শেরপুর(বগুড়া)প্রতিনিধি: নিজের বিয়ে করা বউ তাকে ছেড়ে চলে যাবে এমন ঘটনায় মনের দুঃখে ৫ জুন শুক্রবার বিকালে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে যুবক আব্দুল আহাদ(২৩)। পরে তার নানা শ^শুড়বাড়ীর লোকজন তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালে ২ দিন চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসার একদিন পর ৮ জুন দুপুরে হটাৎ করে পুনরায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে আনার পথে মারা যায় বলে তার পারিবারিক সুত্রে জানা যায়। মৃত যুবক আহাদ বগুড়ার শেরপুর উপজেলার পারভবানীপুর গ্রামের মৃত নশকর মোল্লার ছেলে। এঘটনায় মৃত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরণ করেছে থানা পুলিশ।
খোজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের ঝাঁজর গ্রামের লাবলু মিয়ার সাথে তালাকপ্রাপ্ত হয়ে ছোট মেয়ে লাজলী খাতুনকে নিয়ে মা গোলাপী খাতুন তার পিতার বাড়ীতে বসবাস করে আসছিল। মাথার উপরে কোন ছাতা না থাকায় লাজলীর নানা দুলু, বুলু ও পরিবারের সদস্যরা তাকে লালন পালন করে উপজেলার পারভবানীপুর গ্রামে বসবাসরত মৃত নশকর মোল্লার ছেলে আব্দুল আহাদের সাথে প্রায় ১১মাস পূর্বে বিয়ে দেয়। বিয়ের পর থেকে আহাদকে নেশা করতে লাজলী নিষেধ করলে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ হতো। এরফলে আহাদ ও তার মা-ভাই মিলে লাজলীকে নানা সময়ে নিযার্তন করে আসতো। এরপ্রেক্ষিতে লাজলী খাতুন নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে প্রায় দেড়মাস আগে তার নানার বাড়ীতে চলে যায়। এ নিয়ে গত ৫ জুন শুক্রবার পারভবানীপুর গ্রামে ছেলে আহাদের বাড়িতে উভয় পক্ষের মধ্যে এলাকার মাতব্বরগণ নিয়ে আপোশ মিমাংসা বৈঠক হয় বলে লাজলীর নানার পরিবার জানিয়েছেন।
এদিকে আহাদ তার পরিবারের লোকজনের গালিগালাজ সহ্য করতে না পেরে ওইদিন বিকালে পথিমধ্যে বিষপান করে ঝাঁজর গ্রামে তার নানা শ^শুড়বাড়ীতে গিয়ে চিৎকার দিয়ে পড়ে যায়। এতে স্ত্রীসহ নানা শ^শুড়ের পরিবারের সদস্যরা আহাদের মা-ভাইকে বিষয়টি জানিয়ে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক গত ৭ জুন রবিবার বিকালে আহাদ সুস্থ হলে ছাড়পত্র দিলে সে নিজবাড়ী পারভবানীপুর গ্রামে ফিরে আসে। পরদিন(৮জুন) সোমবার দুপুরে আহাদ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে সে মারা যায় বলে তার পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে।
এ ঘটনায় শেরপুর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক(এসআই) ফজলুল হক(ফজলু) ওইদিন বিকালেই আহাদের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে।
এ ব্যাপারে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হুয়ামুন কবীর বলেন, ৮ জুন সকালে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করে মৃত আহাদের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
খবর২৪ঘন্টা/নই