নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী মহানগর ও জেলায় গত ১ বছরে ৩৪৮ জন নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এরমধ্যে হত্যা ৩০, আত্মহত্যা ৬২, আত্মহত্যা চেষ্টা ১১, ধর্ষণ ৫৭, যৌন নির্যাতন ৩১, নির্যাতন ৯৯, পর্নোগ্রাফি ৮, এসিড ভায়োলেন্স ৫, নিখোঁজ ও অপহরণ ২২, আহত ২৩ জন নারী ও শিশু। ২০২০ সালের জানুয়ারী থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩৪৮ জন নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়।
উন্নয়ন সংস্থা লেডিস অর্গানাইজেশন ফর সোসাল ওয়েলফেয়ার (লফস) রাজশাহী জেলায় দীর্ঘদিন যাবৎ নারী ও শিশুর উন্নয়নে কাজ করছে। মানবাধিকার সংগঠন হিসেবে লফস সংস্থার ডকুমেন্টেশন সেল থেকে এ তথ্য সংগ্রহ করা হয়। যৌতুক ও পরকীয়ার কারণে অধিকাংশ নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। অনেক ক্ষেত্রে বিদেশি কিছু টিভি সিরিয়াল পরকিয়াকে উৎসাহিত করছে। এছাড়া পারিবারিক কলহ ও প্রেম ঘটিত কারণে হত্যা-আত্মহত্যা ও অমানবিক নির্যাতনের মতো ঘটনা ঘটছে। ঘটনাগুলোর মধ্যে রয়েছে, রাজশাহীর গোদাগাড়ীর খারিজাগাতি মোল্লা পাড়া গ্রামে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষরা ইতি বেগম (৩৫) এর কান ছিড়া, একই উপজেলার পৌর এলাকায় শ্রীমন্তপুর গ্রামে মাদকাসক্ত ছেলের হাতে মা শঙ্করা রানী (৬৫) খুন, বাঘায় হিজল পল্লী গ্রামে ফাল্গুনি খাতুন (২২) কে হত্যার অভিযোগ,
মোহনপুরের গোছা খন্দকার পাড়া গ্রামে স্ত্রী কামরুন্নাহার তাজরীন (২১) কে শ^াসরোধ করে স্বামীর বিরুদ্ধে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ, বাগমারা উপজেলার বাসুপাড়া ইউনিয়নের দেউলিয়া পশ্চিম পাড়ার প্রবাসীর স্ত্রী মৌসুমী (২৫) রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ, দূর্গাপুরের চৌপুকুরিয়া গ্রামের কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মিকে ইউপি সদস্যর বিরুদ্ধে কু-প্রস্তাব ও কর্মস্থলের দেয়ালে অশ্লিল কথা লেখার অভিযোগ, বাগমারার বড় বিহানালী ইউনিয়নের সদস্য এবং বাগান্না গ্রামের বাসিন্দার নির্যাতনের কারনে আক্তারুনেছা (৩৮) নামের গৃহবধুর আত্মহত্যা, মোহনপুর উপজেলায় এক সন্তানের জননী গৃহবধু (২৩) ধর্ষণের পর নগ্নছবি ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভাইরালের অভিযোগ, নগরীর সিলিন্দা বটতলা থেকে মা মোছা: মোর্শেদা খাতুন ও ছেলে মেহেদী (১২) নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ, বাঘায় এক তরুনীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ, দুর্গাপুর উপজেলায় এক স্কুল ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ, গোদাগাড়ী পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলরের বাড়ীতে এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার, পুঠিয়ায় এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ, তানোরে বিয়েরপর যৌতুকের দাবীতে শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতনের ফলে অভিমান করে আত্মহননের পথ বেছে নেয় ফারহানা তিথি (১৮), বাঘায় ৮ম শ্রেণির ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় মামাকে খুন ও দুইজন আহত হওয়ার অভিযোগ, পুঠিয়ায় বানেশ^র রঘুরামপুর এলাকার শ্রাবনী খাতুন আলো (১২) নামের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীর
গলায়দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা, বাগমারা উপজেলার বড়বিহানালী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক ১০ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে কৌশলে টয়লেটে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ, একই উপজেলার আউচপাড়া ইউনিয়নের মুগাইপাড়া গ্রামে চাচার বিরুদ্ধে ভাতিজিকে (১২) ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ, রাজশাহীতে ২০২০ সালে নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রকাশিত তথ্য আশংকা জনক। রাজশাহী অঞ্চলে নারী, শিশু নির্যাতন সহ সার্বিক ঘটনাগুলোর সুষ্ঠ তদন্ত ও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। তিনি বলেন অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা না গেলে ক্রমশই অপরাধীরা উৎসাহিত হবে এবং অপরাধের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। বছরের নারী ও শিশু নির্যাতনের অনেক ঘটনায় মামল ও বিচার হয়েছে কিন্তু অপরাধ কমছে না কারণ শাস্তি হতে হবে দৃষ্টান্তমূলক। তাহলে নির্যাতন কমে আসতে পারে।
এস/আর