নজরুল ইসলাম জুলু : রাজশাহীতে দরপত্র ছাড়াই নগর ভবন সংস্কার করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান চালিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) বেলা ১২ টার দিকে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত কার্যালয় রাজশাহীর সহকারী পরিচালক মো. আমির হোসাইন এর নেতৃত্বে এই অভিযান চালানো হয়েছে। এসময় উপস্থিত ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত কার্যালয় রাজশাহীর সহকারী পরিচালক মো. তানভীর আহমেদ সিদ্দীক, উপসহকারী পরিচালক মো. মাহবুবুর রহমান।
এসময় রাসিকের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমের ফাইলসহ বিভিন্ন কাগজপত্র তল্লাশি করা হয়। বিশেষ করে সম্প্রতি টেন্ডার ছাড়ায় রাসিক ভবন সংস্কার কিভাবে হচ্ছে সেটি অনুসন্ধান করা হয়। এই অভিযানে তিনটি ফাইল জব্দ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এর মধ্যে ঠিকাদার ইয়াহিয়া মিলুর একটি ফাইল রয়েছে। অভিযান পরিচালনা করতে আসা দুদক কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিকভাবে ফাইল গুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায় যারা কাজ পেয়েছেন তাদের দর প্রায় কাছাকাছি। দুদক কর্তৃপক্ষ বলছে ঠিকাদার মারফত তারা জানতে পেরেছেন রাসিকে বর্তমানে ৭টি কাজ চলমান রয়েছে কিন্তু রাসিকের পক্ষ থেকে ৩টি কাজের ফাইল প্রদান করা হয়েছে। বাকি ৪টি কাজের ফাইল এখনো সরবরাহ করতে পারেনি রাসিক কর্তৃপক্ষ। দুদক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন ৪টি কাজের অর্ধেকাংশ সম্পন্ন হলেও এখনো সেগুলোর কোনো কাগজ তৈরি করা হয়নি। দুদক কর্মকর্তারা জানান পিপিআর, পিপিএ অনুযায়ী কাজ প্রদানের বিধান রয়েছে। ফাইল গুলো পূঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই-বাছাই না করা হলেও প্রাথমিক পর্যালোচনায় তাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে যে এক্ষেত্রে পিপিআর, পিপিএ অনুযায়ী কাজ প্রদান করা হয় নি। কাজ প্রদানের ক্ষেত্রে আরএফকিউ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে আরএফকিউ পদ্ধতি অনুসরণ করে টেন্ডার প্রদানের বিধান থাকলেও সেক্ষেত্রে যথাযথ প্রতিযোগিতা থাকতে হবে। কিন্তু, প্রাথমিক পর্যালোচনায় কাজ প্রদানের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা হয়নি বলে তারা মনে করছেন। সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ৫ আগস্টের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি নির্ণয়ে গঠিত কমিটির প্রতিবেদনে নগর ভবন ও এর বাইরের সিটি কর্পোরেশনের স্থাপনাগুলোতে ২১ কোটি ১১ লাখ ৬৫ হাজার টাকার ক্ষতি হয়।
এছাড়াও ‘রাজশাহী মহানগরীর সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক সিটি করপোরেশনের প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প চলমান। ওই প্রকল্পের ভেতর উপপ্রকল্প করে নগর ভবন সংস্কারকাজের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে মন্ত্রণালয় তা নাকচ করে জানিয়ে দিয়েছে, সংস্কার করতে হবে নিজস্ব অর্থেই। মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাওয়ার পর সম্প্রতি নগর ভবনের সংস্কারকাজ শুরু করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান প্রকৌশলী আহমদ আল মঈন বলেন, ‘সিটি করপোরেশন নিজস্ব অর্থায়নে সংস্কার কাজগুলো করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ২০০৮ সালের পিপিআর মেনেই কাজ করা হচ্ছে।’
দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত কার্যালয় রাজশাহীর সহকারী পরিচালক মো. আমির হোসাইন জানান, দরপত্র ও কোটেশন ছাড়াই সংস্কার কাজ হওয়ায় অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। ৩টি ফাইল জব্দ করা হয়েছে। এইগুলো যাচাই-বাছাই শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিএ..