নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক প্রফেসর এনামুল জহিরকে মারধর পরবর্তী দুই পক্ষের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে রাজশাহী সার্কিট হাউসে এক জরুরী সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই সভায় পক্ষে বিপক্ষে মতামত তুলে ধরা হয়। এরপর দুই পক্ষের দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারী রাতে রামেক হাসপাতাল ইন্টার্ন চিকিৎসকরা প্রিয়ঙ্কা নামের এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ এনে রাবির আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এনামুল জহিরকে মারধর করেন। মারধরের ঘটনাটি খবর ২৪ ঘন্টাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত (রাজপাড়া থানা) বিচারক মো. কুদরাত ই খুদা স্বপ্রণোদিত হয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে পিটিশন মামলা করেন এবং ২৫ ফেব্রুয়ারীর মধ্যে ঘটনা তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদানের জন্য রাজপাড়া থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। এর কয়েকদিন পরেই রাজশাহী কোর্টের এক আইনজীবী ইন্টার্ন চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কা ও কামালসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে রাজশাহীর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলার পরের দিন রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নারী ইন্টার্ন চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কাকে নির্যাতনের অভিযোগ এনে রাজশাহীর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর থেকে তারা টানা কর্মবিরতিতে ছিলেন।
এরপর মঙ্গলবার দুপুরে রামেক হাসপাতালের জরুরী বিভাগের গেট বন্ধ করে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বসে পড়লে নগর আ’লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার ঘটনাস্থলে গিয়ে মামলা প্রত্যাহারে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ^াস দিলে তারা গেট ছেড়ে চলে যায়।
এরপর মঙ্গলবার রাতে সবাইকে নিয়ে একটি জরুরী সভা হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার নূর উর রহমান, রাজশাহী মে্েট্রাপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুবর রহমান পিপিএম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর আব্দুস সোবহান, নগর আ’লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমান, রামেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. আনোয়ার হাবীব, রাজশাহী
আইনজীবী বারের সভাপতি সেক্রেটারী, বিএমএ’র সভাপতি সেক্রেটারীসহ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তৃাবৃন্দ।
সভায় সবার মতামতের ভিত্তিতে দুই পক্ষের দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে পিটিশন মামলাটি দুই পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতেই নিষ্পত্তি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভবিষ্যতে রোগীর স্বজনদের মারধর না করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা উপস্থিত থাকলেও শিক্ষক এনামুল জহির উপস্থিত ছিলেন না। তারপক্ষ থেকে ভিসি ও প্রোভিসি উপস্থিত ছিলেন।
সভায় অংশ নেওয়া রাজশাহী মহানগর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেন, দুই পক্ষের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পিটিশন মামলাটিও দুই পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে হবে। সবার মতামতের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রোগীর স্বজনদের না পেটানোর ব্যাপারেও কথা হয়েছে। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা আর কর্মবিরতিতে যাবে না।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে