নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগ ও বহির্বিভাগের সামনে থেকে লাশবাহী ও রোগীবাহী মাইক্রো স্ট্যান্ড উচ্ছেদে রোগীর স্বজনদের মধ্যে স্বস্তি এসেছে। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজন ছাড়াও স্থানীয়রা বিষয়টিকে ভাল কাজ হিসেবে দেখছেন। কারণ হাসপাতালের সামনে থেকে মাইক্রোবাস উচ্ছেদ করা রাজশাহীবাসীর দীর্ঘদিনের চাওয়া ছিল। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা ব্যাপক সমস্যার মধ্যে পড়েন। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে লাশবাহী ও রোগীবাহী গাড়ির চালকরা তিন থেকে চারগুণ ভাড়া আদায় করে রোগীদের কাছ থেকে। এ নিয়ে রোগীদের যেন ক্ষোভের শেষ নেই। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা প্রত্যেকটা রোগীই এদের কাছে হয়রানির শিকার হয়। চালকরা বিশাল সিণ্ডিকেট গড়ে তুলে বেশি অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল। হাসপাতালের ওয়ার্ডে কোন রোগী মরলেই তারা খবর পেয়ে যায়। আর তারপর থেকেই শুরু হয় তাদের দৌরাত্ম্য। কোন রোগী ইচ্ছে করলেই নিজের গাড়ী বা অন্য গাড়ীতে যেতে পারতোনা।
সিণ্ডিকেট গাড়ীতেই যেতে হতো। আর একান্তই কেউ নিজের গাড়ী বা অন্য গাড়ীতে যেতে চাইলে মাইক্রো সিণ্ডিকেট কে চাঁদা দিয়েই যেতে হতো। এর ব্যতিক্রম কেউ করলে তাকে হুমকি দেওয়া হতো এমনকি মারধরও করা হতো। এভাবেই চলতো হাসপাতাল মাইক্রোবাস সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য। অজ্ঞাত কারণে প্রশাসনও কোন ব্যবস্থা নিত না। প্রশাসন ব্যবস্থা না নেওয়ার কারনে তাদের দৌরাত্ম্য আরো বেড়ে যায়। সম্প্রতি খবর ২৪ ঘণ্টা ও নতুন প্রভাতসহ বেশ কয়েকটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেই সংবাদের ভিত্তিতেই প্রশাসনের টনক পড়ে। গত মঙ্গলবার আরএমপি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে মাইক্রো স্ট্যান্ড উঠিয়ে দেয় রাজপাড়া থানা পুলিশ। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এই স্ট্যান্ড স্থায়ীভাবে উঠানো হয়েছে। বুধবারও পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুবর রহমান পিপিএম জোর গলায় বলেছেন মাইক্রো স্ট্যান্ড স্থায়ীভাবে উঠানো হয়েছে। আর বসতে দেওয়া হবে না।
বুধবার দুপুরে সরজমিনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, জরুরী বিভাগ ও বহির্বিভাগের সামনের রাস্তায় কোন গাড়ী নেই। তবে চালক সিন্ডিকেটের দালালরা তাদের কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছেন। ভাড়াও নিচ্ছে আগের মতো। শুধু তারা গাড়ীটি দুরে রেখেছে। গাড়ী দুরে রাখা ছাড়া হাসপাতালের সি-িকেটে কোন পরিবর্তন হয়নি। ভাড়া বেশি নিতেও দেখা যায় তাদের।
এদিকে, হাসপাতালের জরুরী বিভাগে গাড়ী না থাকায় রোগীর স্বজন ও স্থানীয়দের মধ্যে স্বস্তি বিরাজ করছে। সলিম নামের এক ব্যক্তি বলেন, হাসপাতালের মধ্যে গাড়ী নেই এটা ভাল একটা উদ্যোগ। যাতে ভবিষ্যতে তারা আর সি-িকেট তৈরি করতে না পারে সেই ব্যাপারে পুলিশ কমিশনার স্যার যেন সরাসরি হস্তক্ষেপ করেন। আরেক রোগী বলেন, এটা না থাকায় অনেক লাগছে। এর
আগে রোগী নিয়ে বের হলে দালালরা টানাটানি করতো। এই পরিবেশ বেশ ভাল লাগছে। স্থায়ী হওয়ার ব্যাপারে প্রশাসনের নজরদারি জরুরী। অন্য আরেক রোগী বলেন, জরুরী বিভাগে গাড়ী না থাকলেও দালালরা ঠিকই অবস্থান করে। এ ছাড়া তারা হাসপাতালের ওয়ার্ডেও থাকে। ভেতরে তারা যাতে প্রবেশ করতে না পারে সেই ব্যাপারে হাসপাতাল প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে