খবর২ ৪ঘণ্টা, ডেস্ক: ‘দেশ সংবিধান মতো চলছে না’ বলে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত, যুক্তরাজ্যের হাই-কমিশনার এবং কানাডার উপ-হাইকমিশনারের কাছে নালিশ করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
বুধবার (০৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খানের বাসায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার, যুক্তরাজ্যের হাই-কমিশনার অ্যালিসন ব্লেইক এবং কানাডার উপ-হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে এ নালিশ করেন তিনি।
ওই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী; জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না এবং গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী।
বৈঠকটি শুরু হয় সকাল সাড়ে ১০টায়। শেষ হয় দুপুর সোয়া ১২টার দিকে। বৈঠক শেষে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বা বিএনপি নেতারা মিডিয়ার সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, শুরুতেই আর্ল রবার্ট মিলার এবং অ্যালিসন ব্লেইক জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের কাছে বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান। পাশাপাশি তারা এও জানতে চান, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা এখন কী করবেন বা কী করতে চান? এ ব্যাপারে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে তাদের চাওটা কী?
জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনারা অবগত আছেন। নতুন করে কিছু বলার নেই। আপনারা জানেন, বাংলাদেশ সংবিধান অনুযায়ী চলছে না। যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল, সেই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থেকে সরকার সরে গেছে। রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণের হাতে নেই। যে সরকার দেশ চালাচ্ছে, সেটা জনগণের ভোটে প্রতিষ্ঠিত না। একটা প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বর্তমান পার্লামেন্ট গঠন করা হয়েছে।’
সূত্র মতে, ড. কামালের এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আর্ল রবার্ট মিলার বলেন, ‘আপনারা তো সেই পার্লামেন্টে গেছেন। এখন কী বুঝছেন?’
জবাবে, ‘ড. কামাল হোসেন বলেন, এ সংসদকে তো আমরা সংসদই মনে করি না। তারপরও যারা নির্বাচিত হয়েছেন, তারা সংসদে গেছেন গণতন্ত্র চর্চার ন্যূনতম সুযোগটুক কাজে লাগানোর জন্য। তারা সেখানে যতটুকু সুযোগ পাচ্ছেন কথা বলছেন। কিন্তু এ অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন প্রয়োজন। আপনারা আপনাদের জায়গা থেকে এ সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, দ্রুত একটা নির্বাচন আয়োজন করার।’
সূত্র মতে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কূটনীতিকদের বলেন, ‘বিরোধী দলের নেতাকর্মী সমর্থকদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। কারাবন্দি খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। দেশের স্থিতিশীল অবস্থা বজায় রাখতে এবং গণতন্ত্রের স্বার্থে খালেদা জিয়ার মুক্তি অত্যন্ত জরুরি। আমরা চাই, যত দ্রুত সম্ভব নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। কূটনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে থেকেই এ ব্যাপারে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করছি।’
ড. কামাল হোসেন এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের পাশাপাশি আ স ম আব্দুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ড. মঈন খান বিভিন্ন পয়েন্টে কথা বলেন। আর্ল রবাট মিলার ও অ্যালিসন ব্লেইক তাদের সবার কথা শোনেন। তবে কোনো মতামত ব্যক্ত করেননি তারা।
অবশ্য বৈঠক শেষে ড. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে, আমরা তুলে ধরেছি, কূটনীতিকরা শুনেছেন।’
আর বৈঠক উপস্থিত জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘চায়ের আড্ডায় মঈন খানের বাসায় এসেছিলাম। সামাজিক, রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
খবর ২৪ঘণ্টা/ জেএন