নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহী মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেব বাজারে রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করছেন স্থানীয় লোকজন। এতে যানযটের মধ্যে পড়ে ব্যাপক ভোগান্তির মধ্যে পড়ছে যানবাহন চালক ও পথচারী। ফাঁকা নগরীতে শুধু অবৈধভাবে রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করার জন্য যানযট লাগে। যার কারণে মনিচত্বর থেকে জিরোপয়েন্ট পার হতে ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগে। এ নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়িকে মাসোয়ারা দিয়েই ব্যবসা করা হচ্ছে। তাই দিনের পর দিন সাহেব বাজার অবৈধ দখলের কবলে পড়ছে। পুলিশকে টাকা দেওয়া ছাড়া কেউ সেখানে ব্যবসা করতে পারে না।
সরজমিনে সাহেব বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রাজশাহী কলেজের সামনে থেকে শুরু করে মনিচত্বর হয়ে জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত রাস্তার দুই ধার ও ফুতপাত দখল করে বসানো হয়েছে বিভিন্ন ধরণের দোকান। লোকনাথ স্কুলের মূল গেটের দুই ধারে দোকান, সোনাদিঘী মোড়ের দুই ধার, সমবায় মার্কেট থেকে শুরু করে গণকপাড়া ও জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত অবৈধভাবে রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে বসানো হয়েছে দোকান। প্রত্যেকটি দোকান রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে বসানো হয়েছে।
এ কারণে ওই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী যানবহন ও পথচারীদের প্রতিনিয়তই যানযটের মধ্যে পড়ে ভোগান্তি পোহাতে হয়। যানযট থাকলেও ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে রাস্তা পরিস্কারের জন্য কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। তবে মালোপাড়ায় অবস্থিত পুলিশ ফাঁড়ির বিরুদ্ধে এসব দোকান থেকে মাসোয়ারা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে দোকান বসানোর কারণে এভাবেই যানযট লেগে থাকে সাহেব বাজারে। ফাইল ছবি
মনিচত্বর থেকে জিরোপয়েন্ট দখলের কারণে পথচারী ও যানবাহন নির্বিঘেœ চলাচল করতে পারে না। তেমনি জিরোপয়েন্ট থেকে আরডি মার্কেট হয়ে মনিচত্বর পর্যন্ত ফুটপাতে দোকানের পাশপাশি রাস্তায় ভ্যানে দোকান সাজিয়ে এলোমেলোভাবে রাখা হয়। এর কারণে বেশি যানযট হয় সেখানে। তাই স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীরা এই দোকানগুলো দ্রুত উঠিয়ে ফুটপাত চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানান। সেই সাথে আর যেন না বসতে পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করারও দাবি জানান তারা।
ফুটপাতে ব্যবসা করা এক দোকানির সাথে কথা হলে তিনি নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, এখানে আমার টাকা দিয়েই ব্যবসা করি। পুলিশকে চাঁদা দিতে হয়। মাসোয়ারা না দিলে বসতে দেওয়া হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে একজন এসে টাকা নিয়ে যায়। তবে ফাঁড়ি পুলিশের কার হাতে টাকা দেয় তা তিনি বলতে অস্বীকার করেছেন। আরেক দোকানি পুলিশের পাশপাশি সরকারদলীয় স্থানীয় নেতাকে চাঁদা দেওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, আমরা দোকান করি। কিন্তু টাকা দিয়েই দোকান করতে হয়। তিনিও নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে কাকে টাকা দেন তা জানাতে অস্বীকার করেন।
শুধু নগরীর সাহেব বাজার এলাকার ফুটপাত দখল করে দোকান বসানো হয়েছে তা নয়। নগরীর রেলগেট বিন্দুর মোড়, নিউমার্কেট, শিরোইল বাস টার্মিনাল, রেলগেট, শালবাগান, নওদাপাড়া, ভদ্রা, তালাইমারি, লক্ষীপুর, কোর্ট স্টেশন, হড়গ্রাম নিউমার্কেট এলাকা, কাশিয়ায়াযাঙ্গাসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো অবৈধ দখলের মধ্যে পড়েছে।
মালোপাড়া ফাঁড়ির বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইনচার্জ এসআই নাসিরের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার হেমায়েত উল্লাহ বলেন, নগরীর ফুটপাত দখল করে বসা অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হবে। যাতে যানবাহন ও পথচারী নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে। এক্ষেত্রে কোন ছাড় দেওয়া হবে না।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে