জাহাঙ্গীর ইসলাম, শেরপুর (বগুড়া) থেকে: বগুড়ার শেরপুরের ছোনকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফেরদৌস জামান মুকুল ও প্রধান শিক্ষক এএসএম রশিদুল হাসানের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ সহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে ২২ জুলাই বুধবার দুর্নীতি দমন কমিশন বগুড়া কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন সচেতন এলাকাবাসী।
জানা যায়, উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের ছোনকা দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের অধীনে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। আর এসব সম্পত্তি ঢাকা-বগুড়া মহাসড়ক ও বাজার সংলগ্ন থাকায় স্কুলের জমি পজিশন বরাদ্দের নামে প্রায় ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ করছে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফেরদৌস জামান মুকুল ও প্রধান শিক্ষক রশিদুল হাসান। বিদ্যালয়ের অনুকুলে সম্পত্তি থেকে ৫০-৬০ টি পজিশন(দোকান, শো-রুম, হোটেল- রেস্তরা)সহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করার কাজে ব্যবসায়িক পক্ষদের কাছ থেকে বছরে প্রায় দেড় কোটি টাকা আসে। চলতি বছরে বিদ্যালয়ের সম্পত্তির অনেকাংশই ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কটি ৪ লেনের সম্প্রসারণ কাজে প্রায় ১ একর ৩ শতাংশ জমি অধিগ্রহন করা হয়েছে।
ঢাকা-রংপুর মহাসড়কটি ৪ লেনে উন্নীতকরণে সরকারিভাবে ওই বিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহনের অনুকুলে প্রায় ২কোটি টাকা মুল্য নির্ধারণ করে সড়ক উন্নয়নকল্পে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান(সাসেক)। আর এসব অর্থ বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজে ফান্ডে জমা না দেখিয়েই বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফেরদৌস জামান মুকুল ও প্রধান শিক্ষক এএসএম রশিদুল হাসান নিজেরাই আত্মসাৎ করেছে মর্মে এলাকাবাসীর মাঝে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও বিদ্যালয়ের অধীনে সম্পত্তি(ওয়াকফ্) হওয়ায় ১৯৮৬ সালের ম্যানেজিং কমিটির রেজুলেশনের ব্যবসার ক্ষেত্রে বরাদ্দকৃত পজিশন মালিকরা ওই সম্পত্তির উপরে স্থায়ীভাবে দ্বিতল ভবনও নির্মাণ করতে পারবেনা।
সেখানে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককে অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে স্থায়ীভাবে দ্বিতল-ত্রিতল ভবন নির্মাণ করছে পজিশন হোল্ডাররা। এছাড়াও বিদ্যালয়ের সম্পত্তি হস্তান্তর করে বসতবাড়ী নির্মাণ করার অভিযোগ রয়েছে বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে। ওই বিদ্যালয়ের সম্পদ রক্ষা ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে গত ২২ জুলাই বুধবার বগুড়া জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে বিদ্যালয়ের দাতা সদস্যসহ সচেতন এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে ওই প্রধান শিক্ষক এএসএম রশিদুল হাসান বলেন, বিদ্যালয়ের অনুকুলে অনেক সম্পত্তিই রয়েছে, তার মধ্যে ১ একর ৩ শতাংশ জমি মহাসড়কের ৪ লেনের কাজে সরকার অধিগ্রহন করেছেন। অধিগ্রহনকৃত সম্পত্তি সরকারিভাবে জমি হস্তান্তর মুল্যে ১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। তবে ওই সম্পত্তির অধিকাংশতেই মামলা থাকার কারণে সাসেকের দেয়া অর্থ অদ্যবধি হস্তান্তর করা হয়নি।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফেরদৌস জামান মুকুল বলেন, বিদ্যালয়ের সম্পত্তি নিয়ে কোন অনিময় বা দুর্নীতি নিয়ে দুদকে অভিযোগ দিয়েও লাভ করতে পারবেনা কুচক্রীমহল।
এ প্রসঙ্গে বগুড়া জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের ডেপুটি পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ওই বিদ্যালয়ের সম্পদ নিয়ে একটি অনিয়ম ও দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে, অনুমোদন হলেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
জেএন