নিজস্ব প্রতিবেদক :
সন্ত্রাসীদের দ্বারা দখলকৃত জমি উদ্ধার ও ন্যায্য অধিকার বুঝে পাওয়ার দাবিতে রাজশাহী মহানগরীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে এক ভুক্তভোগী পরিবার। সোমবার দুপুরে নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নগরীর মতিহার থানাধীন কাপাশিয়া পূর্বপাড়া এলাকার হাচেন আলীর ছেলে ভুক্তভোগী মাহাবুল আলম।
লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, পবা ও পুঠিয়া, মৌজা-কাপাশিয়া ও ভাংড়া, জেল নং-১৯৪, ০৫ আর.এস খতিয়ান-২৯, ১১৭, ৩৮১, ৩৮৮, ৫৫৪, ৬১১ ও ৩৬৫ যাতে সর্বমোট ৩.৭৯৪৪ একর জমিন তার পিতা হাচেন আলীর নামে রয়েছে। জমিটি তিনি অশোক ম-লের ওয়ারিশ হিসেবে পান। নালিশি সম্পত্তির মূলধনী, সি. এস. প্রজা ছিলেন পঁচাই ম-ল, তার মৃত্যুর পরে তার ওয়ারিশ আশকের ম-ল পেয়ে ভোগ করে মৃত্যুবরণ করলে তার ওয়ারিশ হাচেন সেটি পায়। যার আর এস খতিয়ান নং-৫৫৪, ৩৮৮, ৩৮১, ৩৬৫, মোট মাটির পরিমাণ ২২৫০+৬৮০০+১.৮৮০০+২৫০০=৩.০৩৫০ একর।
নালিশি সম্পত্তির মূলধনী সি.এস প্রজা ছিলেন মবিয়া মন্ডল ওরফে মড মন্ডল যার সি. এস খতিয়ান নং-৭৩০ হইতে ৭৩৭, মোট মাটির পরিমাণ ৫.৭৫০০ একর।
জমি তার পিতার হলেও কাপাশিয়া পূর্ব পাড়া এলাকার বিবাদী ১. মৃত লোকমান আলীর ছেলে আকসেদ আলী দিং, মৃত জনাব আলীর ছেলে সমসেদ আলী দিং, জামাল আলীর ছেলে এরাশাদ আলী দিং, আরমানের ছেলে রেজা, মেছের সরদারের ছেলে সেহেরা বিবি, আহম্মদ ম-লের ছেলে জাহাঙ্গীর, জং হোসেন মন্ডল জেহের আলীর ছেলে আবুল হোসেন জোরপূর্বক জমি দখল করার চেষ্টা করছে। এমনকি দখল করে প্রাচীর তুলেছে।
অথচ ওই জমির মামলায় আমাদের পক্ষে রায় রয়েছে। রাজশাহী কোর্ট, চেয়ারম্যানের প্রতিবেদন, সহকারী কমিশনার ভূমির প্রতিবেদন সবকিছু রয়েছে।
তারপরও বিবাদীরা মতিহার থানা পুলিশ ও মতিহার থানার তালাইমারী অক্ট্রয়ের মোড় এলাকার মুসলেমের ছেলে কথিত সাংবাদিক মাসুদ রানা রাব্বানির সহায়তায় জোরপূর্বক জমি দখল করে প্রাচীর তুলেছে।
রাব্বানি ওই এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। কথিত সাংবাদিকতার আড়ালে মাদক ব্যবসা সহ সবকিছু করে আসছে। তারপরও পুলিশ অজ্ঞাত কারণে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না। মাসুদ বেশ কয়েকবার জেল খেটেছে। তার নামে কয়েকটি মামলাও রয়েছে। রাব্বানি বিবাদীদের পক্ষ নিয়ে জমি দখল করে দেওয়ায় কিছু জমি দখলও করেছে।
এর আগে নগরীর মতিহার থানায় দুটি অভিযোগ করা হয়। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানা থেকে কোন তদন্ত করা হয়নি।
জমি দখল হয়ে যাওয়ার কারণে গত ২৪ তারিখ আবার তারা জোরপূর্বক জমিতে গেলে তিনি তার ওয়ারিশদের নিয়ে মতিহার থানায় যান। থানায় গেলে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই তাজউদ্দিন তাদের জমি ছেড়ে দিতে বলে।
এ সময় কথিত সাংবাদিক রাব্বানি থানার মধ্যে প্রবেশ করে এস আই তাজউদ্দিনের সামনেই জমি ছেড়ে দিতে বলে। জমি না ছাড়লে তাদের মেরে নাশকতার মামলায় ঢুকিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। তারপর থেকে তারা ও তার অন্য ওয়ারিশরা ভীত হয়ে পড়েছেন। এমতবস্থায় পুলিশের পক্ষ থেকে এমন ব্যবহার আশা করা যায়না। জমির প্রকৃত মালিক হওয়া সত্বেও তারা জমিটি বুঝে পাচ্ছেননা। এ ব্যাপারে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এর কাছেও একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান আসাদ, মো. হেলালুদ্দিন ও রাব্বানি ইসলাম।
এ বিষয়ে রাব্বানির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলের, এই জমি আমি কিনে নিয়েছি। ক্রয় সূত্রে জমির মালিকানা আমার। জমিটি আমি দখল করিনি।
মতিহার থানার এসআই তাজউদ্দিন বলেন, বিষয়টি অনেক আগের। এর বেশি কিছু আমি জানি না।
মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মেহেদী হাসান রন্টু বলেন, থানায় অভিযোগের বিষয়ে আমি জানি না। তদন্ত হোক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে উপ-পুলিশ কমিশনার পূর্ব একেএম নাহিদুল ইসলাম বলেন, পুলিশ কমিশনার অফিসে অভিযোগ দিয়ে থাকলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর পুলিশ কারো পক্ষ নিয়ে কাজ করলে সেটিও তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে কোন ছাড় দেওয়া হবে না।
খবর২৪ ঘণ্টা/আর