নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহী মহানগরীতে থানা থেকে বের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুনে আত্মহত্যার চেষ্টাকারী কলেজ ছাত্রী লিজা রহমান (১৮) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বুধবার সকাল সোয়া ৭টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তিনি গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বুজরিক বোয়ালিয়া এলাকার আব্দুল লতিফের মেয়ে ও রাজশাহী মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। তার স্বামীর নাম সাখাওয়াত হোসেন। সে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলার
বাসিন্দা ও সিটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র। তারা বেশ কিছুদিন আগে প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে বিয়ে করে। তারা নগরীর শাহমখদুম থানার পবা নতুন পাড়া এলাকায় ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতো। এ তথ্য নিশ্চিত করে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার সকাল সোয়া ৭টার দিকে তার মৃত্যু হয়। লাশের ময়নাতদন্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তার স্বামী সাখাওয়াতকে এখনো গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শরীরে আগুন দেওয়ার
ঘটনায় আরএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম ও অপারেশন্স) সালমা বেগমকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এখনো রিপোর্ট জমা দেয়নি কমিটি। উল্লেখ্য, গত ২৮ সেপ্টেমবর দুপুরে কলেজ ছাত্রী লিজা রহমান পাবিবারিক কলহের জের ধরে থানায় অভিযোগ করতে গিয়ে বের হয়ে এসে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। নগরীর শাহমখদুম থানাধীন পবা নতুন পাড়া এলাকায় বসবাস করতো। শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে টিটিসির সামনে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহের জের ধরে মনমালিন্য চলে আসছিলো। মেয়েটির মা-বাবা কেউ নাই। সে অনাথ। গত ২৮ সেপ্টেমবর সকালেও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীল মধ্যে ঝগড়া হয়। এরপর দুপুরে কলেজ ছাত্রী লিজা নগরীর শাহমখদুম থানায় অভিযোগ দিতে যায়। সেখানে সবকিছু শুনে তাকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠানোর হয়। কর্তব্যরত পুলিশ তার অভিযোগের বিষয়গুলো জানতে চায়। এরপর ওই লিজা থানা থেকে বের হয়ে যায়। থানা থেকে বের হয়ে টিটিসির সামনে গিয়ে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়। আগুনে তার শরীরের বেশির ভাগ অংশ পুড়ে যায়। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক
তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। কিন্ত তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরে তাকে এ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকা পাঠানো হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এস/আর