শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার শেরপুরে কৃষি উন্নয়ন ফাউন্ডেশন (এমআরএ-সনদ-নং ০০২৯২/০০৬৭৯/২০০০/১৯৯০) এর শাখা অফিসের নামে একটি এনজিও সদস্যদের অর্ধ কোটি টাকার উপরে সঞ্চয় নিয়ে উধাও হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী সদস্যরা থানায় অভিযোগ দায়েরর প্রস্তুতি নিচ্ছে। সরেজমিনে পৌরশহরের বাসষ্ট্যান্ড আহলে হাদিস মসজিদের পশ্চিম পাশে কৃষি ফাউন্ডেশন নামের ওই শাখা অফিসে গিয়ে দেখা যায় অফিস বন্ধ রয়েছে। এ সময় প্রায়
অর্ধশতাধিক গ্রাহককে অফিসের বাইরের রাস্তার উপর হা হুতাশ করতে দেখা যায়। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েক সপ্তাহ আগে এলাকায় গিয়ে তাদেরকে ২৫০ টাকা দিয়ে সদস্য করে নেয়। পরে মাঠ কর্মি পরিচয় দেয়া ইমরান ও ম্যানেজার পরিচয় দেয়া শরিফ প্রতিটি এলাকায় একজনকে সভানেত্রী নির্বাচন করে তাদের মাধ্যমে সদস্য সংগ্রহ ও লোন নেয়ার জন্য উৎসাহ দেয়া হয়। যারা লোন নেবেন তাদেরকে লাখে ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় রাখতে হবে, যদি কেহ কম/বেশি নিতে চায় তবে
একই হারে সঞ্চয় জমা রাখতে হবে। এভাবে উপজেলার প্রায় সব কয়টি ইউনিয়ন থেকেই সদস্য সংগ্রহ করে। সকলকেই লোন দেয়ার কথা বলে অধিকাংশ সদস্যর নিকট থেকেই ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত সঞ্চয় জমা নেয়। এভাবে তারা অর্ধকোটি টাকার উপরে সঞ্চয় আদায় করে গতকাল ১৩ ডিসেম্বর বিকাল থেকেই তাদের ফোন বন্ধ করে রাখে। ১৪ ডিসেম্বর সোমবার সকালে সদস্যরা লোন উত্তোলন করতে এসে দেখে অফিস তালা দেয়া, লোকজন নেই, মোবাইল ফোন বন্ধ। এ কয়েকদিন
খোজাখুজি করে অফিসের লোকজনদের না পেয়ে সদস্যরা হতাশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের ভাদরা গ্রামের আজিকা ও শেফালি জানান, তাদেরকে সভানেত্রী করে ৩০ জন সদস্য ভর্তি করেন। এ সকল সদস্যদের ভর্তি বাবদ ৭৭৫০ টাকা জমা দেয়া হয়। এদের মধ্যে থেকে লোন নেয়ার জন্য শাহিন ৫ হাজার টাকা, আয়নাল ৫হাজার টাকা, ময়নাল ৫ হাজার টাকা, জুগল ৫হাজার টাকা, আজাহার ১০ হাজার টাকা, শফিকুল ৫ হাজার টাকা, মাহবুবার ১৫ হাজার টাকা, পাপুলার ১০ হাজার টাকা ও মজিদ ১৫ হাজার টাকা সঞ্চয় জমা দেয়। তাদেরকে আজ ১৪ ডিসেম্বর
লোন দেয়ার কথা ছিল। এভাবে উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের কাশিয়াবালা, জোড়গাছা, সাতাড়া, চকসাদি সহ বিভিন্ন গ্রাম থেকে একই কথা বলে প্রতিটি সদস্যর নিকট থেকেই ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত সঞ্চয় জমা নিয়েছে। সাতাড়া গ্রামের সাইদুল ইসলাম জানান, ২ বৎসর মেয়াদে ১লাখ টাকায় ১৫ হাজার টাকা লাভ দিতে হবে। যা ২৩ কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধ যোগ্য। এছাড়াও নানা প্রলোভন দেখিয়ে তাদের নিকট থেকে সঞ্চয় আদায় করা হয়েছে।
মাঠকর্মি পরিচয় দানকারি ইমরান হোসেনের মোবাইলে (০১৭৯৬-২৮৫১৯৮) বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করে বন্ধ পাওয়া যায়। এছাড়াও ম্যানেজার পরিচয় দানকারি শাহজাদপুরের শরিফ উদ্দিনের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। কৃষি উন্নয়ন ফাউন্ডেশন এর হেড অফিস হিসেবে পাশ বইয়ে দেখা যায়, হাজী মিজান আলী ম্যানশন, বানিজ্যিক এলাকা মতিঝিল ঢাকা-১০০০ (এম আর এ সনদ নং ০০২৯২/০০৬৭৯/২০০০/১৯৯০)। যা আদৌ সঠিক কিনা তা নিরুপন করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা সমবায় অফিসার আদুল জলিল জানান, এ নামে আমাদের অফিস থেকে কোন সংগঠনের রেজিষ্ট্রেশন নেই। তাই বিষয়টি তাদের জানার বাইরে। শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম জানান, এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
জেএন