নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়ে যাওয়ার পর থেকে রাজশাহী মহানগরীতে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর পণ্য কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন মানুষ। বাইরের বাজারে নিত্য প্রয়োনীয় পণ্যের দাম লাগামহীন হওয়ায় টিসিবির ট্রাকে ভিড় জমাচ্ছেনা ক্রেতারা। উদ্দেশ্য খোলা বাজারের থেকে কম দামে তেল, ডাল, চিনি, পেঁয়াজ ও ছোলা কেনা। কিন্ত টিসিবি এখনো প্যাকেজ আকারে পণ্য বিক্রি করায় বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। অনেকের প্রয়োজন না হলেও তাকে সেই পণ্যটি কিনতে হচ্ছে। এরই মধ্যে টিসিবি বিক্রিত পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। তারপরও খোলা বাজারের
থেকে অনেকটাই কম দামে পাওয়া এসব পণ্য। টিসিবি শিক্ষানগরী রাজশাহীর ১০টি পয়েন্টে সকাল ১০ টা থেকে পণ্য বিক্রি শুরু করে। কিন্ত টিসিবির ট্রাক পৌঁছানোর আগে থেকেই মানুষের লাইনে ভর্তি থাকে সেই নির্ধারিত স্থান। করোনা সংক্রমণ যাতে বেশি ছড়িয়ে না পড়তে পারে সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা ও স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার আহবান জানানো হচ্ছে। বিভাগী শহর রাজশাহীতে অন্যান্য জেলার তুলনায় করোনা শনাক্তের হারও বেশি। তারপরও টিসিবির ট্রাকের পণ্য কিনতে আসা মানুষকে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে দেখা যায়নি। এতে করোনা সংক্রমণ আরো ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা করা হচ্ছে।
সচেতন মহলের মানুষজন বলছেন, টিসিবি নগরের বেশ কিছু পয়েন্টে পণ্য বিক্রি করে। সেখানে বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে আসে। কেউ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব না মানার কারণে কারো মধ্যে করোনা সংক্রমণ থেকে থাকলে তা দ্রæত ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। এ জন্য টিসিবির ট্রাকের সামনে অবস্থান করা মানুষকেও স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানা খুব জরুরী। এর ব্যতিক্রম হলে করোনা সংক্রমণ আরো বেশি ছড়িয়ে পড়তে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নতুন পেঁয়াজ উঠার পর পেঁয়াজের দাম খোলা বাজারে স্বাভাবিক হয়ে গেলে টিসিবির পণ্য কিনতে ক্রেতাদের মধ্যে অনীহা তৈরি হয়। ভিড় কমে যায়। এছাড়া তখন পচা পেঁয়াজ গ্রাহকদের দেয়া ও প্যাকেজ আকারে অন্যান্য পণ্য বিক্রি করার কারণে গ্রাহকরা তেমন ভিড় করতোনা। সম্প্রতি সময়ে দফায়
দফায় নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে টিসিবির পণ্য কিনতে ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছে। প্রতিদিনি নির্ধারিত সময়ের আগে এখন টিসিবির পণ্য শেষ হয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে রাজশাহীসহ সারাদেশে করোনা সংক্রমণের হারও বেড়ে যায় আশঙ্কাজনক হারে। করোনা সংক্রমণ বাড়লেও টিসিবির পণ্য কিনতে আসা মানুষদের মাঝে তেমনভাবে মুখে মাস্ক পরে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে টিসিবির পণ্য কিনতে দেখা যায়নি। পণ্য কেনার জন্য মানুষ লাইনে গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে থাকছে। নারী ও পুরুষ উভয়ই লাইনেই একই অবস্থা। নগরের বিভিন্ন এলাকায় সরজমিনে ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
ঘুরে দেখা গেছে, মানুষ লাইনে গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। নারী ও পুরুষ উভয় লাইনের মধ্যেই ক্রেতাদের মধ্যে কেউ সামাজিক দূরত্ব মানছে না। কোনো কোনো স্থানে ভালোভাবে এসব পণ্য বিক্রি হলেও কোনো কোনো স্থানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। কারো কারো বিরুদ্ধে একাধিকবার টিসিবির পণ্য কেনার অভিযোগও তুলছেন অন্যান্য ক্রেতারা। এ অবস্থায় সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সচেতন মহলের পক্ষ থেকে।
ক্রেতাদের অভিযোগ, যার যেটা প্রয়োজন তাকে সেটা দেয়া হচ্ছে না। প্যাকেজ আকারে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। এতে তাদের সমস্যা হচ্ছে। প্রয়োজন অনুযায়ী পণ্য বিক্রি করার জন্য টিসিবির উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তারা। যাতে ক্রেতারা প্রয়োজন অনুযায়ী পণ্য নিতে পারে। শেষ ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী জেলায় ৭৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। প্রতিদিন মরছে মানুষ। বিভাগে এখন রাজশাহী জেলায় করোনা শনাক্তের হার বেশি রয়েছে।
এ বিষয়ে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ টিসিবির রাজশাহী আঞ্চলিক প্রধান রবিউল মুর্শেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্যাকেজ আকারে পণ্য বিক্রি করতে ডিলারদের নিষেধ করে দেয়া হয়েছে। কেউ যদি করে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব না মানলে সংশ্লিষ্ট ক্রেতাকে পণ্য না দিতে ডিলারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মানানোর ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সেটি ট্রাকেও লেখা আছে। আমিও নিজেও সেটি পর্যবেক্ষণ করেছি।
এস/আর