রাজশাহী মহানগরীতে সরকারী ছুটির দিনেও দ্বিতীয় দফার প্রথম দিনের লকডাউনে মানুষ ও অভ্যন্তরীণ যানবাহন চলাচল ছিল অন্যান্য দিনে চোখে পড়ার মতো। ছুটির দিন হওয়ার পরেও অটোরিক্সা ও রিক্সা এবং সিএনজি চলাচল ছিল চোখে পড়ার মতো। অন্যদিনের তুলনায় এদিন লকডাউন ও সরকারী ছুটির দিন হওয়া স্বত্বেও অনেক বেশি যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। বাইরে থেকেও বিপুল পরিমাণ মানুষ নগরে প্রবেশ করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও অন্য দিনের তুলনায় তেমন কড়াকড়ি করতে দেখা যায়নি। শুক্রবার শুরু হওয়া দ্বিতীয় দফার ৭ দিনের লকডাউনের প্রথম দিন শুক্রবার রাজশাহী মহানগরে অনেক বেশি মানুষের চলাচল ছিল। রিক্সা, অটোরিক্সা ও সিএনজিও বেশি চলেছে। অথচ সরকারী ছুটির দিন শুক্রবার বছরের স্বাভাবিক সময়গুলোতে সবকিছু বন্ধ থাকে। মানুষ চলাচলও তেমন দেখা যায়না। খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া মানুষকে দেখা যায়না। যদিও বিকেলের দিকে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে কিছু মানুষের ভিড় থাকে।
আবার অভিযোগ উঠেছে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও অন্য চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বাইরে থেকে রোগী রাখতে আসা এ্যাম্বুলেন্সগুলো ফেরার সময় যাত্রী তুলে নিয়ে যাচ্ছে। রাজশাহী শহর থেকে বিভিন্ন স্থানে যাওয়া এ্যাম্বুলেন্সগুলোর ক্ষেত্রেও একই চিত্র। নগরবাসী বলছেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটু নজরদারি করলেই বিষয়টি হাতেনাতে ধরা যাবে। পাড়া-মহল্লা ও নগরের প্রবেশ পথে আরো কড়াকড়ি আরোপ করলে অপ্রয়োজনে বের হওয়া লোকজন ঠেকানো যাবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সীমান্তবর্তী জেলা রাজশাহীতে করোনা সংক্রমণ দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় ৭ দিনের সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা করা হয়। ১৭ জুন ৭ দিন শেষ হওয়ার পরে সংক্রমণ না কমায় আরো ৭ দিন লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়ে দেয়া হয় রাজশাহীর স্থানীয় যৌথ প্রশাসনের সভায়। এবার লকডাউনে কড়াকড়ি থাকলেও শুক্রবার কিছুটা ঢিলেঢালা হয়।
এদিকে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন ১০ জনের উপর করোনা ভাইরাসে চিকিৎসাধীন রোগীর মৃত্যু হচ্ছে। আবার বিভাগের মধ্যে রাজশাহী জেলায় করোনা সংক্রমণের হার অনেক বেশি। ৭ দিনের লকডাউনেও কমেনি শনাক্তের হার। স্থানীয় সচেতন মানুষ বলছেন, করোনা সংক্রমনের হার কমাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা লকডাউনের সাথে সাথেই রাজশাহীকেও লকডাউন ঘোষণা করা প্রয়োজন ছিল। কারণ তখন প্রচুর পরিমাণ চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষ রাজশাহীতে প্রবেশ করে। এছাড়া রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এলাকা লকডাউন ঘোষণা করা হলেও উপজেলাগুলো এর বাইরে রয়েছে। এ কারণে লকডাউন কাজে আসছেনা বলে অনেকেই মনে করছেন। তাই তারা নগরের সাথে সাথেই উপজেলাগুলোতেও লকডাউন ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এবারের লকডাউনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কড়াকড়ি ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্ত শেষ দিকে কিছুটা ঢিলেঢালা লকডাউন হচ্ছে বলে অনেকেই দাবি করছেন। এ পর্যন্ত করোনায় রাজশাহীতে ১১২ জনের বেশি মানুষ মারা গেছেন।
এস/আর