নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের লালপুরে সরকারী ভাবে বরাদ্দকৃত ভিজিএফ কার্ড ভাগাভাগি নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আব্দুর রাজ্জাক এবং কদিমচিলান ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম রেজা মাষ্টারের দ্বন্দ্বের জেরে চেয়ারম্যানকে পিটিয়ে ও চেয়ারের আঘাতে নাক ফাটিয়ে দিয়েছে স্থানীয় সাংসদ সমর্থক ছাত্রলীগ কর্মীরা। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) ৬ টার দিকে উপজেলার গোপালপুর বাজারে এই ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে ভিজিএফ কার্ডের তালিকা জমা দিতে উপজেলা পিআইও অফিসে যান চেয়ারম্যান সেলিম রেজা। পিআইও আব্দুর রাজ্জাক দলীয় ভাগের কার্ড গুলি স্থানীয় এমপি সমর্থিত ব্যক্তিদের সাথে সমন্বয় করে তালিকা জমা দেওয়ার জন্য বলেন অন্যথায় তালিকা নেয়া যাবে না বলে জানান। চেয়ারম্যান জানান, স্থানীয় ইউপি ও ওয়ার্ড নের্তৃবৃন্দের মাঝ থেকে দলীয় কার্ডের তালিকা নেয়া হয়েছে। তখন পিআইও বলেন, দলীয়
বুঝি না। এমপি কর্তৃক মনোনীত ব্যক্তিদের মাধ্যমে দলীয় কার্ডের তালিকা দিতে হবে। এভাবে কথাকাটির এক পর্যায়ে দু’জনে উত্তেজিত হয়ে হাতাহাতির পর্যায়ে গেলে ঘটনাস্থলে উপস্থিতরা দু’জনকে নিয়ন্ত্রনে আনেন। কিছুক্ষনের মধ্যে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়
নাটোর-১(লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের সমর্থক ছাত্রলীগ কর্মী স্বপন, দেলোয়ার, সজল সহ কয়েকজন। তারা চেয়ারম্যানকে খোঁজ করতে
থাকে ও এমপি’র নির্দেশ অমান্য করায় হুমকি দিতে থাকে। এক পর্যায়ে ৬ টার দিকে সেলিম রেজা চেয়ারম্যান উপজেলা থেকে বের হয়ে বাড়ি ফেরার পথে তার পিছু নেয়া ছাত্রলীগ কর্মী স্বপন, দেলোয়ার, সজল সহ কয়েকজন গোপালপুর বাজারে তার পথরোধ করে চেয়ারম্যানের উপর হামলা চালায়। এতে সেলিম চেয়ারম্যান গুরুতর আহত হন ও চেয়ারের আঘাতে তার নাক ফেটে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গোপালপুর ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। সেখান থেকে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। গুরুতর আহত হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দলীয় কোন্দল এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে এখন আর মান সম্মান নিয়ে রাজনীতি করা সম্ভব না। দলীয় কার্ডগুলো এতদিন ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারা তালিকা করতেন অথচ স্থানীয় এমপি অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের গুরুত্ব দেওয়ায় কার্ডের তালিকা প্রস্তুতে দলীয় নেতাকর্মীরা বিভ্রান্তিতে পড়েছেন। যার ফলশ্রুতিতে সেলিম চেয়ারম্যানকে মার খেতে হলো।
এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান সেলিম রেজা মাস্টার জানান, আমার সাথে কথাকাটি হলো পিআইও কর্মকর্তার অথচ আমাকে লাঞ্ছিত করলো এমপি সমর্থক ছাত্রলীগ কর্মীরা। যা খুবই হতাশাজনক, আমি এর বিচার চাই।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, আমার সাথে চেয়ারম্যানের কিছুটা কথা কাটাকাটি হয়েছে। পরবর্তীতে তিনি বিদায় নিয়ে চলে যান, পথিমধ্যে কি ঘটেছে আমার জানা নাই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মুল বানীন দ্যুতি জানান, পিআইও ও চেয়ারম্যানের মধ্যকার বিবাদের বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষনিক তাদের বিবাদ মিটিয়ে নিয়মমাফিক কাজ করার পরামর্শ দিয়েছি। পরবর্তীতে শুনলাম চেয়ারম্যানকে পথিমধ্যে মারধর করা হয়েছে। কে বা কারা মেরেছে আমার জানা নেই, তবে বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জুয়েল জানান, আমি ঘটনাটি শুনেছি, কিন্তু এখনো পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ দায়ের করেননি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল এমপি এ বিষয়ে বলেন, চেয়ারম্যান সেলিম রেজা মাস্টারে উপর হামলার কথা তিনি শুনেছেন তবে কি কারণে এ হামলা হয়েছে তা জানেন না তিনি।খবর২৪ঘণ্টা, জেএন