খবর২৪ঘণ্টা.কম, ডেস্ক: অর্থনীতির অধিকাংশ সূচক ইতিবাচক অবস্থানে, রাজনীতিতে নেই অস্থিরতা; সামনে নির্বাচন। সেই ভোটে আওয়ামী লীগকে টানা তৃতীয়বারের মত জয়ী দেখতে প্রায় পৌনে পাঁচ লাখ কোটি টাকা ব্যয়ের পরিকল্পনা সাজিয়ে‘সবাইকে খুশি করার’বাজেট নিয়ে আসছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে টানা দশমবারের মত সংসদে বাজেট প্রস্তাব পেশ করতে দাঁড়িয়ে সরকারের এক অর্থবছরের ব্যয় নির্বাহের পাশাপাশি কীভাবে তিনি ভোটারদের খুশি করার কথা ভাবছেন?
মুহিত বলেছেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের এই বাজেট নতুন কোনো কর আরোপ করা হচ্ছে না। বরং করমুক্ত আয়ের সীমা আড়াই লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন লাখ টাকা করার প্রস্তাব আসতে পারে।
আর ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের খুশি করতে তাদের দীর্ঘদিনের দাবি করপোরেট ট্যাক্স কমানোর প্রস্তাবও এবারের বাজেটে আসতে পারে বলে মুহিত জানিয়েছেন।
প্রয়াত অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের তিন মেয়াদে সর্বোচ্চ ১২টি বাজেট দেওয়ার রেকর্ড ছুঁতে চলা মুহিত সব প্রস্তুতি শেষ করে অনেকটাই নির্ভার। তার দৃঢ় বিশ্বাস, আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসছে। ভোটার টানার লক্ষ্য নিয়েই এবার জনতুষ্টির বাজেট নিয়ে আসছেন তিনি।
শনিবার হেয়ার রোডে নিজের বাসায় নতুন বাজেটের বিভিন্ন দিক নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, “নির্বাচনের বছর। তাই কঠোর বাজেট দিচ্ছি না।”
৮৪ বছর পেরিয়ে আসা মুহিতের হাতে গত নয় বছরে বাংলাদেশের বাজেটের আকার বেড়েছে প্রায় চারগুণ। ২০০৯-১০ অর্থবছরে যেখানে বাজেটের আকার ছিল ১ লাখ ১০ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা, নতুন বাজেটে তা ৪ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার মত হতে যাচ্ছে।
সম্পদের সংস্থান করতে পারলে আরও বড় বাজেট দেওয়ার প্রত্যাশা ছিল অর্থমন্ত্রীর। তবে দেশকে মধ্যআয়ের দেশের কাতারে নিতে পারায় তার আত্মতৃপ্তির কমতি নেই। এবারের ১০৩ পৃষ্ঠার বাজেট বক্তৃতার শিরোনাম তিনি ঠিক করেছেন‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ।’
বাজেট নিয়ে মুহিত বলেন, “আমার এবারের বাজেটে নতুন করে কোনো কর আরোপ হবে না। আর এটা হবে জনগণের জন্য সুখবর।” পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বয়স্ক, বিধবাসহ বিভিন্ন উপকারভোগীর সংখ্যা এবং ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর প্রস্তাব বাজেটে থাকছে বলে জানান তিনি।
অর্থমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন, সরকারের এ মেয়াদে তার শেষ বাজেট হবে পাঁচ লাখ কোটি টাকার। তবে তার সেই লক্ষ্য এবার পূরণ হচ্ছে না।
তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমার শেষ বাজেট আমি পাঁচ লাখ কোটি টাকা দিতে চেয়েছিলাম। দিতেও পারতাম। কিন্তু চাপাচাপি করে বড় বাজেট দিতে চাইনি। বাস্তবসম্মত বাজেট দিচ্ছি।
“তবে আমাদের এখানে একটা বড় পরিবর্তন আমি লক্ষ্য করছি। অবশ্যই এটা ভালো। বড় বড় বাজেট, উচ্চাভিলাষী বাজেট- এ সব সমালোচনা অনেক কমে গেছে। বাস্তবায়ন বাড়িয়েই আমি সমালোচনার জবাব দিয়েছি।”
মুহিত তথ্য দেন, চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটের আকার ছিল ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকা। বাস্তবায়ন হিসাব করে সংশোধিত বাজেটে তা হবে ৩ লাখ ৮৪ হাজার কোটি টাকার মত।
“এতেই প্রমাণ হয়, বড় বাজেটও বাস্তবায়ন হয়। আর এ বাস্তবায়নের মাধ্যমেই আমরা এই এতো দূর অগ্রসর হয়েছি।”
ভোটের বছরে পৌনে পাঁচ লাখ কোটি টাকার বাজেট বাস্তবায়নে রাজস্ব আদায়ে কোনো সমস্যা হবে বলে মনে করছেন না অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। আমাদের অনেক তরুণ করদাতা কর দিতে আগ্রহী হয়েছে। তারা উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে কর দিচ্ছে। আমরা ভেবেছিলাম দেশে ১৫ লাখের মত করদাতা হবে। সুখের বিষয়, সেই সংখ্যা ৩০ লাখে পৌঁছেছে।”
বাজেটের আকার যেখানে ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকা থেকে প্রায় ১৭ শতাংশ বাড়িয়ে ৪ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকায় নেওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে, সেখানে কর না বাড়লে রাজস্ব বাড়বে কীভাবে?
এমন প্রশ্নে মুহিত বলেন, “আমাদের রাজস্ব আহরণকারী সংস্থা এনবিআরের লোকজনের মানসিকতায় পরিবর্তন হয়েছে। একইসঙ্গে আইনি জটিলতাও কমানো হয়েছে। তাই বেশি মানুষ আয়কর দিচ্ছে। এ খাত থেকেই রাজস্ব বাড়বে।”
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুরের মতে, দেশের অর্থনীতি এখন যে অবস্থায় আছে, তাতে নির্ভার হয়েই ভোটের বাজেট বানাতে পারছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, “নির্বাচনের কারণে করদাতাদের ওপর নতুন করে কর চাপানো হবে না, বরং কর ছাড় দেওয়া হবে; এটাই স্বাভাবিক।”
প্রবৃদ্ধি-মূল্যস্ফতি
চলতি বাজেটে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের আভাস পেয়ে অর্থমন্ত্রী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্যও উচ্চাভিলাসী লক্ষ্য ধরছেন। নতুন বাজেটে এই হার ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ।
২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ছিল ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) নয় মাসের (জুলাই-মার্চ) তথ্য হিসাব করে বলছে, ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হতে যাচ্ছে এ বছর।
প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতির গড়হার ৫ দশমিক ৪ শতাংশে আটকে রাখার পরিকল্পনা জানাতে পারেন মুহিত। চলতি বাজেটে তিনি মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৮ শতাংশে রাখতে চেয়েছিলেন।
সোমবার বিবিএস যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, মে মাস শেষে (২০১৭ সালের জুন থেকে ২০১৮ সালের মে পর্যসন্ত) গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৮১ শতাংশ।
মেগা প্রকল্প
আগামী ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা। ফলে অর্থমন্ত্রী সংসদে পুরো অর্থবছরের বাজেট দিলেও তার কাছে প্রথম ছয় মাস বাড়তি গুরুত্ব পাবে।
নির্বাচনের আগে ভোটারদের সামনে উন্নয়ন দেখাতে এরইমধ্যে এডিপির আওতায় বড় বড় প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে ১০ মেগা প্রকল্পেই বরাদ্দ হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি।
গত ১০ মে সরকারের অনুমোদন পাওয়া ১ লাখ ৮০ হাজার ৮৬৯ কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) থাকা পদ্মা সেতুর মত কিছু প্রকল্পকে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার জন্য বিজ্ঞাপনী প্রচারে ব্যবহারের প্রবণতা ক্ষমতাসীনদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে আগে থেকেই।
এই এডিপির মধ্যে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) আওতায় থাকবে ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা, যা মূল এডিপি হিসেবে পরিচিত। বাকিটা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়ন প্রকল্প। সার্বিকভাবে এই এডিপির আকার চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির প্রায় ১৭ শতাংশ বেশি।
সরকারের অগ্রাধিকারের ১০ মেগা প্রকল্পের মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য সর্বোচ্চ ১১ হাজার ৯৯ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। আর পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেলের জন্য রাখা হয়েছে যথাক্রমে ৪ হাজার ৩৯৫ কোটি ও ৩ হাজার ৯০২ কোটি টাকা।
নতুন এডিপির ২৬ শতাংশ বা সাড়ে ৪৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ থাকছে পরিবহন খাতে। ভোটের বছরে রাস্তাঘাট নির্মাণ প্রকল্পেই সাংসদদের আগ্রহ বেশি।
সব মিলিয়ে আগামী এডিপিতে ১ হাজার ৪৫২টি প্রকল্প রয়েছে। এ ছাড়া এডিপিতে বরাদ্দহীন ও অননুমোদিত প্রকল্প আছে ১ হাজার ৩৩৮টি। এসব প্রকল্প থেকেও কিছু প্রকল্প সারা বছর ধরে একনেকে পাস করা হবে।
উন্নয়ন ব্যয় বাদ দিলে অনুন্নয়ন ব্যয়ের মধ্যে আগামী বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, ঋণের সুদ পরিশোধ এবং ভর্তুকিতেই যাবে এক-তৃতীয়াংশ। এর পরিমাণ ১ লাখ কোটি টাকার বেশি।
নতুন বাজেটে বেসরকারি খাতে পেনশন ব্যবস্থা চালু নিয়ে একটি রূপরেখা থাকবে বলেও জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
রোহিঙ্গাদের জন্য ৪৬০ কোটি টাকা
অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, নতুন বাজেটে রোহিঙ্গাদের জন্য ৪৬০ কোটি টাকা বরাদ্ধ থাকবে। রাজস্ব বাজেট থেকে এই অর্থ জোগান দেয়া হবে। এছাড়া বিশ্ব ব্যাংক, এডিবিসহ বিভিন্ন দাতাদেশ এবং সংস্থার সহায়তায় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
এনবিআরের লক্ষ্য ৩ লাখ কোটি টাকা
মুহিত যে পরিকল্পনা সাজিয়েছেন, সেই হারে সরকারি ব্যয় বাড়ানোর জন্য আগামী অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরকে ২ লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য দেওয়া হতে পারে।
আর সেক্ষেত্রে এনবিআরকে চলতি অর্থবছরের লক্ষ্য থেকে ৭১ হাজার কোটি টাকা বেশি আদায় করতে হবে, যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্য থেকে প্রায় ৩২ শতাংশ বেশি। এনবিআর কখনোই রাজস্ব আদায়ে এত প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারেনি।
বরাবরের মতোই মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট থেকে আদায় করতে হবে সবচেয়ে বেশি। এবার লক্ষ্য ধরা হচ্ছে ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। আর ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে ১ লাখ ২০০ কোটি টাকা আয়কর এবং শুল্ক খাতে ৮৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্য দেওয়া হচ্ছে এনবিআরকে।
বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকার দেশ-বিদেশ থেকে ঋণ নেয়, যার মধ্যে বেশি ঋণ নেওয়া হয় ব্যাংক খাত থেকে। ঘাটতি মেটাতে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করেও বড় অংকের টাকা সংগ্রহ করে।
ভ্যাট হার কেমন হবে
চলতি অর্থবছর থেকে সার্বজনীন ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায়ের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। পরে ব্যবসায়ীদের তুমুল বিরেধিতায় সরকার পিছু হটে। প্রধানমন্ত্রী ওই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন দুই বছর পিছিয়ে দেন। সে হিসাবে ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইন চালু হবে।
এবার নতুন ভ্যাট আইনের প্রশ্ন না থাকলেও বর্তমান ভ্যাট হারে ব্যাপক পরিবর্তন আসতে পারে। বর্তমানে ভ্যাটের হার নির্ধারণ করা আছে নয়টি স্তরে। এই স্তরগুলো হল ১.৫, ২.৫, ৩, ৪, ৪.৫, ৫, ৬, ১০ ও ১৫ শতাংশ। এবার তা কমিয়ে ছয়টি স্তরে হার নির্ধারণ করা হতে পারে। স্তরভিত্তিক হার হতে পারে ২, ৩, ৪, ৬, ১০ ও ১৫ শতাংশ।
তবে ভ্যাটের সর্বোচ্চ হার ১৫ শতাংশেই থাকবে। আর আগামী বছর ভ্যাট হারে স্তরের সংখ্যা আরও কমিয়ে তিনটিতে নামিয়ে আনা হতে পারে।
রাজস্ব খাতে পরিবর্তন
অর্থমন্ত্রী জানান, সিগারেট ও মোবাইল কোম্পানির জন্য করপোরেট ট্যাক্স ৪৫ শতাংশ অপরিবর্তিত থাকবে। এছাড়া ব্যাংকসহ নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত সব কোম্পানির ক্ষেত্রে করপোরেট ট্যাক্সের সর্বোচ্চ হার ৩৭.৫ শতাংশের বেশি হবে না।
বর্তমানে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য করপোরেট কর ২৫ শতাংশ। আর যে কোম্পানি তালিকাভুক্ত নয় সেগুলোকে দিতে হয় ৩৫ শতাংশ হারে। আর ব্যাংকের ক্ষেত্রে তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে ৪০ শতাংশ এবং তালিকাভুক্ত নয়- এমন ব্যাংককে ৪২ শতাংশ করপোরেট কর দিতে হয়।
এবার শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর হার সাড়ে ২২ শতাংশে নামিয়ে আনা হতে পারে। তবে অর্থমন্ত্রী আগামী কয়েক বছরে সার্বিকভাবে করপোরেট কর হার কমিয়ে আনার একটি পরিকল্পনা দেবেন।
ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের কিছুটা স্বস্তি দেওয়ার চেষ্টা থাকবে নতুন বাজেটে। বর্তমানে আয় অনুযায়ী শূন্য, ১০, ১৫, ২০, ২৫ ও ৩০ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হয়। এবার ৫ কিংবা সাড়ে ৭ শতাংশ হারের আরেকটি নতুন কর স্তর রাখা হতে পারে। তাতে নিচের দিকের করদাতাদের ওপর চাপ কিছুটা কমবে বলে এনবিআর আশা করছে।
তাছাড়া করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর একটি রাজনৈতিক চাপও সরকারের ওপর আছে। তা করা হলে করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ টাকা হতে পারে।
বর্তমানে বার্ষিক আয় আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত হলে আয়কর দিতে হয় না। এনবিআর অবশ্য করমুক্ত আয়সীমা না বাড়িয়ে স্তর বাড়িয়ে দিয়ে তুলনামূলক কম আয়ের মানুষকে সুবিধা দেওয়ার পক্ষে।
গুগল, ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন ইন্টারনেট কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে যে আয় করছে, তাকে কীভাবে করের আওতায় নেওয়া হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই আইনে। ফলে এসব মাধ্যমে বিজ্ঞাপনের ওপর প্রদেয় ১৫ শতাংশ ভ্যাট আদায় করা যাচ্ছে না।
এখন ডিজিটাল মার্কেটিং খাত হিসেবে এসব খাত থেকে আয়কর নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে এনবিআর। আর এ বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা থাকবে বাজেটে।
এ ছাড়া এনবিআরের শুল্ক কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন হতে পারে। কিছু খাদ্যপণ্যে ভ্যাট ছাড় দেওয়া হতে পারে। রাজস্ব প্রশাসনে ব্যাপক সংস্কারের পরিকল্পনাও থাকবে অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতায়।
উৎসে কর আহরণের জন্য আলাদা কর অঞ্চল গঠনের ঘোষণাও আসতে পারে এবার। এ ছাড়া আরও কয়েকটি কর অঞ্চল গঠন করা হবে। বর্তমানে ৩১টি কর অঞ্চল আছে।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ