নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাগমারা উপজেলায় মা-ছেলে হত্যার ঘটনায় আ’লীগ নেতাসহ তিনজনের ফাঁসি ও ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহীর দ্রত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক অনুপ কুমার এ রায় ঘোষণা করেন। ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, আ’লীগ নেতা ও দেউলা রানী রিভারভিউ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং নিহত আকলিমা বেগমের দেবর আবুল হোসেন মাস্টার (৫২), দুর্গাপুর উপজেলার আলীপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে হাবিবুর রহমান হাবিব (৪০) ও দুর্গাপুর উপজেলার দেবীপুর গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে চাকরিচ্যুত বিজিবি সদস্য
আবদুর রাজ্জাক (৩৫)। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, দুর্গাপুর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের আতাউর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহ আল কাফি (২২), একই গ্রামের লবির উদ্দিনের ছেলে রুহুল আমিন (৩০), দুর্গাপুরের খিদ্রকাশিপুর গ্রামের ছাবের আলীর ছেলে রুস্তম আলী (২৬) এবং খিদ্রলক্ষীপুর গ্রামের মনিরুল ইসলাম ওরফে মনির (২৩)। এই চারজন ভাড়াটে খুনি হিসেবে টাকার বিনিময়ে খুন করে। এদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। গত ২০১৪ সালে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার দেউলা
গ্রামের আকলিমা বেগম (৪৫) ও তার ছেলে জাহিদ হাসানকে (২৫) নিজ বাড়িতে গভীর রাতে গলা কেটে হত্যা করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু জানান, মামলা দ্রত নিষ্পত্তির জন্য এ বছরের এপ্রিলে আলোচিত এ মামলাটি জেলা জজ আদালত থেকে দ্রত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। মামলাটিতে মোট ৫১ জন সাক্ষী ছিলেন। আদালত ৪৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। এরপর উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে এ মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য্য করেন বিচারক। রায়ে তিনজনের ফাঁসি ও চারজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন বিচারক। একই সঙ্গে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত
আসামীদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ড দেয়া হয়। জানা গেছে, বাগমারার দেউলা গ্রামের নিজ বাড়িতে ২০১৪ সালের ২৪ নভেম্বর রাতে আকলিমা বেগম ও তার ছেলে জাহিদ হাসানকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আকলিমার বড় ছেলে দুলাল হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে বাগমারা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তিন দফা বদলের পর সর্বশেষ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এতে হত্যার রহস্য বের হয়ে আসে। তদন্ত শেষে
২০১৮ সালের ৩১ মে পিবিআইয়ের পরিদর্শক আলমগীর হোসেন এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে সাতজনকে অভিযুক্ত করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু বলেন, এই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী দুইজন। এরা হলেন, নিহত আকলিমা বেগমের দেবর আবুল হোসেন মাস্টার (৫২) এবং হাবিবুর রহমান হাবিব (৪০)। এ মামলায় তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা আবুল হোসেন ও হাবিবুর রহমানকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারি হিসেবে উল্লেখ করেন।
আর/এস