নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের জিম্মি করে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত তারা হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ঢোকার মেইন গেট ও ওয়ার্ডে প্রবেশ করার গেটে তালা লাগিয়ে অবস্থান। এতে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা ব্যাপক ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। এ নিয়ে রোগীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার সকাল ১০টার দিকে হঠাৎ করে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা জরুরী বিভাগে গিয়ে দুটি গেট বন্ধ করে সেখানে বসে অবস্থান শুরু করে। তারপর ওই গেইট দিয়ে কেউ ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। এ সময় তারা তাদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানায়। গেট বন্ধ থাকার কারণে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা ভেতরে ঢুকতে না পেরে হয়রানির মধ্যে পড়েন।
হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশের জন্য দুই জন রোগী অপেক্ষা করছে।
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার শুকদেবপুর থেকে মেয়ে কারিমা (৪০) কে চিকিৎসা করাতে আসা বৃদ্ধ আকবর জানান, তার মেয়ের পেটে ব্যথা করছিল। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি হাসপাতালে আসেন। কিন্ত গেইট বন্ধ থাকার কারণে ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি। তিনি বলেন, চিকিৎসকদের কাজ রোগী জিম্মি করা নয়। রোগী জিম্মি করে দাবি আদায় করা কতটা ঠিক।
শাহিন নামের আরে রোগী বলেন, আমি প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চিকিৎসা করার জন্য বসে আছি। কিন্ত ভেতরে ঢুকতে পারেনি। অনেক রোগীই ভেতরে প্রবেশ করতে না পেরে ব্যাপক হয়রানির মধ্যে পড়েন।
আন্দোলনরত ইন্টার্ন চিকিৎসকরা জানান, তাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের পর আবার মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেই মামলা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তারা নিয়মিত এই কর্মসূচী চালিয়ে যাবেন।
দুপুর ১টার দিকে হাসপাতালে যান রাজশাহী মহানগর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার। তিনি সেখানে গিয়ে ইন্টার্নদের গেইট খুলে দিতে বলেন। তাঁর কথায় তারা গেইট খুলে দিয়ে হাসপাতালের পরিচালকের কাছে যান। হাসপাতাল পরিচালক ও ডাবলু সরকারের আশ^াসে তারা কাজে যোগ দেন। সকাল থেকে হাসপাতালে অতিরিক্ত পুলিশ অবস্থান নেয়।
গেইটে তালা দিয়ে এভাবেই বসে আছে ——-উল্লেখ্য,
গত ১৪ ফেব্রæয়ারী রাবির আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এনামুল জহিরকে নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে নির্যাতনের অভিযোগ এনে মারধর করে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। মারধরের সংবাদটি খবর২৪ ঘণ্টাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-১ এর বিচারক কুদরাত ই খুদা স্ব প্রণোদিত হয়ে পিটিশন মামলা করেন। তারপর একজন আইনজীবী আটজন ইন্টার্ন চিকিৎসককে আসামী করে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার পরে হাসপাতালের পক্ষ থেকেও একটি মামলা দায়ের করা হয়। এরপর সমঝোতার ভিত্তিতে দুই পক্ষের মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়। কয়েকদিন পরে আবার আরেকটি মামলা দায়ের করা হয় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে। সেই মামলা দায়েরর পর থেকে তা প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে তারা।
এ বিষয়ে নগর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেন, বিষয়টি সমঝোতা করা হয়েছে। এ বিষয় নিয়ে তারা আর কোন কর্মসূচী করবে না।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে