1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
রামেক হাসপাতালের রোগী ভাগিয়ে নিচ্ছে ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালরা - খবর ২৪ ঘণ্টা
মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:২৪ অপরাহ্ন

রামেক হাসপাতালের রোগী ভাগিয়ে নিচ্ছে ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালরা

  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১৪ আগস্ট, ২০১৮
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগ।

নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ সরকারী অন্য হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ভাল চিকিৎসার প্রলোভন দেখিয়ে ভাগিয়ে নিচ্ছেন বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালরা। এতে করে দালালের খপ্পরে পড়ে প্রতিনিয়ত শহরের বাইরে থেকে আসা রোগীরা প্রতারিত হয়ে সর্বস্ব হারিয়ে বাড়ি ফিরছেন। দালালের কাছে সর্বস্ব হারানো রোগীদের তালিকাও দীর্ঘ হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রামেক হাসপাতালকে কেন্দ্র করে নগরীর লক্ষীপুর এলাকায় প্রায় শতাধিক ক্লিনিকসহ ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। এতগুলো প্রতিষ্ঠানের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো দালাল নির্ভর। দালালের উপর উপর ভিত্তি করেই এসব প্রতিষ্ঠান চলছে। কোন বাধা-বিপত্তি ছাড়াই দালালরা সরকারী হাসপাতালের রোগী ভাগিয়ে নিয়ে নিজের পছন্দের ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যাচ্ছে। রামেক হাসপাতালকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এসব প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশগুলোতে শুধু আল্ট্রাসনোগ্রাম, এক্সরে ও রক্তের বিভিন্ন টেস্ট করা হয়। এ ছাড়া অন্য কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় না। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রোগী ভাগিয়ে নেওয়ার কাজ করে দালালরা। সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় হাসপাতাল বহির্বিভাগের কার্যক্রম। বহির্বিভাগের কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগেই দালালরা চিকিৎসকের চেম্বারে সামনে ওৎ পেতে থাকে। কোন রোগী চিকিৎসকের চেম্বার থেকে বের হওয়া মাত্র দালালরা ভাল চিকিৎসার নাম করে বাইরের প্রতিষ্ঠানে ভাগিয়ে নিয়ে চলে যায়।

এরপর রোগীকে তারা প্রয়োজনীয় ও অপ্রয়োজনীয় অসংখ্য টেস্ট করিয়ে টাকা আদায় করে। কেউ টাকা দিতে অপারগ হলে তাকে কোন রিপোর্ট দেওয়া হয়না বলেও রোগীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ রয়েছে। সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত রামেক হাসপাতালের বহির্বিভাগের বিভিন্ন চিকিৎসকের চেম্বার, প্যাথলজি, টিকিট কাউন্টার, রেডিওলজি বিভাগের সামনে অবস্থান নেয় দালালরা। অনেক সময় চিকিৎসকরা রোগীদের হাসপাতালের মধ্যের প্যাথলজিতে টেস্ট করাতে দিলেও দালালরা ভেতরে এ টেস্ট হবেনা বলে বাইরে নিয়ে চলে যায়। অথচ হাসপাতালের প্রত্যেকটা পয়েন্টে আনসার সদস্য মোতায়েন রয়েছে। শুধু তাই নয় বহির্বিভাগে পুলিশ সদস্যের সামনেও এমন ঘটনা ঘটে। তারপরও পুলিশ দেখেও না দেখার ভান করে বলে অভিযোগ রয়েছে। বর্তমান সময়ে দালালরা প্রকাশ্যে রোগী ভাগানোর কাজ করলেও পুলিশ-আনসার সদস্যদের তেমন দৃশ্যমান তৎপরতা দেখা যায় না। সরজমিনে হাসপাতালে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তেমন তৎপরতা না থাকায় দালালরা নির্বিঘেœ রোগী ভাগিয়ে নিয়ে গিয়েও পার পেয়ে যাচ্ছে।

গত ১০/১২ দিন আগে হাসপাতালের আউটডোরে রোগী ধরা দালালরা বাইরে থেকে চিকিৎসা নিতে আসা এক নারী রোগীর স্বামীকে মারধরের চেষ্টা করে। তারা কয়েক মিনিট ধরে এমন মারমুখী আচরল করলেও সেখানে কোন পুলিশ সদস্য বা আনসার সদস্যদের দেখা যায়নি। আবার দেখা যায় দালালরা অবস্থান করা নিয়ে নিজেদের মধ্যে ঝগড়া বাধিয়ে দেয়। তারা দীর্ঘ সময় ঝগড়া করলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোন তৎপরতা চোখে পড়েনি। এভাবেই হাসপাতালের আউটডোরে বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের দালালরা অবস্থান করে। তারা চাকুরির ডিউটির মতো সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অবস্থান করলেও পুলিশের হাতে আটক হয়না। তবে রোগীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালে নতুন কোন দালাল প্রবেশ করলে সে তাৎক্ষণাৎ আটক হয়ে যায়। এদিকে, আউটডোর চলাকালীন ও বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ইনডোরে শুরু হয় দালালদের তৎপরতা। দালালরা সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের বাইরের ডায়াগনস্টিক ও ক্লিনিকে নিয়ে চলে যায়। বাইরের প্রতিষ্ঠানে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করিয়ে অনেক টেস্ট দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। আর এসবের কারণে হাসপাতালপাড়ায় গড়ে উঠেছে দালাল সিন্ডিকেট। বাইরের কোন রোগী দালালদের সাথে যেতে না চাইলেও অনেক সময় জোর করে নিয়ে যাওয়া হয়। দালাল সিন্ডিকেটের সদস্যরা বাইরে থেকে আসা রোগীদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে এ কাজ করতে বাধ্য করায়।

কেউ যদি দালালদের প্রতিবাদ করে তাহলে দালালরা উল্টো রোগীর লোককে হুমকি দেয়। হাসপাতালের জরুরী বিভাগে সার্বক্ষনিক একজন পুলিশ কনস্টেবল ডিউটি করলেও তার সক্রিয় কোন ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়না। তার সামনে দিয়েই রোগী ভাগিয়ে নিলেও কোন বাধার মুখে পড়েন না দালাললা। ইনডোরে খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী ও তাদের স্বজনদের সাথে বেসরকারী হাসপাতালের দালালরা সরাসরি যোগাযোগ করে ভাল চিকিৎসার নামে বাইরে নিয়ে যায়। আরো তথ্য উঠে এসেছে, বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকরা দালাল ছাড়াও রোগী ধরার ফাঁদ হিসেবে মার্কেটিং ম্যানেজার ও মার্কেটিং অফিসার নিয়োগ দেয়। যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয় সরকারী হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে নিয়ে আসার। আর এ কাজ করতে পারলেও রোগী চিকিৎসার মোট বিলের ৩০ শতাংশ কমিশন দেওয়া হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে আবার কমিশন আরো বেশি হয়ে যায়।

হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগানোর কাজে সহযোগিতা করে হাসপাতালে চাকুরি করা কিছু অসাধু কর্মচারী বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। যারা সর্বক্ষণ বাইরের প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং ম্যানেজার ও মার্কেটিং অফিসার নামধারী দালালদের রোগী ভর্তি হওয়ার খবর দেয়। শুধু তাই নয় কোন রোগী একটু বেশি খারাপ হলে সেই অসাধু কর্মচারীরা সেই রোগীকে আইসিইউতে নিতে হবে বলে জানায়। এরপর সরকারী হাসপাতালে ফাঁকা নেই বেসরকারী হাসপাতালে বেড ফাঁকা থাকতে পারে বলে বাইরের প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে ওই রোগী ধরিয়ে দেয়। এভাবেই বাইরের প্রতিষ্ঠানের দালালরা রোগী ভাগানোর কাজ করে থাকেন। সেই রোগী দরিদ্র কিনা তা না দেখেই বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের মালিকরা আইসিউতে রেখে চিকিৎসা দিয়ে বেশি টাকা আদায় করে। চাহিদা অনুযায়ী টাকা না দিলে অনেক সময় লাশ আটকে দেওয়া হয় এমনও অভিযোগ রয়েছে রোগীদের পক্ষ থেকে। দীর্ঘদিন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের দালাল ধরা ছোয়ার বাইরে থেকে এমন প্রতারণা করে আসলেও কেউ আইনের আওতায় আসেনা। নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক রোগী জানান, হাসপাতালের দালালরা যেভাবে রোগী ধরে নিয়ে যায় তা নজিরবিহীন। তাই তিনি তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার আহবান জানান।

এ বিষয়ে রাজশাহীর সিভিল সার্জন সঞ্জিত কুমার সাহা বলেন, সরকারী হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগানোর কাজ দেখা তাদের দায়িত্ব নয়। তারা বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকগুলোর মান নির্ণয় করে থাকেন। অনিয়ম পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

খবর২৪ঘণ্টা/এমকে

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST