নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহী মহানগরীতে তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী রাকা (২৫) সহ তার মা, বোন ও ভাইকে মারধর করে করে শিশু সন্তানকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আহতবস্থায় তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহত অন্যরা হলেন, আহত গৃহবধুর মা রাজিয়া, ভাই রাজ্জাক ও বোন সিমা। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে পবা থানার ঘোলহারিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত গৃহবধূ রাকা অভিযোগ করে জানান, মে মাসের শুরুর দিকে তার সাবেক স্বামী আজমত হোসেন কাজ করার জন্য বাড়ির বাইরে যায়। মে মাসের ৫ তারিখ রাতে তিনি নিজ বাড়িতে ঘরের মধ্যে শুয়ে ছিলেন। এ সময় তার ভাসুর আজমত ও তার স্ত্রী ফাতেমা পূর্ব পরিকল্পনামাফিক মে মাসের ৫ তারিখ রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাকাকে ডেকে তার স্বামীর বন্ধু সুকবলকে ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে চলে যায়। এ সময় রাকা ও সন্তানরা চিৎকার দিলে প্রতিবেশী লোকজন ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই সুকবল দৌড়ে তার ভাসুর ও জা’র সহযোগিতায় পালিয়ে যায়। পরের দিন তার স্বামী বাড়িতে তাকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। এ ঘটনার দু’দিন পর তার স্বামী তাকে কোর্টের মাধ্যমে তালাক দেয়।
এদিকে, তার তিন বছর বয়সের মেয়ে লামিয়া স্বামীর বাড়িতেই ছিল। তাই তিনি শিশু লামিয়াকে আনতে স্বামীর বাড়িয়ে নবদিগন্ত মহিলা উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক রাজিয়া সুলতানা ও পবা থানা পুলিশ সহ যান। এরপর মেয়েকে উদ্ধার করে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে আসেন। মেয়েকে নিয়ে আসার এক ঘন্টা পরে তার সাবেক স্বামী আজমত, বড় ভাই ওয়াজেদ, আমজাদ ও চাচা শ্বশুর আকছেদসহ ১০/১২ জন লোক নিয়ে তার বাবার বাড়িতে গিয়ে ভাংচুর করে ও মেয়ে লামিয়াকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তার মা, বাবা ও ভাইবোন তাদের কাজে বাধা দিতে গেলে তারা তাদের মারধর করে। অবস্থা বেগতিক দেখে তারা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পবা থানা পুলিশের এসআই শাহাদত ঘটনাস্থলে গিয়ে কয়েকজনকে আটক করে। এরপর অজ্ঞাতকারণে ছেড়ে দিয়ে চলে যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক রাজিয়া সুলতানা বলেন, হামলাকারীদের ধরে ছেড়ে দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে এসআই শাহাদত বলেন, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নাই তাই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
রাকা অভিযোগ করে আরো বলেন, আমাকে তালাক দেওয়ায় তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল। তাই তারা পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক এ কাজ করেছে। আমি আইন অনুযায়ী তাদের কঠোরা শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে পবা থানার ওসি এস এম মাসুদ পারভেজ বলেন, আমি ঘটনা শুনে পুলিশ দু’বার পাঠিয়েছি। তবে এসআই শাহাদত হামলাকারীদের ধরে ছেড়ে দিয়েছে তা আমি জানি না। বিষয়টি খোঁজ নেওয়া হবে। তবে থানায় ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ দিলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে