রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের তালাইমারী পুলিশ ফাঁড়ির বরখাস্ত হওয়া ইনচার্জ এসআই মাসুদ রানার চোরাই প্রাইভেট কার জব্দ হয়নি এখনো। সম্প্রতি স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীদের থেকে নিয়মিত মাসোহারা আদায়, মাদকসহ আসামী ধরে অর্থের বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া, অবৈধ যানবাহন নিজের করে তা ফাঁড়িতে রেখে ব্যবহার করাসহ মিমাংসার নামে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও কর্মে অদক্ষতার কারণে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল বলে জানানো হয়।
আর সেই সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এসআই মাসুদ রানা এখনো তার চোরাই গাড়ী নিয়ে সক্রিয় রয়েছেন। নগরজুড়েই তিনি সেই গাড়ী নিয়ে ছোটাছুটি করছেন। তার গাড়িটি এখনো জব্দ বা ফৌজদারি কোন মামলা দেয়া হয়নি। এ নিয়ে খোদ তার সহকর্মী কিছু পুলিশ সদস্যদের মধ্যেই ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
গত দুই দিন আগে তাকে নগরের বিলসিমলা এলাকায় গাড়িটি চালিয়ে যেতে দেখা যায়। আগে তিনি সেই গাড়িটি ফাঁড়ির সামনে রাখলেও এখন তাকে বরখাস্ত করার কারণে তিনি সেটি একটি গ্যারেজে রাখছেন। সেখান থেকেই তিনি সেই গাড়িটি ব্যবহার করছেন।
যদিও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরএমপির এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, যদি কারো কাছে চোরাই গাড়ী বা পণ্য পাওয়া যায় তাহলে নিয়ম অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হবে। সেটি সরকারী চাকুরীজীবী হোক বা সাধারণ মানুষ হোক। এমন নিয়ম থাকলেও বরখাস্ত হওয়া মাসুদের বিরুদ্ধে এ সংক্রান্ত বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তার বিরুদ্ধে আর কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানতে আরএমপির মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) গোলাম রুহুল কুদ্দুসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
এর আগে খবর ২৪ ঘণ্টার অনুসন্ধানে জানা যায়, তালাইমারি ফাঁড়ির বরখাস্ত হওয়া ইনচার্জ এসআই মাসুদ ও পুলিশ কন্সটেবল জামিল আহম্মেদের বিরুদ্ধে চোরাই গাড়ী ব্যবহারের অভিযোগ উঠে। এ ছাড়াও মাদকসহ আসামী ধরে ছেড়ে দেয়াসহ নানা অভিযোগের পর এবার চোরাই গাড়ী ব্যবহার করার অভিযোগ উঠে এই দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে।
খবর ২৪ ঘণ্টার অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, তালাইমারী পুলিশ ফাঁড়িতে যোগদানের পর থেকেই তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেন। মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে সখ্যতা তৈরি করে হাতিয়ে নেন। উধ্বর্তন পুলিশ কর্মকর্তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে তিনি কন্সটেবল জামিলের সহায়তায় এই কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ঢাকা মেট্রো-গ ১২-৯০৭৬ নম্বরের একটি প্রাইভেট কার কন্সটেবল জামিলের কাছ থেকে কিনে ফাঁড়িতে রেখেছিলেন। গাড়ীটি তিনি তার কাছ থেকে ৪ লাখ টাকায় কিনেছেন বলে দাবি
করেন। সেই গাড়ীতেই মাদক সরবরাহ করা হতো এমন গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
বরখাস্ত হওয়া এসআই মাসুদ রানার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ সত্য নয়। আমি প্রাইভেট কারটি কন্সটেবল জামিলের কাছ থেকে ৪ লাখ টাকায় কিনেছি। প্রাইভেট কারটি এখন আমার। কিন্ত এই প্রাইভেট কারের নম্বরের কোন অস্তিত্ব নেই বলে বিআরটিএ জানিয়েছে।
আর/এম