রাজশাহী মহানগরীতে শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতনের প্রতিবাদ ও সংসার ফিরে পাওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ইভানা হ্যাপি (২৫) নামের এক ভুক্তভোগী গৃহবধূ। তিনি নগরীর রাজপাড়া থানাধীন লক্ষীপুর ভাটাপাড়া এলাকার নাজমুল হুদার স্ত্রী ও একই থানার বুলনপুর এলাকার মৃত হাফেজ আহমেদ মোস্তফার মেয়ে। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে নগরীর রাণীবাজার এলাকায় অবস্থিত একটি রেস্টুরেন্টের সম্মেলন কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে গৃহবধূ ইভানা হ্যাপি অভিযোগ করেন, গত ২০১৯ সালের জুন মাসের ১৭ তারিখে পারিবারিকভাবে রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানার অধিনস্থ লক্ষীপুর ভাটাপাড়া এলাকার নুরুল হুদার ছেলে নাজমুল হুদা (৪০) এর সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় আগের স্ত্রী ও সন্তানের তথ্য গোপন রেখে তাকে বিয়ে করে তার স্বামী। পরে খোঁজ নিয়ে তিনি জানতে পারেন, তার স্বামীর প্রথম স্ত্রী ও দুই ছেলে সন্তান রয়েছে। যারা তার বাড়িতে থাকে। এর কিছুদিনের মধ্যেই তার পেটে বাচ্চা আসে। সেটি জানার পর তার স্বামী বাচ্চাটি নষ্ট করতে বলে। তার নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচা ও সংসার টেকানোর জন্য তিনি বাচ্চাটি নষ্ট করেন। তারপর থেকে এখানো তিনি স্বাভাবিক হতে পারেননি। ২০২০ সালের ১৬ সেপ্টেমবর রাতে তার বাড়িতেই তাকে অমানুষিক নির্যাতন করে। পরে তিনি রাজশাহীর আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার পরে তার স্বামী তাকে ভরণ-পোষণ দিবে বলে প্রতিশ্রæতি দিয়ে জামিন নেয়। কিন্ত জামিন পাওয়ার পর আবার সেই আগের রুপে ফিরে যায়। এমনকি তাকে হুমকি-ধামকি দেয়। কোনভাবেই তাকে তার সাথে রাখবেনা এমন কথাও বলে। মামলা তুলে নেয়ার জন্য তাকে অব্যাহতভাবে চাপ দিচ্ছে।
শুধু তাই নয় চলতি বছরের মার্চ মাসের ৫ তারিখ সন্ধ্যার পরে তার রাজশাহীর নিজ বাড়ি ভাটাপাড়ায় গেলে তাকে আবার মারধর করে। পরে তিনি তার ভাইয়ের সহায়তায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি হন। চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার পর থানায় মামলা করতে গেলে সেখান থেকে আদালতে মামলা করার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়। তার স্বামী হুমকি দেয় যে, তার কিছুই করা যাবেনা। অবস্থা বেগতিক দেখে তিনি নারী ও শিশুদের আইনি সহায়তা নিয়ে কাজ করা সংগঠন নবদিগন্ত মহিলা উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক রাজিয়া সুলতানার কাছে অভিযোগ দেন। অভিযোগের পর তারা নোটিশ করলেও তারা নির্ধারিত দিনে মীমাংসায় যায়নি। তার স্বামীর ভাগনি সম্পর্কের এক এ্যাডভোকেট গৃহবধূ ইভানার পক্ষে কাজ না করার জন্য সংস্থার নির্বাহী পরিচালকের কাছে তদবির করেন এবং তাকে সহায়তা না করার জন্য বলে। নির্বাহী পরিচালক তার কথা না শোনায় তিনি তাকেও হুমকির সুরে কথা বলে, এরপর বলেন, যে আরো মামলা করতে বলেন। কিছুই হবেনা। গৃহবধূ ইভানার স্বামী নাজমুল হুদার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ সত্য নয়। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, গৃহবধূ ইভানার ভাবি রেখা ও তার বোন তন্নী প্রমুখ।
এস/আর