নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নির্বিঘ্নে ভোটারগণ উপস্থিত হয়ে ভোট প্রদান করতে পারেন সেই নিশ্চয়তার জন্য ভোটের দিনের সাতদিন পূর্বে সেনা মোতায়েন করার দাবী জানান ২০ দলীয় জোট প্রার্থী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর লক্ষিপুর মোড় হতে গণসংযোগের সময় সাংবাদিকদের সাথে সাক্ষাতকালে তিনি এই দাবী জানান। বুলবুল বলেন, সাধারণ ভোটাদের আওয়ামী লীগের ক্যাডার বাহিনী ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। মাইকিং করতে বাধা প্রদান করছে। নির্বাচনী প্রচারণায় কর্মীদের বাধা এবং গালিগালাজ করছে। এই অবস্থায় সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতংকের সৃষ্টি হয়েছে। শুধু আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরাই নয় অতি উৎসাহী কিছু পুলিশ বাহিনীর সদস্যরাও তাদের সঙ্গে একাত্বতা ঘোষনা করে বিএনপি’র সকল কাজে বাধা প্রদান করছে।
এই অবস্থা চলতে থাকলে নির্বাচনের দিন কি হবে তা সকলেই বুঝতে পারছে। সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী কালো টাকা ছড়াচ্ছে। তিনি বলেন, কালো টাকা যতই ছড়াক না কেন নির্বাচনে ধানের শীষের ভোটের কোন ক্ষতি করতে পারবেনা। বর্তমান সরকারের লাগামহীন দুর্নীতি, নির্যাতন, খুন, গুম ও দ্রব্য মূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতি হওয়ায় রাজশাহীর জনগণ বর্তমান সরকারের প্রতি অনাস্থা এনেছে। এই অবস্থা দেখে সরকার দলীয় প্রার্থীর মাথা খারাপ হয়ে গেছে। হতাশাগ্রস্থ হওয়ায় এখন ধানের শীষের প্রচারনায় বোমা নিক্ষেপ করছে। নির্বাচন একতরফা করার জন্য নীলনক্সা আঁকছে। জীবন দিয়েও হলেও এই নীলনক্সা বিএনপি’র নেতাকর্মীরা বাস্তবায়ন করতে দেবেনা। সরকার দলীয় প্রার্থী শহরের যত নামকরা ও দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী আছে তাদের নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করছেন। তাদের নিকট হতে চাঁদা নিয়ে নির্বাচনী কাজে ব্যবহার করছে। বুলবুল আরো বলেন, মেয়র থাকা কালীন সময়ে এবং সর্বদা তিনি মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছেন অথচ সরকার দলীয় প্রার্থী তাদের মদদ দিচ্ছে এবং উৎসাহ প্রদান করছে। সরকার দলীয় প্রার্থী বিজয়ী হলে মাদক ব্যবসায়ীরা পুণরায় মাথাচাঁড়া দিয়ে উঠবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরো বলেন, রাজশাহীর একটি পরিবার সকল প্রকার দুর্নীতি করে টাকার পাহাড় গড়ে তুলছে। গার্মেন্টস করা এবং চাকরী দেওয়ার নামে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছে। তাদের মদদে অন্যান্য আওয়ামী লীগের শীর্ষ স্থানীয় নেতারা একই ভাবে জমি জবর দখল ও দুর্নীতি করে হিসাব ছাড়া সম্পদের মালিক হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। মুখে উন্নয়নের বুলি আর ভিতরে ভূমি দখল, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি করে ফুটপাত থেকে রাজা হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি এই সকল দলের মিষ্টি কথায় না ভূলে রাজশাহীর উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করতে ধানের শীষে ভোট প্রার্থনা করেন । সেইসাথে নির্বাচনের পরে রাজশাহী থেকে বেগম জিয়ার মুক্তি ও এই অবৈধ সরকারের পতনের আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ারী দেন তিনি।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ তৈরী করতে সরকারকেই পদক্ষেপ গ্রহন করতে। বাংলাদেশে নির্বাচনের কোন পরিবেশ নাই। সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন সরকারে এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এই নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে কোন নির্বাচন ষুষ্ঠুৃ ও অবাধ হবেনা বলে তিনি জানান। তিনি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে আগামী সংসদ নির্বাচনের দাবী জানান। সেইসাথে তিন সিটি নির্বাচনে নির্বচিন কমিশন ও পুলিশ বিভাগের সদস্যদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার আহবান জানান তিনি। এর ব্যত্ত¡য় ঘটলে সরকারকেই এর দায়বার বহন করতে হবে জানান তিনি।
মিজানুর রহমান মিনু বলেন, যতই বাধা আসুক না কেন ধানের প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত। ধানের শীষের গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এই জোয়ারে নৌকা ভেসে যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি সব ধরনের ভয়ভীতির উর্ধ্বে থেকে নগরীর উন্নয়ওেনর স্বার্থে ধানের শীষে ভোট প্রদান করে পুনরায় মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে বিজয়ী করার আহবান জানান তিনি।
এসময়ে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপি চেয়ারপার্সনের অন্যতম উপদেষ্টা, সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য জননেতা মিজানুর রহমান মিনু, পুঠিয়া দূর্গাপুরের সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট নাদিম মোস্তাফা, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির রাজশাহী বিবাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিন শওকত, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রান ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, রাজপাড়া থানা বিএনপি’র সভাপতি শওকত আলী, সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন, ৬নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি গোলাম নবী গোলাপ, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিন্টু,
৫নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি জাহিদ হাসান লিটন, ৩নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি ওয়াজির আলী, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস আলী, ৮নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সহ-সভাপতি সাঈদ হোসেন, ১নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক শামীম রেজা,মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি ওয়ালিউল হক রানা, বর্তমান সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট, জেরা যুবদলের সভাপতি মোজাদ্দেদ জামানী সুমন, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম সুমন, মহানগর যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বাবলু, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান জনি, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রবি সহ অত্র ওয়ার্ড গুলোর বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সহশ্রাধিক সমর্থক উপস্থিত ছিলেন। এলাকার ভোটারগণ ধানের শীষে ভোট দিয়ে বেগম জিয়ার মুক্তির আন্দোলনের সক্রিয় ভূমিকা রাখবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।