নিজস্ব প্রতিবেদক :
সারাদেশের ট্রাক চোর সিন্ডিকেটের মূলহোতাসহ আট জনকে আটক করেছে রাজশাহী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। ট্রাক চুরির পর রং বদলানো, বিআরটিএ’র রেজিস্ট্রেশনের কাজে সহযোগিতা করতো আরো ৭ জন। খুব চতুরতার সাথে ট্রাক চুরি ও রং বদলিয়ে ভ‚য়া রেজিস্ট্রেশন দিয়ে চড়া দামে বিক্রি করা হতো ট্রাকগুলো। এভাবে চুরি করা ট্রাক বিক্রি করে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে রাজশাহী জেলা পুলিশ লাইনে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব তথ্য জানান রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ।
আটককৃতরা হলো, রাজবাড়ী উপজেলা সদরের নিমতলা গ্রামের রহমত শেখের ছেলে আহাদ আলী শেখ (৩০), রাজশাহী মহানগরীর শাহমখদুম থানার মকিম শেখের ছেলে সুজন শেখ (৩৮), ট্রাক চুরির মূল হোতা কথিত মনিরের একান্ত সহযোগী রাজপাড়া থানার ডিঙ্গাডোবা এলাকার মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে আরিফুর রহমান ওরফে হযরত আলী (৪০), ট্রাক চুরির মূল হোতা কুষ্টিয়া উপজেলা সদরের আদর্শপাড়ার গাদন মিস্ত্রি রোডের মৃত আলিমুদ্দিন ওরফে শামসুদ্দিনের ছেলে মনির ওরফে লিখন ওরফে কুদ্দুস (৪৫), ভুয়া কাগজপত্র তৈরির অন্যতম সহযোগি চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুরহুডা থানার শ্যামপুর গ্রামের করিম বিশ^াসের ছেলে ইসরাফিল ওরফে পারভেজ ওরফে বাবু (৪৮), যশোর উপজেলা সদরের চুড়ামনকাটি সদরের মৃত রজব আলী মুন্সির ছেলে আব্দুল মান্নান (৪৫)।
লিখিত বক্তব্যে পুলিশ সুপার বলেন, গত জুন মাসের ৬ তারিখ বিকেলে রাজাবাড়ী হাট এলাকা থেকে একটি ট্রাক চুরি হয়। ওই দিনই থানায় একটি মামলা হয়। এরপর ১০ জুন ট্রাকটি রাজবাড়ী জেলার শ্রীপুর বাস টার্মিনাল থেকে উদ্ধার ও চালক আহাদ কে গ্রেফতার করা হয়। আসামী জানায়, ট্রাক চোর সিন্ডিকেটের মূল হোতা মনির। রং পরিবর্তন ও নম্বর প্লেট লিখন কাজে সুজন নামের একব্যক্তি সহযোগিতা করে। তারপরও সুজনকেও গ্রেফতার করা হয়। সুজনের পর আরিফুরকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশি রিমান্ডে সে জানায়, তারা দীর্ঘদিন ধরে ট্রাক চুরি করে আসছে। তার দেওয়া তথ্যমতে নটোর, কুষ্ঠিয়া, নওগাঁ, চট্টগ্রাম হতে ৪টি ট্রাকসহ মোট ৫টি অশোক আইল্যান্ড উদ্ধার করা হয়। প্রত্যেকটি ট্রাকের মূল মালিক আছে।
গত ৪ তারিখ মুল হোতা মনিরকে চট্টগ্রামের হালি শহর থেকে আটক করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে ভ‚য়া কাগজপত্র তৈরির সহযোগী মান্নান ও ইসরাফিলকে আটক করা হয়।
আটকের পর মনির স্বীকার করে যে, একে অপরের সহযোগিতায় মনির, আহাদ, গিয়াস ট্রাক চুরি করতো এবং চুরির পর রাজশাহীতে নিয়ে এসে রং মিস্ত্রী সুজনের দ্বারা রং পরিবর্তন করে ও মনিরের কথিত ম্যানেজার হযরত গাড়ীগুলোকে বিক্রিতে সহযোগিতা করতো। আরো ট্রাক উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার জানান, এ পর্যন্ত এ চক্রটি ৭০/৮০টি ট্রাক চুরি করে বিক্রি করেছে। চুরি করে বিক্রি হওয়া ট্রাকগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
এর সাথে বিআরটিএ’র জড়িত কোন কর্মকতা আছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারো সংশ্লিষ্টা পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে এরা কেউ গ্রেফতার হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী জেলা পুলিশের সিনিয়র এসএসপি আব্দুর রাজ্জাক ও ডিবি ওসি আতাউর রহমান প্রমূখ।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে