নিজস্ব প্রতিবেদক: সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে রাজশাহীতেও বিএনপির পাশে নেই শরিক দল জামায়াত। কেন্দ্র থেকে বুলবুলকে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী ঘোষণা করা হলেও স্থানীয় জামায়াত বলছে, বিএনপি আমাদের ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সমর্থন দেয়নি।
আমরাও স্থানীয়ভাবে বুলবুলকে আমাদের সমর্থন জানাইনি। সে জন্য আমরা মাঠেও নামিনি। ফলে বিএনপি প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের আশপাশে জামায়াতের কোনো নেতাকর্মীকে দেখা যাচ্ছে না। তবে বুলবুলের দাবি, পুলিশের ভয়েই তারা নির্বাচনী প্রচারে আসছেন না।
রাজশাহী সিটি নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসার একেবারেই শেষ মুহূর্তে রাজশাহীতে দলীয় মেয়র প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে বিএনপি। কিন্তু অনেক আগেই এখানে প্রার্থী ঘোষণা করে জামায়াত। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন হারানো স্বাধীনতাবিরোধী এই দলটি তাদের মহানগর কমিটির সেক্রেটারি সিদ্দিক হোসেনকে মেয়র প্রার্থী ঘোষণা করে। তার নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিয়ে দলের নেতারা বৈঠকে বসলে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। গ্রেপ্তার হন দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ও রাজশাহী মহানগর সেক্রেটারি সিদ্দিক হোসেনসহ ১২ নেতা। সেই থেকে সিদ্দিক হোসেন কারাগারে থাকলেও থেমে থাকেনি নির্বাচনের
প্রস্তুতি। কিন্তু কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে শেষ পর্যন্ত সিদ্দিকের মনোনয়নপত্রই তোলা হয়নি।
জামায়াতের স্থানীয় নেতারা জানান, রাসিক নির্বাচনে তাদের মেয়র পদের প্রার্থিতা থেকে সরে আসার কারণ বুলবুলকে সমর্থন দেওয়া। এর বিনিময়ে তারা বিএনপির কাছে জামায়াতের কাউন্সিলর প্রার্থীদের সমর্থন দেওয়া দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তাদের আশা ছিল, যেসব ওয়ার্ডে জামায়াতের কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছে, সেসব ওয়ার্ড থেকে মনোনয়পত্র প্রত্যাহার করে নেবেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা।
জামায়াত নেতারা নগরীর সাধারণ ও সংরক্ষিত মিলিয়ে মোট ৩০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৬টিতে কাউন্সিলর প্রার্থী দিয়েছে। এর মধ্যে সাধারণ ওয়ার্ডে ১৪ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে দুজন প্রার্থী দিয়েছে জামায়াত। দাবি ছিল, তাদের সবাইকে সমর্থন দিতে হবে বিএনপিকে। কিন্তু তা হয়নি। এ নিয়ে অভিমান করেছেন জামায়াতের তৃণমূলের কর্মীরা। তারা কোনোভাবেই বিএনপি প্রার্থী বুলবুলের জন্য মাঠে নামতে চাইছেন না।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর জামায়াতের আমির আবু ইউসুফ সেলিম বলেন, শহরের ৩০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৪টিতে আমাদের ১৪ জন নেতা কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন। এছাড়া সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে প্রার্থী রয়েছেন দুজন। এসব ওয়ার্ডে বিএনপির প্রার্থীরা আমাদের ছাড় দেয়নি। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড জামায়াতের নেতাকর্মীদের অভিমান হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
অধিকাংশ ওয়ার্ডেই তিনজন পর্যন্ত বিএনপি নেতা প্রার্থী হয়েছেন। দুজনের নিচে কোথাও নেই। বিএনপি তাদের বুঝিয়ে একক দলীয় প্রার্থী পর্যন্ত করতে পারেনি। সেখানে সব প্রার্থীকে বসিয়ে জামায়াতকে সমর্থন দিবে কীভাবে? নিজেদের প্রার্থী নিয়েই বিএনপি বেকায়দায় আছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, জামায়াতের নেতারা গ্রেপ্তারের ভয়ে গণসংযোগে আসছেন না। পরিস্থিতি ভালো হলে হয়তো আসবেন। কারণ, তারা আমাদের শরিক দল।
বুলবুলের পক্ষে কবে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে মহানগর জামায়াতের আমির আবু ইউসুফ সেলিম বলেন, সেটা সময় হলেই জানতে পারবেন।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/জেএন