়নের আঁচিনঘাট এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হকের কাঁচি প্রতীকের এসব নির্বাচনী অফিস।
বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ অরবিন্দ সরকার বলেন, কাঁচি প্রতীকের পৃথক তিনটি নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন দেওয়ার কথা শুনেছি। অভিযোগ পেলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার শামীম আহমেদ বলেন, ওই দুই প্রার্থীকে একবার সতর্ক করেছি। তারা কোলাকুলি করেছেন। এরপরও কেউ সহিংসতায় জড়ালে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে। আগামী ২৯ ডিসেম্বর বিজিবির টহল শুরু হবে। ইতোমধ্যে বাগমারায় অতিরিক্ত ৪০ জন পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
বিএ…
বিএ…