নিজস্ব প্রতিবেদক :
নানা অনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ৪০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছে রাজশাহী মহানগর বিএনপি। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নগর বিএনপি মালোপাড়াস্থ ভুবন মোহন পার্কে বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু। আরো উপস্থিত ছিলেন, নগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন।
অন্যদের মধ্যে রাজপাড়া থানা বিএনপি’র সভাপতি শওকত আলী, বোয়ালিয়া থানা বিএনপি’র সভাপতি সাইদুর রহমান পিন্টু, মতিহার থানা বিএনপি’র সভাপতি আনসার আলী, শাহ্ মখ্দুম থানা বিএনপি’র সভাপতি মনিরুজ্জামান শরীফ, রাজপাড়া থানা বিএনপি,র সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন, শাহ্ মখ্দুম থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন, বোয়ালিয়া থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম মিলু, কাউন্সিলর শাহজাহান আলী, রাজশাহী মহানগর যুবদলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট, জেলা যুবদলের সভাপতি মোজাদ্দেদ জামানী সুমন, মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান রিটন, মহানগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হাসনাইল হিকল, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়কবৃন্দ জাকির হোসেন রিমন, সাধারণ সম্পাদক আবেদুর রেজা রিপন, মীর তারেক, মহানগর মহিলা দলের যুগ্ম আহবায়ক এ্যাডভোকেট রওশন আরা পপি, সখিনা বেগম, শাহনাজ পারভীন লাকী, গুলশান আরা মমতা।
আরো উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সদস্য ইালয়াস বীন কাশিম ও মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাহিন আহম্মেদ সহ রাজশাহী মহানগর বিএনপি, সাংগঠনিক ৩৭টি ওয়ার্ডের অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি নেতা মিনু বলেন, এই প্রথম বাংলাদেশের তিন বারের সফল প্রধানমন্ত্রী আপোষহীন নেত্রী দেশমাতা বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে বিএনপি’র প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করা হচ্ছে। বেগম জিয়াকে মিথ্যা সাজানো মামলায় সাজা দিয়ে নির্জন কারাগারে রাখা হয়েছে। তার মুক্তি ও নিরপেক্ষ নির্দলীয় তত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে আসছে ডিসেম্বর মাসের সংসদ নির্বাচনের দাবীতে এই মাসের মধ্যেই কঠোর আন্দোলন করে তোলা হবে। বর্তমান সরকার পুলিশ বিভাগ ও প্রশাসনের উপর ভর কিরে টিকে আছে। বিগত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনগুলোতে পুলিশ ও প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করে নিয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসনের লোকজন রাজশাহীতে ভোট প্রদান করে এবং রাজশাহীর ইতিহাসে সব থেকে ঘৃন্যভাবে ভোট জালিয়াতী করে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট প্রার্থীকে মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসন বুলবুলকে পরাজিত করেছে।
তিনি বলেন, বিএনপি প্রার্থী পরাজিত হয়নি। জনগণের ভোটে এখনো বুলবুল মেয়র রয়েছেন। অথচ সরকার দলীয় প্রার্থী ভোটে জিতের লজ্জায় বাহিরে মুখ দেখাতে পারছেন না। সরকার দলের নেতাকর্মীরা লজ্জায় উঁচু স্বরে কথা বলতে পারছে না। এই মুহুর্তে শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা নাই বললেই চলে। আর অবস্থা দেখে সংসদ নির্বাচনে নিশ্চিৎ পরাজয় জেনে পূণরায় ভোট কারচুপি করার জন্য ই.ভি.এম পদ্ধতি ভোট গ্রহন করার পাঁয়তারা শুরু করেছে। কিন্তু বাংলার মানুষ তাদের এই ষড়যন্ত্র কঠোর হস্তে দমন করবে বলে জানান তিনি। বাংলার মানুষ আর এই সরকারকে সহ্য করতে পারছেনা। অনির্বাচিত, দুর্নীতিবাজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই আন্দোলনে পালানোর আর পথ পাবেনা। আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে বর্তমান সরকারের দোসর ও নেতাকর্মীদের সবাইকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে। সেইসাথে হাসিনার যত দুর্নীতি রয়েছে তার হিসাব করে সাজা প্রদান করা হবে বলে তিনি বক্তৃতায় উলেখ করেন।
আসছে আন্দোলনে সকল নেতাকর্মীদের মাঠে থেকে দাবী আদায়ের জন্য একতাবদ্ধভাবে সংগ্রাম করার আহবান জানান। সেইসাথে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও পরিবারের সদস্য রুহের মাগফেরাত কামনা এবং বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানে শারীরিক সু¯’তা কামনা করেন মিনু। বিএনপি নেতা মিলন বলেন, বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক রাষ্ট্রনায়ক, বাংলার রাখাল রাজা, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা, উন্নয়নের রুপকার ও স্বাধীনতার ঘোষক মেজর জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের মানুষকে ক্ষুধা ও দারিদ্রতা থেকে মুক্তি দিতে এবং দেশের ও জনগণের স্বাধীনতা স্বার্বভৌত্ব রক্ষা করতে ১৯৭৮ সালের এই দিনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন।
তাঁর দৃঢ় নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে পরিচিতি লাভ করে এবং উন্নয়নের শিখরে পৌঁছাতে থাকে । তিনি কৃষিতে অভানীয় সাফল্য এনে বাংলার মানুষকে ক্ষুধার কবল থেকে রক্ষা করেন। তিনি দেশ ও দেশের জনগণকে নিয়ে ভাবতেন। অথচ বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার তৎকালীন সময় থেকেই সন্ত্রাস, গুম, নির্যাতন, খুন, জালিয়াতী ও দূর্নীতির রাজিিনত করে আসছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে জহির রায়হানকে গুম করেন এবং সিরাজ সিকদারকে প্রকাশে খুন করে এই সরকার। বর্তমান সরকারের প্রধান তারই উত্তসরী হিসেবে তারা বাবার সময়কার এই সকল ঘৃন্য কাজ গুলো সুন্দর ভাবে করে যাচ্ছেন বলে জানান মিলন।
মিলন আরো বলেন, দেশের জনগণকে সকল প্রকার স্বাধীনতা থেকে দুরে রাখতে একের পর এক কালো আইন করে জনগণকে দূর্ভোগে ফেলে দিয়েছে। বর্তমানে দেশে কোন গণতন্ত্র নাই এবং দেশের মানুষ স্বাধীনবাবে চলতে ও কথা বলতে পারেনা। এছাড়াও মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপি ও ২০দলীয় জোটের নেতাদের হয়রানী করছে। খুন ও গুম করছে। এপর্য়ন্ত ১৯১ জন বিএনপি নেতা গুম করে রেখেছে। আজও তাদের কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছেনা বলে তিনি উলেখ করেন। এই অবৈধ ও ফ্যাসিষ্ট সরকারে আর ক্ষমতায় থাকার কোন অধিকার নাই। এই সরকারের পতন ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে আসছে সংসদ
নির্বাচন দিবে বাধ্য করতে কঠোর আন্দোলন শুরু করা হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারী দেন।
সভাপতির বক্তব্যে বুলবুল বলেন, এই সরকার জনগণের মৌলিক চাহিদা ও অধিকার খর্ব ও বিনষ্ট করেছে। গণতন্ত্র বিপন্ন হয়ে পড়েছে। দেশে এখন কোন ধরনের গণতন্ত্র নাই। বাংলার মানুষ ও গণগন্ত্রকে রক্ষা করতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জীবন দিয়ে গেছেন। তাঁর স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্র ও মানুষের ভাত, ভোট ও অধিকার আদায়ের জন্য আপোষহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছে। হাসিমুখে কারাবরণ করেছেন। তিনি কারাগারেও থেকে জনগণের জন্য চিন্তা করছেন। দেশে যেন কোন ধরনের বিশৃখংলা হয়ে জনগণে ভোগান্তিতে না পরে তার জন্য বিএনপি সহ ২০ দলীয় জোটকে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করার পরামর্শ দিয়েছেন। অথচ এই হায়নারুপি বর্তমান সরকার প্রধান মানুষকে জিম্মি করে ফেলেছে। সকল প্রকার অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। কেই কোন কতা বলতে পারছেনা। সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কলম ব্যবহার করতে পারছেন না। কেউ
সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা ও কথা বললে এবং লিখলে তাকে রাতের অন্ধকারে ও প্রকাশে খুন ও গুম করা হচ্ছে। এপর্যন্ত অনেক সাংবাদিককে হত্যা করা হলেও কারো বিচার হয়নি। সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা অন্যায় করলে পুলিশ জামাই আদরে তাদের অন্যত্র সড়িয়ে রাখছে। অথচ বিএনপিকে মাঠে নামতে দেওয়া হচ্ছেনা। কিন্তু এই অবস্থার অবসান এই মাসের মধ্যে ঘটানো হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারী দেন। সেইসাথে আসছে আন্দোলনে সকল নেতাকর্মীকে সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহন করার আহবান জানান তিনি। উদ্বোধন শেষে দলীয় কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় একই নেতাগন উপস্থিত ছিলেন এবং একই ধরনের দাবী জানানো হয়।
খবর ২৪ঘন্টা/এম কে