1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
রাজশাহীতে বিএনপির নিজ দলের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন - খবর ২৪ ঘণ্টা
সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ০৮:২৭ পূর্বাহ্ন

রাজশাহীতে বিএনপির নিজ দলের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ১১ মে, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিগত দিনের সকল গণতন্ত্র ও অধিকার পুনরুদ্ধার আন্দোলনে দলমত নির্বিশেষে যারা শহীদ হয়েছেন সে সকল সূর্য সন্তানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং মুক্তির ন্যায় সংগত আন্দোলনে যারা পঙ্গুত্ববরণ করেছেন, রক্ত দিয়েছেন, পরিবার-স্বজন হারা হয়েছেন, শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে জীবিকা নির্বাহের ক্ষমতা হারিয়েছেন তাদের সকলের ত্যাগের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।

আমি সাইদুর রহমান পিন্টু, রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি।
আমার সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সকল নেতৃবৃন্দকেই আপনারা চেনেন ও জানেন। আমরা এখানে উপস্থিত প্রায় সকলেই রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্বশীল থেকে বিগত দিনের সকল ফ্যাসিবাদ বিরোধী ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলন সংগ্রামে বিএনপি’র সকল কর্মসূচিতে সামনের সারি থেকে রাজপথে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে পতিত অবৈধ ফ্যাসিস্ট সরকার কর্তৃক অদূর অতীতে আমাদেরকে পরিবারসহ হামলা মামলা জেল জুলুমের শিকার হতে হয়েছে।

আপনারা জানেন যে, বাংলাদেশের আপামর ছাত্র জনতার সম্মিলিত গণঅভ্যুত্থানে বিগত ৫ ই আগস্ট ২০২৪ অবৈধ সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাসিনা পলায়ন পূর্বক পদত্যাগের মাধ্যমে দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদের বিষবৃক্ষ সমূলে উৎপাটন হয়। জুলাই বিপ্লবে সাধারণ ছাত্র-জনতা সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে হয়, হাজারো প্রাণের বিনিময়ে মুক্তির নতুন সূর্য বাংলাদেশে উদিত হয়েছে। রাষ্ট্রের সকল পর্যায়ের সংস্কারের জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে ৩১ দফার একটি রূপরেখা জাতির সামনে তুলে ধরা হয়েছে। ফ্যাসিবাদের বিষবৃক্ষ নির্মূল হলেও তার দোসররা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের অঙ্কুর পুনরায় রোপনের জন্য অপতৎপরতা চালাচ্ছে। অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে যে, রাজশাহী মহানগর বিএনপি কমিটির কয়েকজন নেতৃবৃন্দ আওয়ামী লীগ সহ ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের যেসব নেতাকর্মী চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ সহ অপকর্মের সাথে জড়িত এমনকি জুলাই বিপ্লবের ছাত্র জনতার উপরে হামলার সাথে সম্পৃক্ত এবং সরাসরি নেতৃত্ব প্রদানকারী পতিত ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসনের জন্য প্রত্যক্ষভাবে আশ্রয় প্রশ্রয় প্রদান করছেন।

আপনারা অবগত আছেন যে বিএনপির মাননীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক জনাব তারেক রহমান কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন, দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে কেউ যেন অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত না হয় এই ব্যাপারে সতর্ক থাকতে। কিন্তু এসব নির্দেশনা উপেক্ষা করে, মহানগর বিএনপির চিহ্নিত নেতৃবৃন্দ বেআইনিভাবে প্রতিষ্ঠান জবরদখল, ভূমি-ভবন দখল, অযাচিত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ, চাঁদাবাজি সহ ব্যক্তিগত অনৈতিক কর্মকাণ্ডের দ্বারা বিএনপি দুর্গ খ্যাত রাজশাহীতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছেন। আন্দোলন সংগ্রামের উর্বর ভূমি রাজশাহীতে ফ্যাসিবাদ বিরোধী, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে সম্পৃক্ত বিএনপি এবং সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের মহানগর থেকে থানা, ওয়ার্ড পর্যায়ের দীর্ঘদিনের ত্যাগী নির্যাতিত হামলা মামলার শিকার পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করে, বাদ দিয়ে পকেট কমেটি গঠন করা হচ্ছে।

তাদের এসব কর্মকান্ডের মাধ্যমে রাজশাহী মহানগর বিএনপিতে হাইব্রিডের বাম্পার ফলন হচ্ছে। বিগত দিনে যেসব আওয়ামী মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীদের দ্বারা বিএনপির নেতা কর্মীরা রাজশাহীতে হামলা মামলা জুলুম নির্যাতনে শিকার হয়েছেন তাদেরকেই বর্তমান রাজশাহী মহানগর বিএনপির কিছু নেতৃবৃন্দ নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করছেন, শিষ্য বানাচ্ছেন এবং তাদেরকে দলীয়ভাবে আশ্রয় দিচ্ছেন। আপনাদের মাধ্যমে আমরা আমাদের নিম্নোক্ত অভিযোগ এবং পর্যবেক্ষণ গুলি তুলে ধরলাম:

বিগত ফ্যাসিষ্ট দুঃশাসনে যেখানে রাজশাহী মহানগর বিএনপির ওয়ার্ড ও মহল্লা কমিটির অসংখ্য সাধারণ নেতা কর্মী সমর্থকদের বারংবার মামলা, হামলা, গ্রেফতার, নির্যাতন, জেল, জুলুমের শিকার হতে হয়েছে; সেখানে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ মামুন সহ অন্যান্য পদে আসীন মহানগর বর্তমান কমিটির অধিকাংশ নেতৃবৃন্দকে দৃশ্যত কোন গ্রেফতার, জেল জুলুমের শিকার হতে হয়নি এমনকি কোন মামলাও হয়নি তাদের বিরুদ্ধে। তারা নির্বিঘ্নে চলাফেরা করেছেন, দেশের বাইরে অবস্থান করেছেন আর সাধারণ ত্যাগী রাজপথের কর্মীরা দিনে ফেরারি জীবনযাপন করেছে আর মাঠে-ঘাটে রাত্রি যাপন করতে বাধ্য হয়েছে। যেখানে বিএনপি নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে নির্যাতনের সর্বোচ্চ খড়গ নেমে এসেছিল সে সময় তারা বহাল তবিয়তে ছিলেন। কারণ হিসেবে তাহলে কি আমরা ধরে নিব বিগত পতিত অবৈধ শক্তির সাথে আঁতাত, পারস্পরিক আস্থা আর গোপন সুসম্পর্ক না হয় তাদের ইশারায় বিগত দীর্ঘ আন্দোলনের দিনগুলোতে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করা!!! সাধারণ মানুষ অনেকেই এগুলো কারনে এসব নেতাদের আওয়ামী পছন্দের এজেন্ট হিসাবেও সন্দেহ করছে।

বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড ভিত্তিক কমিটিগুলোতে আওয়ামী লীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, সুবিধাভোগীদের পদ বাণিজ্যর বিনিময়ে বিএনপিতে পুনর্বাসন করা হয়েছে। রাজশাহী মহানগরের আওতাধীন রাজপাড়া থানা বিএনপির সাবেক আহবায়ক, বর্তমান সভাপতি মিজানুর রহমান মিজান, সাবেক সদস্য সচিব, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, সাবেক যুগ্ম আহবায়ক শাহীন আহমেদ, মাহমুদুল হক রুবেল, হারুনুর রশিদ (সাবেক জাসদ নেতা), আব্দুর রাজ্জাক (সাবেক জাতীয় পার্টির নেতা), উক্ত একই কমিটির সাবেক সদস্য বদরুদ্দোজা বদর বিগত সময়ে আওয়ামী লীগ সহ বিভিন্ন মতাদর্শ যেমন জাসদ, জাতীয় পার্টির রাজনীতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল, আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক সহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত ছিল। বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে মহানগরের আওতাধীন রাজপাড়া থানার সাবেক আহবায়ক (বর্তমানে সভাপতি) মিজানুর রহমান মিজান, সাবেক সদস্য সচিব আমিনুল ইসলাম (বর্তমানে সাধারণ সম্পাদক) বিগত আওয়ামী লীগের শাসন আমলে বিভিন্ন নির্বাচনে সরাসরি ফ্যাসিস্ট সরকারের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালানো সহ দলীয় ভূমিকা পালন করেছেন। এছাড়াও ৫ ই আগস্ট ২০২৪ এর পরে

মিডিয়ায় বহুল আলোচিত রাজশাহী পুলিশ লাইন স্কুল ও কলেজের আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সুপারিশে পদায়ন পাওয়া বিতাড়িত প্রিন্সিপালের পক্ষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সদলবলে পেশী শক্তি প্রদর্শনপূর্বক অবস্থান নিতে গেলে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়। রাজপাড়া থানা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব (বর্তমান সাধারণ সম্পাদক) আমিনুল ইসলাম ৫ ই আগস্ট রাজশাহীতে ছাত্র জনতার উপরে সরাসরি গুলি বর্ষণ ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত যুবলীগের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী রনির ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও পৃষ্ঠপোষক। বিগত সময়ে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও অবৈধ এমপি আসাদুজ্জামান আসাদের সহোদর নুরুজ্জামান টুকুর (রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর) নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা সহ পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছেন রাজপাড়া থানার উল্লেখিত সদ্য পদায়ন পাওয়া বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ। বিগত রমজানে ইফতার মাহফিল আয়োজন করে রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করে একই ব্যক্তিদেরকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অর্থাৎ অভিযুক্ত সাবেক আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিজানকে সভাপতি এবং সাবেক সদস্য সচিব আমিনুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে কাউন্সিল ও মতামত ছাড়াই ইফতার মাহফিলে রাজপাড়া থানা কমিটি ঘোষণা করা হয়; যা প্রহসনের নামান্তর মাত্র। আমাদের মতে, চিহ্নিত অপরাধীদেরকে এত কিছুর অভিযোগ প্রমাণাদি থাকা সত্ত্বেও তাদের আবার নতুন করে পদায়ন করা আর অপরাধীদেরকে পুরস্কৃত করা একই কথা। এই কমিটি গঠন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে অপরাধীদেরকে বিভিন্ন কমিটিতে পদায়ন করে পুনর্বাসন করার কারণে স্থানীয়ভাবে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে, পরীক্ষিত ত্যাগী নেতাকর্মীরা দল বিমুখ হয়েছে। দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত সাবেক ছাত্রদল নেতা, মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক রুহুল আমিন বাবলুর বাসায় হামলা, অগ্নি সংযোগ করে গুলি বর্ষন করে মহানগর বিএনপির সরাসরি মদদে রাজপাড়া থানা বিএনপিতে পূর্ণবাসিত আওয়ামী লীগ, যুবলীগের চিহ্নিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা যারা বর্তমানে রাজপাড়া থানা বিএনপির কমিটিতে আছেন। যার বিস্তারিত কয়েক দফা সংবাদ সম্মেলন করে নির্যাতনের শিকার রুহুল আমিন বাবলু আপনাদের সামনে তুলে ধরেছেন। এই বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও কোন “ক্ষমতাবান মহলের” সুপারিশে তাদের বিরুদ্ধে এখনো কোন আইনি ব্যবস্থা নেয়া ও গ্রেপ্তার করা হয়নি কেন? তা আমরা জানতে চাই!

বিগত ২২ জুলাই ২০২৪, আনুমানিক বেলা ১২টার দিকে রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সাবেক কাউন্সিলর রবিউল আলম মিলুর বাসভবনে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর, যুবলীগ নেতা আব্দুল মমিন এর নেতৃত্বে ষষ্ঠীতলা ও গৌরহাঙ্গা যুবলীগের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী কাফি, তুহিন, বাবু, সাচ্চু, রাজিব হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে। সাবেক কাউন্সিলর রবিউল আলম মিলু কোনমতে প্রাণে বেঁচে গেলেও সন্ত্রাসীরা তার বাসায় ভাঙচুর, পরিবারের সদস্যদের হেনস্থা সহ ব্যাপক লুটতরাজ চালায়। হামলার পরেই এসআই ইফতেখার এর নেতৃত্বে বোয়ালিয়ার থানার একটি টিম রবিউল আলম মিলুর বাসায় উপস্থিত হয়ে লুঙ্গি পরিহিত অবস্থায় জোরপূর্বক বিনা ওয়ারেন্টে আটক করে নিয়ে যায়। গ্রেপ্তারের সময় তারা রবিউল আলম মিলুকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত ও পরবর্তীতে মিথ্যা কয়েকটি রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল বিএনপির নেতা, সাবেক কাউন্সিলর রবিউল
আলম মিলুর বাসভবনে হামলাকারী তৎকালীন যুবলীগের সন্ত্রাসীরা বর্তমানে মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ মামুনের সাথেই ভোল পরিবর্তন করে চলাফেরা করছে।

আপনারা জানেন যে পতিত স্বৈরাচার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে মহানগর বিএনপির একটি অনুপ্রবেশকারী সক্রিয় সন্ত্রাসী বলয়ের কারণে তিনটি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এই সন্ত্রাসী বলয় বর্তমান রাজশাহী মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ মামুন এর সরাসরি নেতৃত্ব-আশ্রয়-প্রশয়ে বহাল তবিয়তে আছেন। ইতিমধ্যে গণমাধ্যমে এসেছে যে, কিছুদিন পূর্বে নগরীর উপকণ্ঠে ভুগরইলে নওহাটা যুবদলের সাবেক সদস্য সালাহউদ্দিন মিন্টুর পিতা আলাউদ্দিনের বাসায় সশস্ত্র হামলা ও গুলি করে খুন করা হয়। হামলার নেপথ্যে সাঈদ, শিপলু, সোহাগ, আব্দুল্লাহ, ওবায়দুল্লাহ, শান্ত শিমুল, ইমন নামক সন্ত্রাসীদের নাম উঠে এসেছে। কয়েক বছর পূর্বেও ২১ মার্চ ২০২২ এ, রাজশাহী মহানগরের নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী ও ওয়ার্ড যুবদল কর্মী রিয়াজকে চাঁদা না দেওয়ার কারণে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই হত্যার পিছনে তৎকালীন মহানগর তাঁতী লীগের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী নাঈম, রানা, রনি, অভির সম্পৃক্ততা উঠে আসে। কিছুদিন পূর্বেও নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে জিম্মি করে টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে এক নিরীহ পথচারী রিক্সাচালক গোলাম হোসেন কে খুন করা হয়। উক্ত খুনে নাঈম, সোহেল রানা, তারেক, ফাইজুল হক ফাহি, সুমন সরদার, রনির নাম বিভিন্ন গণমাধ্যমে আলোচিত হয়েছে। খেয়াল করে দেখবেন উপরোক্ত তিনটি খুনের অধিকাংশ প্রধান অভিযুক্তরা বিগত সময়ে ছাত্রলীগ যুবলীগ তাঁতী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল এবং বর্তমান সময়ে মহানগর বিএনপির একটি শক্তিশালী বলয়ের আশ্রয় প্রশ্রয়ে লালিত পালিত হয়ে একের পর এক অপকর্ম ও বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে। গুলি, হামলা, চাঁদাবাজি, খুনের মত ঘটনা সংঘটিত করার পরেও অপকর্মকারীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, মামলা হলেও তারা শক্তিশালী কোন বলয়ের ইশারায় ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে? তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠছে।

আপনারা জানেন যে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক স্বার্থে, বিগত ৯ আগস্ট ২০২৪, মহানগর বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক নজরুল হুদা, সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ মামুন ও সাবেক কাউন্সিলর বিএনপি নেতা মনিরুজ্জামান শরীফের নেতৃত্বে রাজশাহী সড়ক পরিবহন সমিতি বলপূর্বক দখল নেয়া হয়। দখল নেওয়ার পূর্বে বিনা নির্বাচনে অবৈধভাবে নজরুল ইসলাম হেলালকে উক্ত সমিতির সাধারণ সম্পাদক করে একটি কমিটিও ঘোষণাও দেয়া হয়। হামলা, দখলে ও ভাঙচুরের ফুটেজ-সংবাদ ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া সব বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ মামুনের এমন চরিত্র কিন্তু নতুন নয়। এর আগেও, মামুন রাজশাহী মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন সময়ে বাস মালিক সমিতির নির্বাচিত সাধারন সম্পাদক মরহুম আনোয়ার হোসেন আনুকে পেশী শক্তি প্রয়োগ করে তাড়িয়ে দিয়ে নিজের ভাই শহিদুর রশিদ মন্টুকে বাস মালিক সমিতির দায়িত্ব দেন। সেই একই সড়ক পরিবহন মালিক কমিটির তৎকালীন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মামুনের আজ্ঞাবহ নজরুল ইসলাম হেলাল। এসব কারণে তিনি RAB এর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। এমন দখলদারিত্ব এবং অরাজকতার

প্রেক্ষিতে ১৭ই অক্টোবর রাজশাহীতে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির প্রশাসক নিয়োগ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আমরা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে ছিলাম।

আপনারা সকলে আরো জানেন যে, রাজশাহী মহানগর বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক নজরুল হুদা নগরীর মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির অদূরেই অবস্থিত ব্রিটিশ কাউন্সিল অফিসের জায়গাটি পট পরিবর্তনের পরে অবৈধভাবে দখল করেন। এই বিষয়ে ইতিমধ্যে একটি মামলাও হয়েছে। উচ্ছেদ মামলা হওয়ায় আদালত এই সম্পত্তিতে “স্থিতাবস্থা” জারি করলেও নজরুল হুদা কিসের বলে কিসের জোরে কোন আইনে এখন পর্যন্ত উক্ত জমির ভবনটি ব্যবহার করছেন ও ভাড়া দিয়েছেন??? আমরা জানতে চাই।

আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি যে বিপুল পরিমাণ টাকা লেনদেনের বিনিময়ে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট এরশাদ আলী ইশা, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক নজরুল হুদা, সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ মামুন, রাজশাহীতে জুলাই বিপ্লবে হামলা খুন সহ অতীতে বিএনপি পার্টি অফিস সহ নেতাকর্মীদের উপর হামলায় জড়িত এজাহার ভুক্ত বিভিন্ন আসামীদের আটক না করতে পুলিশ প্রশাসন সহ বিভিন্ন মহলে তদবির করছেন। মামলার ভয় দেখিয়ে তাদের নেতৃত্বে অনেক অরাজনৈতিক নিরপরাধ ব্যক্তি, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই প্রথম আলো সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে যে, মালোপাড়ায় অবস্থিত কাবিল ম্যানশন রাজশাহী মহানগর বিএনপির দলীয় কার্যালয়টি দীর্ঘদিন ভাড়া বকেয়া রেখে, অফিস ছাড়ার নোটিশ পাওয়ার পরেও বর্তমান নেতৃবৃন্দ দীর্ঘদিন অবৈধভাবে নিজ দখলে রেখেছিল। বিভিন্ন ওয়ার্ড কমিটি গঠনে ব্যাপক লেনদেন ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যেমন রাজপাড়া থানা ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলী ও মাহমুদুল হক রুবেল অভিযোগ করেছিলেন যে তাদেরকে না জানিয়ে কমিটিতে রাখা হয়েছে এবং তারা কোন রাজনীতির সাথে জড়িত নয় তাই কমিটি গঠনের পরপরই তারা পদত্যাগ পত্র প্রেরণ করেছিলেন (তৎকালীন সময়ে বিভিন্ন গনমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে)। ১১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক করা হয়েছে রাসেল হোসেন নামের যুবলীগ নেতাকে। উক্ত যুবলীগ নেতা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের ঘনিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও বিপুল অংকের বিনিময়ে তাকে ওয়ার্ড বিএনপি’র গুরুত্বপূর্ণ পদ দেয়া হয়।

এর পূর্বেও প্রমাণসহ আমরা বলেছি যে, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ মামুন বিগত ২০১৩ এবং ২০১৮ রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ১৩ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর, সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি, বর্তমান যুবলীগ নেতা আব্দুল মমিনকে প্রত্যক্ষভাবে শুধু সহযোগিতাই করেননি বরং সরাসরি নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন, নির্বাচন পরবর্তী ফলাফল ঘোষণার পরে ফুলের মালা আদান প্রদান করে যুবলীগ নেতার সাথে বিজয় উল্লাস করেছেন।

আপনাদের প্রতি আমাদের বিনীত আহ্বান, উল্লেখিত প্রতিটি বিষয়ে আপনারা জাতির বিবেক হিসেবে যাচাই বাছাই করে সত্য তথ্য জনগণের নিকট অবশ্যই তুলে ধরবেন। আমরা এখানে উপস্থিত বিএনপি’র দীর্ঘদিনের সচেতন ও পরিক্ষিত নেতৃবন্দ সম্মিলিতভাবে এই দল বিধ্বংসী ষড়যন্ত্র ও অপতৎপরতার জোর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। মহানগরীর দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দের এসব অপরিণামদর্শী বিতর্কিত সিদ্ধান্তে রাজশাহী মহানগর সহ এর

আওতাধীন প্রতিটি ইউনিটে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকান্ডের ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে পড়ছে, পুরাতন নেতাকর্মীবৃন্দের বৃহত্তর অংশকে রাজনীতি থেকে পরিকল্পিতভাবে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মহানগর থেকে থানা-ওয়ার্ড কমিটিগুলো থেকে দীর্ঘ দিনের পরিক্ষিত, নির্যাতিত, ত্যাগী, পরিশ্রমী নেতৃবৃন্দদেরকে শুধু বাদই দেওয়া হয়নি বরং অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। আমাদের মত নেতাকর্মীদের মতামত এবং মূল্যায়নের কোন স্থান রাজশাহী মহানগর বিএনপি থানা ও ওয়ার্ড কমিটিতে নেই বললেই চলে। রাজশাহী মহানগর বিএনপির এসব নেতৃবৃন্দের অপকর্মের কারণে তৃণমূল নেতা কর্মীরা বিব্রত, ব্যথিত ও বঞ্চিত। হাইব্রিড এসব নেতৃবৃন্দের এই পরিমাণ দুঃসাহস দেখানোর সক্ষমতা, মহানগর বিএনপির কিছু দায়িত্বশীল নেতা বা কেন্দ্রের এক বা একাধিক নেতার প্রত্যক্ষ মদদ-আশ্রয়-প্রশ্রয় ছাড়া সম্ভব নয় বলে আমার মনে হয়েছে।

আপনাদের মাধ্যমে আমাদের আবেগ, ভালোবাসার সংগঠন, বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ জনপ্রিয় রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপির ভাবমূর্তি রক্ষায় বিএনপি’র মাননীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয়, সম্মানিত মহাসচিব সহ দলীয় সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারিনী ফোরাম স্থায়ী কমিটির প্রতিটি সদস্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। পরিশেষে সবাইকে আবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।

বিএ..

পোস্টটি শেয়ার করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By Khobor24ghonta Team