নওগাঁ মহাদেবপুরে যৌতুকের জন্য নির্যাতিত ও স্বামীর বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়ে বাবার বাড়িতে প্রায় ১ বছর ধরে মানবেতর জীবন যাপন করছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাগরি কর্মকার (৩৫)।
সাগরি কর্মকারের পিতা মাংলা কর্মকার কয়েক বছর আগেই মারা গেছেন। পিতার বাড়িতে ছোট বোন শেফালীর সংসারে আশ্রিতা হয় সন্তান নিয়ে অর্ধাহার-অনাহারে দিন কাটছে সাগরির।
যৌতুকের জন্য স্বামীর নির্যাতনের ঘটনায় সাগরি নওগাঁর বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্রুনাল আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, মহাদেবপুর উপজেলার ফাজিলপুর গ্রামের মৃত মাংলা কর্মকারের মেয়ে কাজলী কর্মকার ওরফে সাগরির ২০০২ সালে মান্দা উপজেলার ঘোটকের গ্রামের বিশ্বনাথ কর্মকারের পুত্র কৃষ্ণ কর্মকারের সাথে সনাতন ধর্মের রীতি অনুযায়ী পারিবারিকভাব বিয়ে হয়।
বিয়ের পরে তাদের দুটি সন্তানও হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামী কৃষ্ণ কর্মকার যৌতুকের দাবীতে সাগরিকে নির্যাতন করতো। এর এক পর্যায়ে ২০২২ সালের ১৬ অক্টোবর সাগরিকে তার স্বামী বাবার বাড়ি থেকে ১ লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দিতে বলে। সাগরি এত অস্বীকৃতি জানাল তার স্বামী কৃষ্ণ কর্মকার তাকে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেদম প্রহার করে এবং হাত-পা বেঁধে গোপনাঙ্গে ঝালের গুড়া দেয়। এত সাগরির চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায়। চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দিলেও আর স্বামীর বাড়িতে ঠাই হয়নি সাগরির। স্বামীর বাড়িতে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করলেও তার স্বামী তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এ ঘটনার পর থেকেই সাগরি তার বাবার বাড়িত রয়েছেন। সাগরির ছোট বোন শেফালী কর্মকার বলেন, বাবার ছোট্ট একটি বাড়িতে তিনি স্বামী-সন্তান ও তার বৃদ্ধ মাকে নিয়ে বসবাস করেন। এর উপর স্বামীর বাড়ি থেকে নির্যাতিত হয়ে ফিরে আসা বোন সাগরি ও তার সন্তানের ভরণ-পোষণ তাদের কাছে মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যৌতুকের জন্য স্বামীর নির্যাতনের বিরুদ্ধে আদালত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়ের করা মামলার সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচার দাবী করেন নির্যাতিতা সাগরি কর্মকার।
বিএ/