নিজস্ব প্রতিবেদক: উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রধান চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে রোগী ভর্তি ফি অতিরিক্ত নেয়ার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার রোগীদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সরজমিনে গতকাল বুধবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে রামেক হাসপাতালের জরুরী বিভাগে গিয়ে রোগীর স্বজন ও রোগীর সাথে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী ভর্তি হলে রোগীকে প্রথমে জরুরী বিভাগে গিয়ে ১০ টাকায় একটি টিকিট কিনতে হয়। এরপর সেই টিকিট জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার (ইএমও) কে রোগীকে নির্ধারিত ওয়ার্ডে ভর্তির জন্য লিখে দেন। সেই টিকিট পুনরায়
জরুরী বিভাগের রোগী ভর্তি কাউন্টারে গিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে দিলে তিনি ভর্তি ফরমের মাধ্যমে রোগী ভর্তি করান। রোগীর ভর্তি ফরমের সরকারী মূল্য ১৫ টাকা হলেও কর্মচারীরা প্রায় রোগীর কাছ থেকে বেশি নেন। ১৫ টাকার রোগী ভর্তি ফরমের মূল্য ২০ থেকে ২৫ টাকা নেয়া হয়। আর টিকিট কাউন্টারের সামনেই রোগী ভর্তির টিকিটের মূল্য ও ফরমের দাম লিখা আছে। সেই সাথে সেখানে আরো লিখা আছে, কেউ ১৫ টাকার বেশি চাইলে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাকে অবহিত করুন।
হাসপাতাল কর্তপক্ষের এমন নির্দেশনা থাকার পরেও টিকিট কাউন্টারের কর্মচারীরা সেই নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে বেশি টাকা নিচ্ছে। কিন্ত রোগী ও তাদের স্বজনরা জরুরী অবস্থায় থাকার
কারণে সামান্য টাকা নিয়ে বাকবিতÐায় জড়ায়না। কেউ কেউ ১৫ টাকার বেশি দিতে না চাইলে তার সাথে চড়াও ভাষায় কথা বলেন সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা এমন অভিযোগ রয়েছে রোগী ও তার স্বজনদের পক্ষ থেকে।
বুধবার দুুপুর ২টার দিকে রামেক হাসপাতালের জরুরী বিভাগে গিয়ে দেখা যায় ভর্তি রোগীদের থেকে ১৫ টাকা ভর্তি ফি ছাড়াও অতিরিক্ত ৫ থেকে ১০ টাকা করে বেশি নেয়া হচ্ছে।
বুধবার দুপুরে রামেক হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী সুকতারার কাছ থেকে ১৫ টাকার ভর্তি ফি ২০ টাকা নেয়া হয়। ফরম নম্বর-১৫৮৮০, জাহান নামের অপর এক রোগীর কাছ থেকেও ১৫ টাকার ভর্তি ফি ২০ টাকা নেয়া হয়। যার ফরম নম্বর ১৫৮৮২। ধীরেন্দ্রনাথ নামের অপর এক রোগীর কাছ থেকে ১৫ টাকার ভর্তি ফি ২০ টাকা নেয়া হয়। হোসনিয়ারা নামের অপর এক রোগীর কাছ
থেকেও ১৫ টাকার ভর্তি ফি ২০ টাকা নেয়া হয়। চাঁদ আলী নামের এক রোগীর কাছ থেকেও ২০ টাকা নেয়া হয়। ওই সময় ডিউটিতে ছিলেন বদরুল ও অপর একজন। উপরে দেয়া নামগুলোর কাছ থেকেই বেশি ভর্তি ফি নেয়া হয় তা নয়। অন্যান্য রোগীর কাছ থেকেও ভর্তি ফি বেশি নিতে দেখা গেছে।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে জরুরী বিভাগের এক কর্মচারী বলেন, জরুরী বিভাগে ১৫ টাকার ভর্তি ফি ২০ টাকা বা ক্ষেত্র বিশেষে আরো বেশি নেয়া হয় দীর্ঘদিন থেকেই। কিন্ত এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়না। মুমিন নামের এক রোগীর স্বজন বলেন, আমার কাছ
থেকে ১৫ টাকার ভর্তি ফি ২০ টাকা চায় টিকিট কাউন্টারের লোক। আমি তাকে সেই টাকা দিতে না চাইলে সেই কর্মচারী চড়াও হয়ে কথা বলেন।রশিদা নামের আরেক রোগীর স্বজন বলেন, আমার রোগী জরুরী থাকার কারণে তার কথা মতো ২০ টাকা দিয়ে চলে এসেছি। কর্মচারীরা ১৫ টাকার ভর্তি ফি কেন ২০ টাকা চাইবে? এদের শাস্তি হওয়া জরুরী। এ বিষয়ে রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস বলেন, রোগী ভর্তি ফি বাড়তি নেয়া হলে কোন ছাড় নয়। খোঁজ নিয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভর্তি ফি বেশি নেয়ার কোন সুযোগ নেই।
আর/এস