খবর২৪ঘন্টা ডেস্কঃ
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, জনগণের মনে এখন বড় ধরণের সংশয় হচ্ছে শেখ হাসিনাই নির্বাচন করবেন না। কারণ সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে তার বারোটা বাজবে। এই কারণেই তিনি একতরফা নির্বাচনেরই যোগাড়যন্ত্র করছেন। নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে নানা ধরণের নীল নকশা আঁটছেন।
আজ নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী আহমেদ বলেন, ইতিপূর্বে শেখ হাসিনার অধীনে কোন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি এবং হবেও না। তার অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। বিএনপি যে নির্বাচন করবে সেটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে। কারণ বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর অধীনে যত ভোট হয়েছে সব ভোট হয়েছে সন্ত্রাসমূখর, উৎসবমূখর নয়। ভোট ডাকাতি হয়েছে, জনগণকে ভোট দিতে দেয়া হয়নি। জনগণের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে আপনি দেশে অস্বাভাবিক পরিবেশ তৈরী করে রেখেছেন। একের পর এক কালা কানুন প্রণয়নের মাধ্যমে মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে আপনারা হানাদারি শাসন টিকিয়ে রাখতে চাচ্ছেন। আর এজন্যই একতরফা নির্বাচন করতে উঠেপড়ে লেগেছেন। সেজন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি করলেই প্রধানমন্ত্রীর চিত্তচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। কারণ চিরচেনা আওয়ামী সন্ত্রাসের আবহেই আগামী নির্বাচন করতে চান শেখ হাসিনা। কিন্ত আপনাদের সে আশা পূরণ হবে না।
তিনি বলেন, নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া দেশে কোন নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। নির্বাচনের আগে অবশ্যই সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাজা প্রত্যাহারসহ রাজবন্দীদের মুক্তি দিতে হবে। রাজনৈতিক সকল মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। অবশ্যই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা দাবি সরকারকে মানতে হবে।
রিজভী আহমেদ বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ্ উদ্দিন আহমেদকে গতকাল ভারতের শিলং-এর আদালত বেকসুর খালাস দিয়েছেন। এই রায়ে ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা সম্পর্কে আমাদের শ্রদ্ধা আরও বৃদ্ধি পেলো। আমি ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ আইনী প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য। আমরা আশা করবো যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেয়া হবে। এ বিজয় এদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের বিজয়।
তিনি বলেন, অনলাইন এ্যাক্টিভিষ্ট রাজন ব্যাপারী কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তিলাভের পর হদিস পাচ্ছে না তার পরিবার। গতকাল বিকেলে কারাগার থেকে বের হলে র্যাব জেলগেট থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায়। কেইলিং মার্মা নামে র্যাব-১০ এর একজন কর্মকর্তা জেলগেট থেকে লিখিত দিয়ে রাজনকে তুলে নিয়ে আসে। কিন্তু তারপর থেকে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করছে র্যাব। এটি আতঙ্কজনক, অশুভ কোন উদ্দেশ্যেই তাকে জেলগেট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। র্যাবের হেফাজতেই রাজন আছে, কিন্তু এখনও তা স্বীকার করা হচ্ছে না। রাজনের পরিবার উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার মধ্যে দিন যাপন করছে। আমি রাজনের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং অবিলম্বে তাকে জনসমক্ষে হাজির করে তার মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি। এসময় তিনি গত দুই দিনে সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের তথ্য তুলে ধরেন।
ব্রিফিংয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তৈমুর আলম খন্দকার, সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বিএম মোশাররফ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, দপ্তর সহ সম্পাদক মুনির হোসেন, যুব বিষয়ক সহ সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
খবর২৪ঘন্টা / সিহাব